বুধবার, ২২ মে ২০২৪, ০৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৩ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

টাকা চাওয়ায় মা-বাবাকে কোপালো পাষন্ড ছেলে

প্রকাশের সময় : ৪ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) উপজেলা সংবাদদাতা

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে ছেলের কাছে টাকা চাওয়ায় বাবা-মাকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ছেলের নির্মম নির্যাতনের শিকার বাবা-মা প্রাণ সংশয়ে আশ্রয় নিয়েছেন এক আত্মীয় বাড়িতে। ছেলের দায়ের কোপ বাবার পেটে লেগে মারাত্মক আহত হয়। এখানেই ক্ষান্ত না হয়ে মাকে জুতাপেটা করে ও একটি হাত ভেঙে দেয়। সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, উপজেলার সদর ইউনিয়নের খৈরাটি গ্রামের আবদুল হাই এর তিন মেয়ে ও একমাত্র ছেলে মোস্তফা কামাল। গত শনিবার দুপুরে ছেলের কাছে বাবা আবদুল হাই ৪ হাজার টাকা চাইলে ক্ষীপ্ত হয় মোস্তফা। টাকা চাওয়া নিয়ে বাকবিত-ার এক পর্যায়ে বাবার কাছে তেড়ে যায় মোস্তফা। হাতের কাছে থাকা দা নিয়ে বাবার পেটে কোপ দেয়। এ সময় মা ছালেমা খাতুন এগিয়ে আসলে তার গালে জুতার বাড়ি দেয় মোস্তফা। শ্বাশুড়িকে মারধর করে পুত্রবধূ হুসনে আরা বেগমও। ওই অবস্থায় আবদুল হাইকে উদ্ধার করে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে সেখানে চারটি সেলাই দেওয়া হয়। বিষয়টি নিয়ে ছেলের নির্যাতনের স্বীকার বাবা-মা গত শনিবার বিকেলে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবু হানিফার কাছে নালিশ করতে যান। নালিশ করতে গেছেন এই খবর পেয়ে বাবা-মার ঘরে তালা দেয় ছেলে। খবর পেয়ে গত রোববার দুপুরে খৈরাটি গ্রামে আবদুল হাইয়ের বাড়িতে গেলে দেখা যায় ঘরে তালা ঝুলছে। বাড়িতে বাবা-মাকে নির্যাতনকারী ছেলে নেই। পুত্রবধূ হুসনে আরা বেগম বলেন, নানা বিষয় নিয়ে তার বিয়ের পর থেকে শশুড়-শ্বাশুড়ির সাথে বনিবনা হচ্ছিল না। শনিবার সামান্য টাকা চাওয়া নিয়ে তার স্বামীর সাথে শ্বশুড়ের ধস্তাধস্তি হয়। ওই সময় শ্বশুড়ের পেটে দায়ের অগ্রভাগ ঢুকে যায়। এতে তিনি সামান্য আহত হয়েছেন। এরপর বাড়ি থেকে চলে গেছেন। এদিকে ছেলের নির্যাতনের স্বীকার বাবা আবদুল হাই ও মা ছালেমা খাতুন পাশের গ্রাম জয়পুরে আশ্রয় নিয়েছেন। ছালেমার চাচাতো ভাই চাঁন মিয়া জানান, মোস্তফা তার বাবা-মাকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। তাদের তিনি আশ্রয় দিয়েছেন। আবদুল হাই বলেন, শনিবার তার ছেলের কাছে ৪ হাজার টাকা চাওয়ায় তার উপর ক্ষিপ্ত হয়। এক পর্যায়ে তাকে দা দিয়ে কোপ দেয়। ওই সময় তার পুত্রবধূও তাকে মারধর করে। ছালেমা খাতুন বলেন, স্বামীকে ছেলে মারছে এই দৃশ্য দেখে তিনি ফেরাতে এগিয়ে যান। ওই সময় তাকে ৬টি জুতার বাড়ি দেয় এবং লাঠি দিয়ে হাতে সজোরে আঘাত করে। তারপর বসতঘরে তালা দিয়ে আমাদের তাড়িয়ে দেয়। নির্যাতিত বাবা ও মা ছেলের বিচার দাবি করেন। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবু হানিফা বলেন, ছেলের নির্যাতনের স্বীকার হয়ে বাবা-মা তার কাছে এসে বিষয়টি জানায়। পরে তাদের থানায় অভিযোগ দিতে বলা হয়। ঈশ্বরগঞ্জ থানার ওসি বদরুল আলম খান বলেন, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন