শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যন্তরীণ

সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা ছাতা মাথায় দিয়ে কাজ করেন শ্রমিকরা

প্রকাশের সময় : ৩ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

নজির হোসেন নজু, সৈয়দপুর (নীলফামারী) থেকে

নি¤œ মানের সংস্কার কাজ আর জনবল সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে দেশের বৃহত্তম সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায়। যে কোনো সময় কারখানাটিতে মেরামত, উৎপাদন ও রক্ষণাবেক্ষণ কাজ মুখ থুবড়ে পড়তে পারে বলে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ পরিস্থিতি সরেজমিন দেখতে রেলওয়ে মন্ত্রী মজিবুল হক সহ রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় দল গত ২৯ সেপ্টেম্বর কারখানা পরিদর্শন করেন। কারখানা ঘুরে দেখা যায়, কারখানার জেনারেল ওভারহোলিং শপে (ভারি মেরামত উপ-কারখানা) ছাদ চুঁয়ে বৃষ্টির পানি পড়ছে। এতে ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছিলেন শ্রমিক-কর্মচারীরা। সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার জুনিয়র পার্সোনেল অফিসার (জেপিও) আব্দুল ওয়াদুদ হাওলাদার জানান, কারখানায় মঞ্জুরি পদের সংখ্যা হচ্ছে দুই হাজার ৮৩৪ জন। সে স্থলে কর্মরত আছেন মাত্র এক হাজার ২৪৩ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী। শপের উপ-সহকারী প্রকৌশলী তন্ময় সরকার জানান, সম্প্র্রতি কারখানার আধুনিকায়ন হয়েছে। ওই সময় ছাদের পুরাতন টিন সরিয়ে নতুন টিনের ছাউনি দেয়া হয়। এক বছরের মাথায় টিনগুলোতে মরিচা ধরতে শুরু করে। অনেক স্থানে টিনের ছাদের সংযোগস্থলে ডংগা ফেটে গিয়ে ফাঁক-ফোকরের সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি হলেই এসব দিয়ে অঝোরে পানি পড়ছে। ফলে বিদ্যুতায়িত হয়ে পড়ছে কারখানার ফ্লোর। একজন শ্রমিক জানান, সংস্কার করা হয়েছে মাত্র বছর খানেক আগেই। কাজ ছিল অত্যন্ত নিম্নমানের। ফলে ছাদ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, কারখানার ২২টি উপ-কারখানার (শপ) ১০০ পয়েন্টে বৃষ্টি হলে এভাবে পানি পড়ে। বৃষ্টির পানি অব্যাহত পড়ায় মেশিন-প্লান্ট যেমন ঝুঁকিতে পড়ছে, তেমনি শ্রমিকদের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে। ছাদ মেরামত করতে গিয়ে পড়ে গিয়ে আব্দুল জলিল নামের এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে বলে জানান তিনি। কারখানার প্রডাকশন ইঞ্জিনিয়ার (পিই) ফজলে রাব্বী জানান, প্রায় ১৫৭ কোটি টাকা ব্যয়ে কারখানার আধুনিকায়ন প্রকল্পের গত বছর শেষ হয়েছে। তিন দফা মেয়াদ বাড়িয়ে প্রকল্পটি ডিসেম্বরে শেষ হয়। তবে এখনও কিছু মেশিন স্থাপন করা যায়নি। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান শিগগিরই এসব হস্তান্তর করবে বলে তিনি জানান। শ্রমিক লীগ সৈয়দপুর কারখানা শাখার সম্পাদক মোখছেদুল মোমিন জানান, শত সংকট সত্ত্বেও আমরা কারখানায় মেরামত ও উৎপাদন কাজ অব্যাহত রেখেছি। কিন্তু এভাবে দীর্ঘদিন চলতে পারে না। অবিল¤ে লোকবল নিয়োগ এবং আধুনিকায়নের ব্যবস্থা না হলে সংকটে পড়বে কারখানা। সৈয়দপুর কারখানার বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক (ডিএস) নূর আহাম্মদ হোসেন জানান, সংকট নিরসনে অবশ্যই উদ্যোগ রয়েছে। তবে এসব দেখার দায়িত্ব নীতি-নির্ধারকদের। ছাদ চুঁয়ে পানি পড়ার ব্যাপারটি তিনি স্বীকার করেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন