নওগাঁ জেলা সংবাদদাতা
নওগাঁর রানীনগরে একই খালে পাঁচটি নিষিদ্ধ সোঁতির জাল দিয়ে রক্তদহ বিলসহ বিভিন্ন জলাশয়ে ছেড়ে দেয়া মুক্ত মাছ নিধন করছে কতিপয় অসাধু মহল। কোনোকিছুকে তোয়াক্কা না করে মৎস্য অফিসের নাকের ডগায় এই নিষিদ্ধ জাল দিয়ে মাছ ধরলেও নীরব ভূমিকায় মৎস্য সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিরা। সম্প্রতি স্থানীয় সংসদ সদস্য রক্তদহ বিল সংলগ্ন বিল আবরায় কয়েক মণ মাছের পোনা অবমুক্ত করেন। যাতে এই মাছগুলো মুক্ত জলাশয়ে বড় হয়ে এলাকার বিভিন্ন খাল ও জলাশয়ে বংশ বিস্তার করবে। তাই এসব মুক্ত জলাশয়ে সারা বছর মাছ পাওয়া যাবে। এতে এসব মুক্ত জলাশয় থেকে মাছ ধরে এলাকার গরিব মৎস্যজীবীরা জীবিকা নির্বাহ করবে। কিছু ব্যক্তিদের সঙ্গে আঁতাত করে কতিপয় মৎস্যজীবীরা নিষিদ্ধ সোঁতির জাল দিয়ে বড় না হতেই সবরকমের মাছ ধরে ফেলছে। এতে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন জাতের মাছ বংশ বিস্তার করতে না পারায় মুক্ত জলাশয় থেকে দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে দেশীয় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলা সদরের বেলোবাড়ি-দাউদপুর, সিংড়াডাঙ্গা ও সাতানী (পূর্ব চকবলরাম) গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে রক্তদহ বিল থেকে আসা রতনডারী খাল। সম্প্রতি উপজেলার এই খালগুলো সরকার পুনরায় খনন করেছে যাতে এই খালগুলোতে সারা বছর পানি জমে থাকে এবং ছেড়ে দেয়া মাছগুলো মুক্তভাবে বড় হয়ে বংশ বিস্তার করতে পারে। আর এই খালগুলো থেকে সারা বছর এলাকার সাধারণ মানুষ ও মৎস্যজীবীরা মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতে পারবে। অথচ এই খালের পাঁচ জায়গায় সিংড়াডাঙ্গা গ্রামের রসুল প্রামাণিকের ছেলে ইসারুল বাসার (২৫) ও বায়েজিদ (২০) একই গ্রামের মৃত- সামুদ আলীর ছেলে হাবিব (১৫), গোলাম মোস্তফার ছেলে রাকিবুল ইসলাম রনি (১৫) ও মৃত- ওসমানের ছেলে বাবু (৪০) মৎস্য আইন ও উপজেলা মৎস্য অফিসকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বিভিন্ন মহলকে ম্যানেজ করে নিষিদ্ধ এই সোঁতির জাল দিয়ে প্রায় দুই মাস যাবত মাছ ধরে আসছে। এতে এই অঞ্চলে মা মাছ থেকে শুরু করে সকল প্রকারের মাছ ধরা পড়ছে এই মরণফাঁদ সোঁতির জালে। অর্থের লোভে পোনা মাছ থেকে শুরু করে মা মাছ পর্যন্ত ধরে বাজারে বিক্রিসহ চালান করছে দেশের বিভিন্ন বড় বড় বাজারে। স্থানীয় মৎস্যজীবী সাইদুল ইসলাম (৪০) জানান, আমরা আদি পুরুষ থেকে মৎস্যজীবী। মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে আসছি। বর্তমানে আগের তুলনায় আর মাছ পাওয়া যায় না। বর্ষা মৌসুমে যেটুকু মাছ পাওয়া যেত তা আর এখন পাওয়া যায় না। কারণ মুক্ত জলাশয়ে আগের মতো আর মাছেরা বংশ বিস্তার করতে পারছে না। এই রতনডারী খালে একসময় প্রচুর মাছ পাওয়া যেত। প্রায় দুই মাস হয়ে গেল প্রভাবশালী মহলের জোরে কতিপয় মৎস্যজীবী নামধারী ব্যক্তিরা নিষিদ্ধ এই সোঁতির জাল দিয়ে মাছ ধরছে এই খালে। এই জাল থেকে কোনো প্রকারের মাছ বের হতে পারে না। তাই এই জাল দিয়ে দিন-রাত মাছ ধরার কারণে মুক্ত জলাশয় থেকে মাছ হারিয়ে যাচ্ছে। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মেহেদী হাসান জানান, সোঁতি জাল নিষিদ্ধ। এই জাল দিয়ে মাছ ধরা বেআইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন