খাগড়াছড়িতে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার চার মাস না যেতেই খালে বিলীন হয়েছে সড়ক। এতে লক্ষীছড়ি-সিন্দুকছড়ি সড়কে যান চলাচল বন্ধ হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। প্রকল্পটি কার্যত কোনো কাজে না আসায় সরকারের ক্ষতি ৫৪ লাখ টাকা। সরকারি অর্থ গচ্চা গেলেও ঠিকাদার ও বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান এলজিইডি বলছে এটি প্রাকৃতিক বিপর্যয়।
জানা যায়, পার্বত্য চট্টগ্রাম গ্রামীণ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় খাগড়াছড়ির গুইমারায় সিন্দুকছড়ি-লক্ষীছড়ি সড়কের বাঁশপাড়া সংলগ্ন এলাকায় ২০১৯ সালে সড়ক রক্ষা প্রকল্প শুরু করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ। ওই বছরের ৩০ জুন প্রকল্পের কার্যাদেশ দেয়া হয়। প্রকল্পের কাজ শেষ হয় চলতি বছরের ৬ এপ্রিল। বাংলাদেশ সরকার ও এশিয়ান ডেভেলমেন্ট ব্যাংকের অর্থায়নে নির্মিত এই প্রকল্পের প্রাক্কলিত মূল্য ধরা হয় ৫৪ লাখ টাকা। প্রকল্পের আওতায় সড়কের ভাঙন রোধে দুটি ৭৫ ও ৫০ মিটার দীর্ঘ বল্লি (খুঁটি) প্যালাসাইডিং করা হয়। বল্লি প্যালাসাইডিং করার পর সড়কের ভাঙন রোধে জিওব্যাগও ফেলা হয়। এপ্রিল মাসে কাজ শেষ হওয়ার পর চলতি মৌসুমের বর্ষার শুরুতেই বল্লি প্যালাসাইডিং ধসে যেতে শুরু করে। এরমধ্যে প্রকল্প বাস্তবায়ন করার পর বিল উত্তোলন করে ঠিকাদারি সংস্থা। সড়ক লাগোয়া খালে বিলীন হয়েছে জিওব্যাগ, হেলে পড়েছে বল্লি। ধসে গেছে প্রায় ২০ ফুট পাকা সড়ক। আর কয়েক দিন বৃষ্টি হলেই সড়কের বাকি অংশ ধসে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
চান্দেরগাড়ি (জিপ) চালক মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, কিছু দিন আগেই রাস্তাটির কাজ শেষ হয়। এখন রাস্তা ভেঙে খালে চলে গেছে। রাস্তাটি না থাকলে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাবে। ঠিকাদারি সংস্থা সেলিম অ্যান্ড ব্রাদার্সের তত্ত্বাবধায়ক আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, আমরা বলেছি বল্লি প্যালাসাইডিং না করে এমএস পাইপ দেয়ার জন্য। কিন্ত এলজিইডি দিয়েছে বল্লি। বল্লি ৫-৭ ফুটের বেশি ভেতরে যায় না। আমরা কাজ করতে অপারগতা প্রকাশ করেছিলাম। তারপরও তারা অনুরোধ করেছে বল্লি দিয়ে কাজ করে দেয়ার জন্য। এ নিয়ে তিনবার কাজ করেছি। তারপরও টিকছে না।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শাহজাহান বলেন, এখানে প্রকল্প অনুযায়ী কাজ হয়েছে। কাজে অনিয়ম হয়নি। এটা প্রাকৃতিক দুর্যোগ ভ‚মিধসে হয়েছে। আমরা জরুরি ভিত্তিতে সড়কটি মেরামতের জন্য এলজিইডির প্রধান কার্যালয়ে জানিয়েছি। বিশেষজ্ঞ দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সড়কটি রক্ষার ব্যাপারে নির্দেশনা দেবে। সেই অনুযায়ী কাজ হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন