মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার হাড়িদিয়া গ্রামের জহির দেওয়ানের বস্তিতে আগুনে ৪৪টি ঘর ভস্মীভূত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে এ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শ্রীনগরের ফায়ার সার্ভিসের দুইটি ইউনিট ঘটনাস্থলে আসার আগেই গ্রামবাসীর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। কিন্তু ততোক্ষণে সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে যায়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন করির ও লৌহজং থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আলমগীর হোসাইন আগুন লাগার পর পরই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। স্থানীয় ও বস্তির ভাড়াটিয়াদের অভিযোগ ইচ্ছেকৃত কেউ আগুন লাগিয়েছে,
বস্তিঘরের মালিক জহির দেওয়ান জানান, পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষ মনির দেওয়ান, খোকন মুন্সী, লিটন ঢালী, শরীফ আমার বস্তিতে আগুন দিয়েছে। এর আগেও দুইবার আগুন দিয়েছিল। আশেপাশের লোকজন থাকাতে আগুন নিভাতে পেরেছিলাম। কিন্তু এইবার আগুনে সব শেষ হয়ে গেল। তিনি আরও জানান, এর আগে আগুন লাগানোর ঘটনায় তাদের নামে আমি লৌহজং থানায় জিডি করেছিলাম। অগ্নিকান্ডে ৫০ লাখ টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে বলে জানান।
এই ব্যাপারে গাঁওদিয়া ৩নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য খোকন মুন্সী বলেন, জহির দেওয়ানের দখলকৃত এই জমিটি দীর্ঘ দুইশত বছরের গ্রমের পঞ্জায়েতের কবরস্থান ছিল। এখানে আমাদের পুর্বপুরুষদের অনেকেরই কবর আছে কিন্তু জহির দেওয়ান ও তার ছেলে অবৈধ ক্ষমতার বলে এই কবরস্থানের জায়গা দখল করে বস্তি নির্মান করে ভাড়া দিয়ে আসছে এর বিরুদ্ধে আমি ও তার ভাই মনির দেওয়ানসহ গ্রামের স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ তাকে বুঝাতে চেষ্টা করেছি কিন্তু তিনি এই ব্যাপারে মিথ্যা মামলা দিয়ে এবং নানা ভাবে আমাদের হয়রানি চেস্টা অব্যাহত রেখেছে। এই নিয়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে,প্রশাসনকে ও অবহিত করা হয়েছে। তবে কোন ভাবেই কাজ হয়নি। এই বস্তির ভাড়াটিয়ারা সকলেই উত্তরবঙ্গ থেকে আসা কৃষি কাজের দিনমজুর তাই বর্ষাকাল ও ঈদের ছুটি লকডাউন কারনে অধিকাংশ ভাড়াটিয়া তাদের এলাকায় চলে যাওয়ার সুযোগে জহির দেওয়ান আমাদের ফাঁসানোর জন্য ই এই বস্তিতে আগুন দিয়েছে।
লৌহজং থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আলমগীর হোসাইন জানান, স্থানীয়দের মাধ্যমে জানতে পেরেছি ঘরের ভেতর থেকে আগুন লাগার সূত্রপাত হয়েছে। তবে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় কোনো হতাহতর খবর পাওয়া যায়নি। এখানে বহিরাগত দিনমজুর-শ্রমিকেরা পরিবার নিয়ে ভাড়ায় বসবাস করেন।
ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো জানিয়েছে, আগুনে তাদের ঘরে থাকা নগদ টাকা, আসবাবসহ মূল্যবান সামগ্রী পুড়ে গেছে। কাঠ ও টিনশেডের তৈরি হাড়িদিয়া গ্রামের এই বস্তিতে ৫০টি ঘরের মধ্য ৪৪টি ঘর পুড়ে গেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন