ঢাকার সাভারে অন্তঃসত্ত্বা নাতনীকে আনতে গিয়ে নাতিন জামাই ও তার স্বজনদের হাতে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের শিকার হয়েছেন নানা ও মামা শ্বশুর। এঘটনায় জামাইসহ তিনজনকে আসামি করে সাভার মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে নির্যাতনকারী নাতিন জামাই ও তার বাবাকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন সাভার মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কামাল হোসেন।
এরআগে মঙ্গলবার এই নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। নির্যাতনের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিষটি সকলের নজরে আসে। নির্যাতনের শিকার পঞ্চাশোর্ধ আব্দুল মান্নান ও শহীদ মোল্লা। মানিকগঞ্জ জেলার সিঙ্গাইর থানার ধল্লা ইউনিয়নের বাসিন্দা তারা।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন সাভারের বনগাঁও ইউনিয়নের কাজিপাড়া এলাকার বশির আহমেদ (৬০) ও তার ছেলে আবুল কালাম (২৮)। এঘটনায় বশিরের অপর ছেলে সালাম (২৫) পলাতক রয়েছেন।
বৃহস্পতিবার বিকেলে ভুক্তভোগী আব্দুল মান্নান বাদী হয়ে তিন জনের নাম উল্লেখ করে সাভার মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলার বরাত দিয়ে সাভার মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নাজিউর রহমান বলেন, প্রায় এক বছর আগে সিঙ্গাইর উপজেলার খাসেরচর এলাকার নাতনি সোনিয়াকে সাভারের কাজিপাড়া এলাকার বশির আহমেদের ছেলে আবুল কালামের সাথে বিয়ে দেন। সেসময় দেনমোহর ও যৌতুকের টাকা নিয়ে বিবাদ হয়। এর জের ধরে দুই পরিবারের মাঝে আত্মীয়তার সম্পর্কে ভাটা পড়ে।
এরমধ্যে সোনিয়া গর্ভবতী হলে সাভারের ওই এলাকায় বশিরের বাড়িতে নাতনীকে আনতে যান নানা আব্দুল মান্নান ও মামা শহিদ মোল্লা। এসময় তাদের হাত বেঁধে অমানবিক নির্যাতন করেন তারা।
নির্যাতনের শিকার আব্দুল মান্নান বলেন, প্রায় ১০বছর আগে নাতনী সোনিয়ার সৌদি প্রবাসী বাবা প্রবাসেই মারা যায়। এরপর থেকে সে আমাদের কাছেই বড় হয়েছে। পারিবারিক ভাবে ১০ লাখ টাকা দেনমোহরে বিয়ে দেয়াই কাল হলো আমাদের। মঙ্গলবার অন্তঃসত্ত্বা নাতনীকে দেখতে এসে জামাইয়ের পরিবারের দ্বারা নির্যাতনের শিকার হই আমরা। দুই হাত পিছমোড়া করে বেঁধে নির্যাতন করে এবং মোবাইল ফোন ও নগদ টাকা হাতিয়ে নেয়। পেরে নির্যাতনের ছবি ও ভিডিও আমার ছেলের মোবাইলের ইমোতে পাঠিয়ে ১০ লাখ টাকা দাবী করে। পরে ছেলে ৯৯৯ এ কল করলে পুলিশ গভীর রাতে আমাদের উদ্ধার করে।
এসআই নাজিউর রহমান আরও বলেন, ভুক্তভোগীরা থানায় এসে অভিযোগ দায়ের করলে তৎক্ষণাৎ দুইজনকে আটক করা হয়। পরে অভিযোগটি মামলা আকারে রুজু করে তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়। শুক্রবার তাদের আদালতে পাঠানো হবে। এঘটনায় পলাতক সালামকে গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন