রোববার, ১৬ জুন ২০২৪, ০২ আষাঢ় ১৪৩১, ০৯ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

নবনির্মিত সেতু যেন গলার কাঁটা

যশোর-বেনাপোল মহাসড়ক বন্যা বা প্রবল বর্ষায় ব্রিজের নিচ দিয়ে কোনো কিছু চলাচল করতে পারবে না। সেতুর উচ্চতা প্রসঙ্গে উপজেলা প্রকৌশলী শ্যামল কুমার বসু

শাহেদ রহমান, যশোর থেকে | প্রকাশের সময় : ১৭ আগস্ট, ২০২১, ১২:০২ এএম

যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের ঝিকরগাছায় কপোতাক্ষ নদের ওপর নবনির্মিত সেতু দুইটি নদের গলার কাঁটা হিসেবে দেখা দিয়েছে। এখনই সামান্য বৃষ্টিতে ব্রিজের গার্ডারের নিচের অংশ পানি ছুঁতে চলেছে। ফলে ভরা মৌসুমে এই ব্রিজের নিচ দিয়ে কোন নৌকা চলাচল করতে পারবে না। এলাকাবাসী দাবি করেছেন, সেতুটি কপোতাক্ষ নদের গলার কাঁটা হয়েছে।
দেশের প্রধান স্থলবন্দর বেনাপোলে যাতায়াতের একমাত্র পথ এই মহাসড়ক। মহাসড়ক এশিয়ান হাইওয়ে হিসাবে প্রস্তাবিত। এ সড়কের ঝিকরগাছায় কপোতাক্ষ নদের ওপর অর্ধশত বছর আগে নির্মিত সরু সেতুটি ছিলো একমাত্র পথের বিড়ম্বনা। তাই বছর দেড়েক আগে এ সেতুটির পাশে শুরু হয়েছে ৬ লেনের জন্য দুইটি সেতু নির্মাণের কাজ। তারমধ্যে একটি সেতু নির্মাণ শেষ হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, নির্মাণাধীন ২ ব্রিজের মধ্যে একটির কাজ শেষ হয়েছে। আর পাশের ব্রিজের নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। প্রতিটি সেতু ১২০ মিটার লম্বা ও ১৫ মিটার চওড়া। দুইটি করে পিলার ও এবাটমেন্ট ওয়াল এবং ২১ গার্ডার বা ভিম দেয়া হয়েছে। পুরাতন সেতুটির চেয়ে দেড় মিটার উঁচু করা হয়েছে। সেতুটি পিসট্রেজ বা সমান করা হয়েছে। জাইকার অর্থায়নে প্রায় দেড়শো কোটি টাকা ব্যয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মনিকো এবং ডেনকো সেতু দুইটি নির্মাণ করছে। কিন্তু নির্মাণ কাজ শেষ হওয়া সেতুটি দেখে এলাকাবাসী আশাহত হয়েছেন। পুরাতন ব্রিজের নিচ অংশ বা তলোদেশ কখনো নদের পানি স্পর্শ করতে পারেনি। অথচ, বৃৃষ্টিতে নদে পানি সামান্য বাড়ায় নির্মাণাধীন অর্থাৎ নতুন ব্রিজের নিচের অংশ বা তলোদেশকে পানি ছুঁতে চলেছে। ফলে এলাকাবাসীর আশংকা ভরা মৌসুমে নতুন এ ব্রিজের নিচ দিয়ে কপোতাক্ষ নদে কোনো নৌকা তো দূরের কথা একটি ডোঙ্গাও চলাচল করতে পারবে না। তাই নির্মাণাধীন বা নতুন সেতু দুইটি কপোতাক্ষ নদের গলার কাঁটা বলেও দাবি করেছেন অনেকেই।
স্থানীয় এক বাসিন্দা এস. এম. জাহাঙ্গীর জানান, নতুন সেতু অনেক নিচু করে নির্মাণ করা হয়েছে। এ ব্রিজের কারণে কপোতাক্ষ নদ আরো মরে গেলো। এখনই নৌকা যেতে পারবে না। পানি বাড়লে কোনভাবেই ডোঙ্গাও চলাচল করতে পারবে না। ঝিকরগাছা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইমরান রশীদ জানান, নতুন সেতু আমাদের আশাহত করেছে। এ ব্রিজের কারণে নদ নব্যতা আরো হারাবে। ব্রিজের নকশা ঠিক হয়নি। ঝিকরগাছা মহিলা কলেজের উপাধ্যক্ষ ইলিয়াস উদ্দীন জানান, আমরা শুনেছিলাম যে ব্রিজের কথা তা তো নির্মাণ হলো না। পুরাতনটির নিচ দিয়ে নৌকা, জাহাজ চলাচল করতে পারলেও নতুন সেতুটির নিচ দিয়ে একটি ডোঙ্গাও যেতে পারবে না। নদকে মেরে ফেলতে নতুন সেতুই যথেষ্ট বলে তিনি দাবি করেন।
সেতু নির্মাণ ব্রিফিং ইঞ্জিনিয়ার মো. অরুন বিশ্বাস বলেল, বর্তমানে সেতু থেকে ১২ ফুট নিচে পানি রয়েছে। বর্ষার সময় পানি হলেও কোন সমস্যা হবে না।
উপজেলা প্রকৌশলী শ্যামল কুমার বসু জানান, বন্যা বা প্রবল বর্ষায় ব্রিজের নিচ দিয়ে কোনো কিছু চলাচল করতে পারবে না। ব্রিজের গার্ডার উচ্চতা কম করায় এমন হয়েছে। এক্ষেত্রে নদী পুনঃখনন করতে হবে।
যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী তৌহিদুল ইসলাম জানান, ব্রিজের বিষয়টি নিয়ে আমাদের কাছে অভিযোগ আসেছে। আমরা খতিয়ে দেখছি ভুল নকশায় সেতুটি করা হয়েছে কিনা। কেননা শিগগিরই কপোতাক্ষ খনন শুরু হবে। ৮০০ কোটি টাকার এই কাজের ৩৪ কিলোমিটারের কার্যাদেশ এরই মধ্যে দেয়া হয়েছে। ভুল নকশায় সেতু নির্মাণ হলে সবার জন্য ক্ষতির কারণ হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (9)
গিয়াস উদ্দীন ফোরকান ১৭ আগস্ট, ২০২১, ৮:১৪ এএম says : 0
সংশ্লিষ্ট সকলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হোক
Total Reply(0)
হাসান সোহাগ ১৭ আগস্ট, ২০২১, ৮:১৫ এএম says : 0
ভেঙ্গে আবার নতুন করে সঠিক নকশায় নির্মাণ করা হোক
Total Reply(0)
নিয়ামুল ১৭ আগস্ট, ২০২১, ৮:১৬ এএম says : 0
নির্মাণাধীন বা নতুন সেতু দুইটি কপোতাক্ষ নদের গলার কাঁটা
Total Reply(0)
গোলাম মোস্তফা ১৭ আগস্ট, ২০২১, ৮:১৭ এএম says : 0
নদকে মেরে ফেলতে নতুন সেতুই যথেষ্ট
Total Reply(0)
বিদ্যুৎ মিয়া ১৭ আগস্ট, ২০২১, ১:৩৫ পিএম says : 0
ভুল নকশায় সেতু নির্মাণ হলে সবার জন্য ক্ষতির কারণ হবে।
Total Reply(0)
Shahjahan Sarkar Shazu ১৭ আগস্ট, ২০২১, ৩:৪৮ পিএম says : 0
সংশ্লিষ্ট সকলকে বরখাস্ত করে বিচার করা একান্ত প্রয়োজন I বিশ্বাস করা অসম্ভব এই ধরণের লোক কি ভাবে এই সব গুরুত্ব পূর্ণ জায়গায় চাকরি পায় I সেতু মন্ত্রীর কি কোনো দায়িত্ব নাই, এই মানুষ গুলি এতো অর্বাচীন ওদের কি শিক্ষার কোনো আলোই পায় নাই Iএই মুরুক্ষ দের পিয়নের কাজে পাঠানো হোক I
Total Reply(0)
মাহাফুজ আলম ১৯ আগস্ট, ২০২১, ৪:০৫ পিএম says : 0
সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের মনিটরিং করা ভালো ছিল।
Total Reply(0)
jack Ali ১৯ আগস্ট, ২০২১, ৯:৩৯ পিএম says : 0
Since liberations enemy of Allah is ruling our beloved mother land as such they have destroyed our country every way.
Total Reply(0)
Md.Mahbubur Rahman ২০ আগস্ট, ২০২১, ৪:৩২ পিএম says : 0
পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন পানি উন্নয়ন বোর্ডের অনুমতি ব্যতিরেকে কিভাবে এরূপ ত্রুটিযুক্ত সেতু নির্মাণ করা হলো। আসলে দেখার কেউ নেই,,,,,,,, সিস্টেম লস্।
Total Reply(0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন