শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

বন্যার আগাম প্রস্তুতি নিতে বিপাকে মানুষ

কুড়িগ্রাম নিয়ে জেলা প্রশাসক যা বললেন

শফিকুল ইসলাম বেবু, কুড়িগ্রাম থেকে | প্রকাশের সময় : ৩০ জুলাই, ২০২১, ১২:০৫ এএম

বছরের চাকা ঘুরলেই কুড়িগ্রামের নদ-নদী তীরবর্তী মানুষ বন্যা মোকাবেলায় আগাম প্রস্ততি নেয়। কিন্তু এবার মহামারি করোনা আর লকডাউনে শ্রমজীবী মানুষ চরম বিপাকে। কাজ নেই, জমানো অর্থও শেষ হয়ে যাচ্ছে। ফলে বন্যাকে সামনে রেখে তারা সেভাবে প্রস্তুতি নিতে পারছে না। জেলা প্রশাসন বলছে, বন্যা মোকাবিলায় তাদের সার্বিক প্রস্তুতি রয়েছে।

কুড়িগ্রামে ৩১৬ কিলোমিটার নদী পথ। আছে ১৬টি নদ-নদী। প্রতি বছর ভারী বৃষ্টিপাত আর পাহাড়ি ঢলে নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়ে বন্যায় প্রায় ৪ থেকে ৫ লাখ মানুষ চরম দুর্ভোগের মুখোমুখি হয়। এছাড়াও রয়েছে আগ্রাসী নদী ভাঙন। ফলে নদ-নদী তীরবর্তী মানুষের দুর্দশা পিছু ছাড়তে চায় না।
প্রতিবছর বন্যার পূর্বে লোকজন আগাম প্রস্ততি নেয়। ঘরবাড়ি মজবুত ও আলাদা চুলা তৈরি করে। জরুরি ওষুধ, শুকনো খাবার ও জ্বালানি সংগ্রহ করে। পর্যাপ্ত পরিমাণে চাল-ডাল ঘরে রাখে। কিন্তু এবার অতিমাত্রায় করোনা আর লকডাউনে বেশিরভাগ শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষকে ঘরে বন্দি থাকতে হচ্ছে। তারা আগাম প্রস্তুতিও নিতে পারছে না। ‘বন্যা বুঝে ব্যবস্থা’ এই অপেক্ষায় রয়েছে।
উলিপুরের বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের শেখ পালানু গ্রামের আবুল হোসেন, আশরাফ আলী ও মোমেনা বেগম জানান, লকডাউনের কারণে তারা ঢাকায় কাজ করতে যেতে পারেননি। ঢাকা থেকে বাড়িতে আসার সময় হাতে যা টাকা ছিল তাই দিয়ে সংসার চলছে। ঘরবাড়ি মেরামত করাতে গেলে না খেয়ে থাকতে হবে।
সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের চরফারাজী পাড়া গ্রামের সাবেক মেম্বার আশরাফুল, আবুল হোসেন, বক্কর ও মজিবর জানান, করোনালকডাউন ও নদী ভাঙনে খুব খারাপ অবস্থায় আছেন। গত বছরের বন্যায় বাড়িঘর দুর্বল হয়ে গেছে। বেড়া ঠিক করা দরকার হলেও টাকা খরচ করতে ভয় হচ্ছে। করোনা সংক্রমণ যে হারে বাড়ছে তাতে যদি লকডাউন শেষ না হয়, তাহলে সামনে ভীষণ বিপদ।
একই ইউনিয়নের মেম্বার রিপন মিয়া জানান, এবার অনেকের ডিঙি নৌকা শুকনো জায়গায় রয়েছে। মেরামত করার অর্থ নেই। ফলে বন্যায় পারাপারে খুব সমস্যা হবে। বেসরকারি এনজিও কর্মী আব্দুল মালেক জানান, লোকজন আগাম প্রস্ততি নেয়ার এবার কোন সুযোগ পাচ্ছে না। কারণ দীর্ঘদিন ধরে চলা লকডাউন আর করোনার কারণে বেসরকারি সংগঠনগুলোর কার্যক্রম থমকে গেছে। এই সময়টিতে তারা চরাঞ্চলের মানুষদের জন্য বিভিন্ন ধরনের সচেতনতামূলক কার্যক্রম হাতে নেয়। কিন্তু বর্তমানে এসব বন্ধ থাকায় মানুষের জন্য কোন সহযোগিতা পৌঁছাচ্ছে না।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম ইনকিলাবকে জানান, বন্যা মোকাবিলার জন্য যথেষ্ট প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। আর প্রশাসনসহ জনপ্রতিনিধিদের সার্বিক দিক নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে। বন্যা মোকাবিলায় পর্যাপ্ত নৌকা ও আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। বন্যা কবলিতদের জন্য পর্যাপ্ত চাল ও নগদ অর্থ উপজেলা পর্যায় বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন