বরিশালের উজিরপুরে হাতুড়ে ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, উপজেলার জল্লা ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের পীড়েরপাড় গ্রামের মৃত নিত্যানন্দ সরকারের ছেলে কাঠমিস্ত্রি নিখিল সরকার (৩৬) কয়েকদিন ধরে জ্বর ও এলার্জি জনিত রোগে ভুগছিল। গত শনিবার বিকেল সাড়ে ৫টায় একই এলাকার পল্লীচিকিৎসক বাসুদেব মহুরিকে খবর দিয়ে বাড়িতে আনা হয়। এরপর ওই চিকিৎসক নিখিলকে ৪টি ইনজেকশন পুষ করে। তাৎক্ষনিকভাবে তার মৃত্যু হয়। বিষয়টি স্থানীয়রা পুলিশকে অবহিত করলে থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তর জন্য বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে প্রেরণ করে।
এ ব্যাপারে নিহতের মা পুতুল রানী সরকার জানান, আমার ছেলেকে ইনজেকশন দিতে বারবার নিষেধ করার পরেও তা না শুনে ভুয়া ডাক্তার বাসুদেব মহুরি আমার ছেলেকে এক সাথে ৪টি ইনজেকশন দেয়। এ কারনেই তাৎক্ষনিকভাবে আমার ছেলে মারা যায়। বাসুদেব আমার ছেলেকে ভুয়া চিকিৎসা দিয়ে মেরে ফেলেছে।
অভিযুক্ত বাসুদেব মহুরি জানান, আমি খবর পেয়ে তাৎক্ষনিকভাবে ঘটনাস্থল গিয়ে নিখিলের জ্বর, এলার্জি ও স্বাশকষ্টসহ বিভিন্ন রোগ থাকায় কটসন, ইমিস্টাট, ইজরোলসহ ৪টি ইনজেকসন পুষ করি। আমি কোন ভুল চিকিৎসা করিনি। ইনজেকসন পুষ করার পরে কিছুক্ষণ সুস্থ ছিল। এরপর মারা গেলে আমার কি করার আছে। এ দিকে সাংবাদিকরা চিকিৎসককে ডাক্তারি সনদ আছে কিনা প্রশ্ন করলে তিনি কৌশলে এড়িয়ে গিয়ে বলেন আমি দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় চিকিৎসা দিয়ে আসছি। আমার কাছে প্রতিদিন বহু রোগী আসে। সবাই উপকৃত হয়। তাই আমি এই পেশায় থেকে মানুষকে সেবা দিচ্ছি। অপর দিকে নিহতের স্ত্রী উর্মিলা সরকার (২৭) কান্নার কন্ঠে বলেন, আমার স্বামীকে ভুয়া চিকিৎসা দিয়ে মেরে ফেলেছে বাসুদেব। এখন আমি আমার ২ শিশু নিলয় আর নিশীথকে কোথা থেকে খাবার আইন্না দিবো।
স্থানীয়রা জানান, সনদ ছাড়া হাতুড়ে ডাক্তার বাসুদেব মহুরী লোকনাথ বাজারে ফার্মেসি দিয়ে দীর্ঘদিন সহজ সরল মানুষকে ধোকা দিচ্ছে।
উজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডাঃ শওকত আলী জানান, বাসুদেব নামে রেজিস্ট্রিকৃত কোন ডাক্তার নেই। তার চিকিৎসা দেয়ার কোন অধিকার নেই। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
উজিরপুর মডেল থানার ওসি আলী আর্শাদ জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পুলিশ পাঠিয়ে লাশ উদ্ধার করে বরিশাল মর্গে প্রেরন করা হয়েছে এবং ময়না তদন্তের রিপোর্ট পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।