উচ্চশিক্ষার জন্য দেশের বাইরে পাড়ি জমাচ্ছেন অনেকেই। কিন্তু সঠিক তথ্য না জানার কারণে বিপদে পড়তে হয় অনেক সময়। তাই জেনে নিন, উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশ যেতে হলে আপনাকে কী করতে হবে।
সিদ্ধান্ত
বিদেশে উচ্চশিক্ষায় যেমন অর্থের প্রয়োজন; তেমনি মেধাও জরুরি। বিদেশে অবস্থান করে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে সক্ষম হলেই এ ধরনের পরিকল্পনা নেয়া উচিত। আবার বৃত্তি নিয়েও বিদেশ যেতে পারেন, তবে সেক্ষেত্রে পড়াশোনার খরচ না লাগলেও থাকা-খাওয়াসহ আনুষঙ্গিক খরচ বহনের সামর্থ্য থাকতে হবে। তাহলে এবার সিদ্ধান্ত নিন, বৃত্তি নাকি নিজের খরচেই যাবেন বিদেশ বাড়ি।
বিষয় ও দেশ নির্বাচন
আপনি কোন বিষয়ের ওপর উচ্চশিক্ষা অর্জন করতে চান এবং চাহিদাসম্পন্ন বিষয়ে আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা দেয় এমন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ। বিষয় নির্বাচনে সতর্কতা জরুরি, কারণ বিদেশে চাহিদা আছে এমন অনেক বিষয়ের চাহিদা আমাদের দেশে তেমন নেই। আর অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক দিক থেকে স্থিতিশীল কিনা, এসব কিছু ভেবেই দেশ নির্বাচন করুন।
তথ্য সংগ্রহ
আপনি যে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে চান, সেখানে কেমন খরচ হয় কিংবা পার্টটাইম চাকরির সুযোগ কতটুকু, তার খোঁজখবর নিন। এক্ষেত্রে অনলাইনের পাশাপাশি অভিজ্ঞদের কাছ থেকেও পরামর্শ নিতে পারেন। বিদেশি অনেক মানসম্পন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের আঞ্চলিক অফিস বাংলাদেশে আছে, যারা শিক্ষার্থীদের ভর্তির বিষয়ে সহযোগিতা করে থাকে। যদি আপনি মনে করেন, একার পক্ষে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা সম্ভব নয়, তবে বিশ্বস্ত কোনো কনসালট্যান্সি ফার্মের সহযোগিতা নিতে পারেন।
ভাষাগত দক্ষতা ও কোর্স
দেশের বাইরে পড়াশোনার জন্য আইইএলটিএস, টোফেলের মতো ভাষাগত দক্ষতা যাচাইকারী সনদ অবশ্যই রাখতে হবে। এর মধ্য দিয়ে একজন শিক্ষার্থীর ইংরেজিতে ভাষাগত দক্ষতা যাচাই করা হয়। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে আইইএলটিএস প্রয়োজন হয় না। সেক্ষেত্রে সে দেশে পৌঁছে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘ইংরেজি ভাষা দক্ষতা’ বিষয়ক বিভিন্ন মেয়াদের ফাউন্ডেশন কোর্স করতে হয়।
কাগজপত্র, ফান্ড ও স্পন্সর
শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ, পাসপোর্ট, জন্মনিবন্ধন সনদ, মেডিকেল সার্টিফিকেট, স্পন্সর-সংক্রান্ত কাগজপত্র, ভাষা দক্ষতা সনদ, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স, পাসপোর্ট সাইজের ছবি রাখতে হবে হাতের কাছেই। উচ্চশিক্ষার জন্য দেশের বাইরে যেতে হলে শিক্ষার্থীর ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে যথেষ্ট পরিমাণ টাকা থাকতে হবে। প্রমাণ হিসেবে সংশ্লিষ্ট অ্যাকাউন্টের শেষ এক বছরের লেনদেনের কাগজপত্র যুক্ত করতে হবে ভিসা আবেদনপত্রের সঙ্গে। স্পন্সরের ক্ষেত্রে মা-বাবা ছাড়াও বৈধ অভিভাবকদের সহযোগিতা নিতে পারেন।
ভর্তি আবেদন
আপনি চাইলে যে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চান, সেখানে অনলাইনের মাধ্যমে ভর্তির আবেদনপত্র সংগ্রহ করতে পারেন। আবার অনলাইনে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে প্রয়োজনীয় তথ্যসহ অনুরোধ পাঠালে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘অ্যাডমিশন অফিস’ থেকে ডাকযোগে শিক্ষার্থীর ঠিকানায় অ্যাপ্লিকেশন ফরম ও প্রসপেক্টাস পাঠিয়ে দেয়। এর পর আবেদন ফি জমা দেয়ার ব্যাংক রসিদসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যুক্ত করে আবেদন পাঠাতে হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাডমিশন অফিস বরাবর। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কাগজপত্র যাচাই-বাছাইয়ের পর যোগ্য শিক্ষার্থীর অফার লেটার বা এক্সেপট্যান্স লেটার পাঠিয়ে থাকে।
ভিসা আবেদন
অফার লেটার হাতে পাওয়ার পর ভিসার জন্য সংশ্লিষ্ট দেশের দূতাবাসে আবেদন করতে হয়। অনেক দেশের ক্ষেত্রে ভিসা ইন্টারভিউয়ের মুখোমুখি হতে হয়। এর পর প্রার্থীর সব কাগজ যাচাই-বাছাই করে সে দেশের দূতাবাস থেকে ভিসা দিলে প্রার্থী সেই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পায়। আর ভিসা পেয়ে গেলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যাওয়ার চেষ্টা করুন।
ষ রবিউল কমল
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন