করোনাভাইরাসের কারণে র্দীঘ ৪ মাস ২৫ দিন পর সরকারি নির্দেশনায় রাজধানীর মিরপুরে জাতীয় চিড়িয়াখানা গতকাল খুলে দেওয়া হয়েছে। ছুটির দিন হওয়ায় প্রথমদিনই ছিল দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড়। চিড়িয়াখানার গেটে সকাল থেকে মানুষ আসতে শুরু করে। সন্তানদের নিয়ে ঘুরতে আসেন অনেকে। নগরবাসীর অন্যতম বিনোদন কেন্দ্রটি খোলার দিনেই জমজমাট হয়ে ওঠে। টিকিট কাউন্টার এবং প্রবেশপথে ছিল লম্বা লাইন। চিড়িয়াখানার গেটে স্বাস্থ্যবিধি মেনে টিকিট কাটলেও ভিতরে প্রবেশ করার পর কেউই স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। শিশুরা মাস্ক ছাড়াই যে যার মতো ছোটাছুটি করছে। বড়রাও ঘুরছেন মুখে মাস্ক না পরেই। চিড়িয়াখানার পক্ষ থেকে এ বিষয়টি তদারকি করার কেউ নেই।
জাতীয় চিড়িয়াখানা সূত্রে জানা যায়, এখন থেকে রোববার ছাড়া সপ্তাহের বাকি দিনগুলোতে সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চিড়িয়াখানা খোলা থাকবে। তবে মুজিবশতবর্ষ উপলক্ষে প্রতিমাসের প্রথম রোববারও চিড়িয়াখানা খোলা থাকবে।
চিড়িয়াখানার পরিচালক ডা. মো. আব্দুল লতিফ বলেন, প্রাণীদের ঝুঁকি এড়াতে জাতীয় চিড়িয়াখানায় বিশেষ কিছু প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে- দর্শনার্থীদের প্রবেশের গেটে তিন ফুট দূরত্বে একটি লাল বৃত্তের মধ্যে দাঁড়িয়ে টিকিট সংগ্রহ করতে হবে। সবাইকে মাস্ক পরে প্রবেশ করে ভেতরে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঘোরাফেরা করতে হবে। চিড়িয়াখানার বিভিন্ন স্থানে দর্শনার্থীদের জন্য ১২টি স্থানে হ্যান্ড স্যানিটাইজার, সাবান ও পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। ডিজিটাল ডিসপ্লেতে স্বাস্থ্যবিধির বিষয়ে সর্তক করা হচ্ছে। দর্শনার্থীদের জন্য চিড়িয়াখানায় দেখানো হচ্ছে হাতির ফুটবল খেলা। মগবাজার থেকে চিড়িয়াখানায় এসেছেন রোখসানা বেগম।
স্বামী ও চার বছরের শিশু রোহানকে সঙ্গে নিয়ে। তিনি বলেন, লকডাউনের কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল সব ধরনের বিনোদনকেন্দ্র। অনেক দিন ঘরবন্দি ছিলাম। ছেলেটাকে একটা স্কুলে ভর্তি করেছিলাম। কয়েকদিন স্কুলে যাওয়ার পর স্কুলও বন্ধ হয়ে গেল। ঘরে বন্দি থেকে ছেলেটাও কেমন যেন চুপচাপ হয়ে যাচ্ছে। টিভিতে কার্টুন দেখা না হলে মোবাইলে গেম খেলা এটা নেশা হয়ে যাচ্ছে। তাই বাধ্য হয়ে অনেকদিন পর ছেলেটাকে নিয়ে ঘুরতে এসেছি। এই যে দেখেন কি সুন্দর ছেলেটা ছোটাছুটি করছে। ওর এই আনন্দ দেখে সত্যি খুব ভালো লাগছে। কতদিন পর ছেলেটাকে এমন হাসি খুশি প্রাণোচ্ছ্বল দেখছি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন