এস মিজানুল ইসলাম, বানারীপাড়া (বরিশাল) থেকে
মিলন ঘরামী। নাড়ির টানে সুদূর মালয়েশিয়া থেকে গত ৫ সেপ্টেম্বর ঈদুল আজহা উদযাপনের জন্য দেশে আসেন। তার বাড়ি বানারীপাড়া উপজেলার সৈয়দকাঠি ইউনিয়নের জিরাকাঠি গ্রামে। মিলনের ইচ্ছে ছিল স্ত্রী, শিশুপুত্র, বাবা-মা ও স্বজনদের সাথে পবিত্র ঈদুল আজহা পালন করবে। ঈদ অনুষ্ঠান করেও ছিল। গত ২১ সেপ্টম্বর বুধবার সকালে নলেশ্রী গ্রামে ভায়রার বাড়ি থেকে বাড়ি ফিরছিল। পথে দাসের হাট বাজার খালের দক্ষিণ পাড় থেকে স্ত্রী খুকু মনি ও তিন বছর বয়সী এক মাত্র সন্তান সাফওয়ানকে নিয়ে ছইওয়ালা ঐশী প্লাস লঞ্চে ওঠেন জিরাকাঠির নিজ বাড়িতে যাওয়ার জন্য। লঞ্চে ওঠার মাত্র ২-৩ মিনিটের মাথায় ওই খালের দক্ষিণ পাড় থেকে উত্তর পাড়ে লঞ্চটি নোঙর করার সময় হঠাৎ সন্ধ্যা নদীর ভাঙনে বড় একটি মাটির চাঁই পড়ে নদীতে ডুবে যায়। এ সময় পানির ঘূর্ণিপাকের কবলে পড়ে ছইওয়ালা লঞ্চটি প্রায় ৬০ ফুট তলদেশে চলে যায়। লঞ্চটিতে প্রায় ৪০ জন যাত্রী ছিল। এ সময় মিলন ও তার স্ত্রী পুত্রসহ নিখোঁজ হন। এ দিন বিকেলেই ডুবুরিরা মিলন ঘরামীকে উদ্ধার করেন। রাতেই বাড়ির পাশের মসজিদ চত্বরে নামাজে জানাজা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। পরদিন বৃহস্পতিবার সকালে উদ্ধার হওয়া লঞ্চের ভেতর থেকে তার শিশুপুত্র সাফওয়ানের লাশ উদ্ধার করে জানাজা শেষে পিতার কবরের পাশে তাকেও চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়। এদিন বৃহস্পতিবার রাতে মিলনের স্ত্রী খুকু মনির লাশ পাওয়া যায় সন্ধ্যা নদীতে। তাকেও দাফন করা হয় স্বামীর পাশে। আগামী ২ নভেম্বর মিলনের কর্মস্থল মালয়েশিয়ায় যাওয়ার কথা ছিল।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন