ফরিদপুরে পদ্মা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। কাঁদছে পানিবন্দি মানুষ।
ফরিদপুর পদ্মার প্রধান শাখা কুমার নদীতে গতকাল মঙ্গলবার জোয়ারের পানি ছিল ৯.৪ পয়েন্ট। যা গত ২৩ আগস্টের চেয়ে প্রায় ২ পয়েন্ট বেশি। গত ২৪ ঘণ্টায়, ফরিদপুর পদ্মার পানি ২ সে.মি. বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার প্রায় ৫২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গতকাল ২৪ আগস্ট দুপুরে ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপক গেটম্যানদের কাছ থেকে উল্লিখিত তথ্য জানা যায়। এতে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে হাজার হাজার মানুষ।
পদ্মার পানি বৃদ্ধির কারণে জেলা সদরসহ আরো ২টি উপজেলার প্রায় ১০ হাজার মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে।
পানি বাড়ার ফলে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছে ফরিদপুর সদর উপজেলার নর্থচ্যানেল, ডিগ্রিরচর ও চর মাধবদিয়া ইউনিয়নের চরাঞ্চলের মানুষ। এরই সাথে চরাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকা তলিয়ে যাওয়ায় গবাদি পশুর খাদ্য সঙ্কটদেখা দিয়েছে। নষ্ট হয়েছে বীজতলাসহ বিভিন্ন ফসল ও সবজি ক্ষেত।
চর মাধবদিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা করিমন বেগম বলেন, বন্যায় আমাদের ঘরে পানি ঢুকে পড়েছে। চুলায় আগুন জ্বালানোর মতো কোনো উপায় নেই। এ জন্য শুকনো খাবার খেয়ে থাকতে হচ্ছে। এখন পর্যন্ত কেউ সহায়তা করতে আসেনি। সরকারি সাহায্যও পাইনি। নর্থ চ্যানেল ইউনিয়নের কাইমুদ্দিন মতুব্বরের ডাঙ্গী গ্রামের বাসিন্দা আক্তারি বেগম বলেন, আমার বাড়ির আশপাশের সব বাড়ি তলিয়ে গেছে। আমার উঠোনেও পানি। এইভাবে পানি বাড়লে ভিটেমাটি ছেড়ে যাওয়া ছাড়া আর উপায় থাকবে না।
ফরিদপুর জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন অফিস জানায়, এ বছর বড় ধরনের বন্যার আশঙ্কা নেই। আগামী সপ্তাহ থেকে পানি কমতে শুরু করবে। তবে এখন পদ্মার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করায় নিম্নাঞ্চল ও বেড়িবাঁধের পাশের নিচু এলাকাগুলোত পানি উঠেছে। পানিবন্দি পরিবারের জন্য চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এছাড়া জরুরি সেবা ৩৩৩ নম্বরে কেউ ফোন করলেও তাদের বাড়িতে খাবার পৌঁছে দেয়া হচ্ছে।
ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুলতান মাহমুদ বলেন, পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। আরও ২-৩ দিন পানি বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী সপ্তাহ থেকে পানি আবার কমতে শুরু করবে।
ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার বলেন, পদ্মা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে জেলার কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তাইতো পানিবন্দিদের সহায়তায় কাজ করছে প্রশাসন।
তিনি বলেন, বন্যার ঝুঁঁকিতে থাকা এলাকাগুলোতে শুকনো খাবার, শিশু খাদ্য ও গোখাদ্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন