মধুখালী (ফরিদপুর) উপজেলা সংবাদদাতা : সরকারি অনুমোদন ছাড়াই মধুখালী উপজেলার কামারখালীতে অবস্থিত সরকারি বীরশ্রেষ্ঠ আব্দুর রউফ ডিগ্রি কলেজ ক্যাম্পাস ও বাইরের ছাত্রাবাস এলাকার পুরাতন প্রায় অর্ধশতাধিক মেহগনি গাছ কর্তন এবং কৃষি অধিদপ্তরের মালিকানাধীন একটি পুরাতন বিল্ডিং মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়াই ভাঙার অভিযোগ উঠেছে অধ্যক্ষ এমডি মাহাবুব আলমের বিরুদ্ধে। গাছগুলি বেঞ্চ তৈরির অজুহাতে কর্তন করা হয়েছে বলে অনেক শিক্ষক ও শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেন, কলেজ ক্যাম্পাস ও ছাত্রাবাসের পুরাতন ও নতুন ৪৭টি বড় ও মাঝারি গাছ কর্তন করেন অধ্যক্ষ স্যার। তাতে চেড়াইকৃত কাঠের পরিমাণ এক হাজার সিএফটি হবে। কলেজে বেঞ্চ সংকট দেখিয়ে এক সময় তিনি কলেজের জন্য ১১০ জোড়া বেঞ্চ তৈরির কাজ শুরু করেন। কামারখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. লুৎফর রহমান ও আড়পাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বদরুজ্জামান বাবু গত ২ ফেব্রুয়ারি উপজেলা আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় নিয়ম বর্হিভ’ত ভাবে গাছ কর্তনের বিষয়ে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন। সরেজমিনে কলেজ ক্যাম্পাসে গিয়ে দেখা যায়, ক্যাম্পাসে বেঞ্চের তৈরির কাজ চলছে। কথা হয় কলেজ অধ্যক্ষ এমডি মাহবুব আলমের সাথে। তিনি জানান, গত ডিসেম্ববর-২০১৫ মাসে একাডেমিক কাউন্সিল মিটিং-এ গাছ কাটার অনুমোদন নেওয়া হয়। কলেজ ক্যাম্পাস ও বাইরের ছাত্রাবাস এলাকা থেকে গাছ কাটা হয়েছে। কত গাছ কাটা হয়েছে সংখ্যা বলতে পারবো না। তিনি দাবী করে বলেন, কলেজ উন্নয়ন করতে হলে গাছ কাটতে হবে এবং ক্যাম্পাসের মাঝের পুরাতন বিল্ডিং ভাঙতে হবে। আন্তমন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন নিতে গেলে দেরি হবে বিধায় আমার নিজ দায়িত্বে গাছগুলো কেটেছি ও বিল্ডিং ভাঙা শুরু করেছি। এক পর্যায়ে তিনি বলেন, যে সব শিক্ষকরা ছাত্রদের ক্লাশ করাতে চান না ফাঁকি দিয়ে চাকরি করতে চান তারাই আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনছে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ঠিকাদার একটি নবনির্মিত ভবন বুঝে দিলেও কোন বেঞ্চ সরবরাহ করেননি। অধ্যক্ষ এমডি মাহবুব আলম রাগান্বিত হয়ে বলেন, আমি কলেজের স্বার্থে কাজগুলি করেছি, কৈফিয়ত দিতে হয় আমি ডিপার্টমেন্টকে দিব। আপনারা লিখেন। আমার অনেক ক্ষমতা, আমি দেখবো। আমার একটা ফোনের অনেক মূল্য। বেঞ্চ কাঠ মিস্ত্রি হাফিজ বলেন, অধ্যক্ষ স্যারের সাথে ১০২ জোড়া বেঞ্চ প্রতি জোড়া বেঞ্চ এর মুজুরি ৫০০টাকা হিসেবে বানানোর চুক্তি হয়। কাজ শেষের দিকে। এ দিকে মধুখালী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা খালেদা পারভীন অভিযোগ করে বলেন, কলেজ ক্যাম্পাসের ভিতরে যে ভবনটি ভাঙ্গা হচ্ছে সেটি উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এর মালিকানাধীন ৮ শতাংশ জমির মধ্যে উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তাদের কোয়াটার নির্মান করেছিলেন। অধ্যক্ষ সাহেবকে নিষেধ করা হলেও তিনি আন্ত; মন্ত্রনালয়ের অনুমোদন ছাড়াই ওটা নিজ দ্বায়িত্বে ভাঙ্গতে শুরু করেছেন। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তপক্ষকে জানাবো। উপজেলা নির্বাহী অফিসার লুৎফুন নাহার বলেন, আজ রবিবার সরেজমিনে গিয়ে গাছ কাটা এবং বিল্ডিং ভাঙা বিষয়ে সত্যতা পাওয়া গেল। সরকারি নিয়ম-কানুন মানা হয়েছে কিনা জানা দরকার। অধ্যক্ষ সাহেব ছুটিতে থাকায় কথা হয়নি। সংশ্লিষ্ট ডিপার্টমেন্টকে জানানো হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন