মানিকগঞ্জের একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পদ্মা নদীর ভাঙনে বিলীন হওয়ার পথে। এই ভাঙন এখন আর কোনোভাবেই রোধ করা যাবে না। স্থানীয়রা বলছেন, পদ্মার তীরে বিদ্যালয় করায় নদীতে তলিয়ে যাওয়া দেখা ছাড়া কোনো উপায় নেই। ইতোমধ্যে বিদ্যালয়ের সমস্ত আসবাবপত্র সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
জেলার হরিরামপুর উপজেলার চরাঞ্চলের সুতালড়ি ইউনিয়নের ৪১ নম্বর সুতালড়ি রামচন্দ্রপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ধ্বসে পড়েছে। গত বুধবার রাতে বিদ্যালয়টির ভবন আংশিক ধ্বসে পড়েছে। ভাঙন অব্যহত থাকলে আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই বিদ্যালয়টি সম্পূর্ন বিলীন হয়ে যাবে।
স্থানীয়রা জানান, বিদ্যালয়টি ভাঙন রোধে গত আগস্টের প্রথম দিন সকাল থেকে জিও ব্যাগ ফেলার কাজ শুরু হয়। কিন্তু জিও ব্যাগ ফেলার পরেও ভবনটি ধ্বসে যাওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে চরম আতঙ্ক দেখা দেয়। শুধু বিদ্যালয়ই নয়, সুতালড়ি ইউনিয়নের চরাঞ্চলের পুরো এলাকাই পদ্মার ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে।
স্থানীয়রা আরও জানান, গত দুই সপ্তাহ ধরে ওই এলাকায় ভাঙন শুরু হয়। ভাঙনের খবর পেয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাইন উদ্দিন পরিদর্শন করেন। এছাড়াও গত বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম এবং সহকারি কমিশনার (ভ‚মি) মো. বিল্লাল হোসেন বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করেন।
রামচন্দ্রপুর বালিয়াঘোপা গ্রামের তোতা মিয়া জানান, বিদ্যালয়ের পাশেই তিনটি পরিবার বাড়ি তৈরি করেছিল। ইতোমধ্যে দু’টি বাড়ি পদ্মায় ভেঙে গেছে। আরেকটি বাড়িও যেকোনো সময় ভেঙে যেতে পারে। পদ্মার ভাঙনে আমরা দিশেহারা হয়ে পড়েছি। স্কুলসহ তিনটি বাড়ি ভেঙে গেল। দ্রæত ভাঙন রোধ করতে না পারলে আমাদের বাড়িও বিলীন হয়ে যাবে।
বালিয়াঘোপা গ্রামের ইকবাল মিয়া জানান, ভাঙনরোধে জিও ব্যাগ ফেলার পরেও বিদ্যালয়লটি ভেঙে গেল। ভাঙনরোধে স্থায়ী বন্দোবস্ত দরকার। চরাঞ্চলের অনেক জায়গায় পদ্মার ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। আমাদের একটাই চাওয়া পদ্মায় যেন আর কোনো ঘরবাড়ি বিলীন না হয়।
ভাঙন কবলিত সুতালড়ি রামচন্দ্রপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রীতি চৌধুরী বলেন, গত বুধবার রাতে স্কুল ভবনের একটি অংশ পদ্মায় ধ্বসে গেছে। গতকাল বিকালে সুতালড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আবদুস সালাম ইনকিলাবকে বলেন, স্কুলের এক তৃতীয়াংশ পদ্মায় ধ্বসে গেছে। অবশিষ্ট অংশও যে কোনো সময় বিলীন হয়ে যেতে পারে।
এ ব্যাপারে হরিরামপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম জানান, পদ্মায় ধ্বসে যাওয়া স্কুলভবনটি ভাঙনের ঝুঁকিতে থাকায় ২২০ মিটার এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলার কাজ করা হয়েছিল। কিন্তু জিও ব্যাগ ফেলার পরেও স্কুল ভবনটি রক্ষা করা যায়নি।
কাশ্মীর নিয়ে জাতিসংঘের ‘অপরিবর্তিত’ অবস্থানকে স্বাগত জানিয়েছে পাকিস্তান
ইনকিলাব ডেস্ক
জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুতেরেসের মুখপাত্রের বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছে পাকিস্তান যাতে কাশ্মীর বিরোধে জাতিসংঘের অবস্থান পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছে। গতকাল শনিবার জারি করা এক বিবৃতিতে পাকিস্তান পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র জাহিদ হাফিজ চৌধুরী বলেন, জাতিসংঘের মন্তব্য পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করে যে, জম্মু ও কাশ্মীর বিরোধে তার অবস্থান ‘সুপ্রতিষ্ঠিত রয়েছে এবং পরিবর্তিত হয়নি’।
মুখপাত্র বলেন, পাকিস্তান বিশেষ করে বিবৃতির সময়সীমার প্রশংসা করে, কারণ এটি অধিকৃত কাশ্মীরে ২০১৯ সালের ৫ আগস্ট ভারতের অবৈধ এবং একতরফা পদক্ষেপের দুই বছর পূর্ণ হওয়ার সাথে মিলে যায়। ওই দিন ভারত ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল করে অধিকৃত কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার করে। এ পদক্ষেপ কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসনের অবসান ঘটিয়ে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করে।
নয়াদিল্লির পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে পাকিস্তান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, ভারত কাশ্মীরের অবস্থা পরিবর্তন করে জাতিসংঘের সনদ, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব এবং চতুর্থ জেনেভা কনভেনশনসহ আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে।
মুখপাত্র আরো বলেন, বিবৃতিটি জাতিসংঘে ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধির স্ব-পরিচয়ের মন্তব্য অস্বীকার করে দাবি করে যে, জম্মু ও কাশ্মীর অঞ্চল ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ।
জাতিসংঘের কাছে চিঠি : ৩৭০ অনুচ্ছেদ প্রত্যাহারের পর অধিকৃত কাশ্মীরের ভারতের অধিগ্রহণের দুই বছর পূর্ণ হওয়ার দিন গত বুধবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশি জাতিসংঘের কাছে একটি চিঠিতে কাশ্মীরিদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার সমুন্নত রাখার জন্য তার ভ‚মিকা পালনের আহ্বান জানান।
জনাব কুরেশি বলেন, পাকিস্তান কাশ্মীরে ভারতের সমস্ত একতরফা পদক্ষেপকে স্পষ্টভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে, যার মধ্যে ৫ আগস্ট তার স্বায়ত্তশাসনের অবসানও ছিল। সূত্র : এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন