দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় বিচারিক আদালতে জামিনপ্রাপ্ত (বরখাস্ত) ডিআইজি (প্রিজন) পার্থ গোপাল বণিকের জামিন বাতিল করেছেন হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে আগামী ২০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তাকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
অস্বাভাবিক জামিন লাভের ঘটনায় দুদকের আপিলের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল বৃহস্পতিবার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম এবং বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের ভাচুর্য়াল ডিভিশন বেঞ্চ এ নির্দেশ দেন। আদালত নির্দেশে পার্থ গোপাল বণিকের মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তরেরও নির্দেশ দেন। এছাড়া অস্বাভাবিক জামিন প্রদানকারী বিচারক ইকবাল হোসেনকে ভবিষ্যতের জন্য সতর্ক করে দেয়া হয়েছে।
গতকাল আদেশদানকালে দুদকের পক্ষে অ্যাডভোকেট খুরশিদ আলম খান ভাচুর্য়ালি সংযুক্ত ছিলেন। সরকারপক্ষে যুক্ত ছিলে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার। আদেশ সম্পর্কে খুরশিদ আলম খান সাংবাদিকদের বলেন, দুদকের আপিল মঞ্জুর করে পার্থ গোপাল বণিকের জামিন বাতিল করে দিয়েছেন। তাকে ২০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত—৫ থেকে মামলাটি বিচারের জন্য দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনাল—৪ এ পাঠিয়েছেন।
হাইকোর্টের নির্দেশ, আগামী বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে মামলাটি নিষ্পত্তি করতে বলা হয়েছে। এছাড়া মামলার প্রত্যেক রায় ও আদেশ উন্মুক্ত আদালতে দিতে বলেছেন। আর ভবিষ্যতের জন্য ঢাকার বিশেষ জজ আদালত—৫ এর বিচারক ইকবাল হোসেনকে সতর্ক করেছেন আদালত।
গত ১৯ আগস্ট পার্থ গোপাল বণিককে অস্বাভাবিকভাবে জামিন দেয়ার ঘটনায় হাইকোর্টে ক্ষমা প্রার্থনা করেন বিচারক ইকবাল হোসেন। তিনি ১০ হাজার টাকা মুচলেকায় তার জামিন মঞ্জুর করেন। জামিন আদেশ নিয়ে পরদিনই পার্থ গোপাল বণিক কারামুক্ত হন। অনেকটা গোপনে ও তড়িঘড়ি করে জামিনে তিনি কারামুক্ত হন। এই মামলায় গত বছরের ৪ নভেম্বর তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত।
পার্থ গোপাল বণিকের বাসা থেকে ৮০ লাখ নগদ অর্থ জব্দ করা হয়। এ অর্থ তিনি ঘুষ বাবদ অর্জন করেছেন—মর্মে অভিযোগ করা হয়েছে দুদকের মামলায়।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ২৭ জুলাই ডিআইজি পার্থ গোপাল বণিক চট্টগ্রামে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তখন তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ৮০ লাখ টাকা অর্জন করেন। সেই টাকা তিনি তার নিজ বাসার ক্যাবিনেটে লুকিয়ে রাখেন। অনুসন্ধানকালে অভিযান পরিচালনা করে তার বাসা থেকে ওই টাকা জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় মামলা করে দুদক। এ মামলায় তিনি একাধিকবার হাইকোর্টে জামিন চেয়েও পাননি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন