সাতক্ষীরায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামীদের মধ্যে ছয়জনের আপীল আবেদন না’মঞ্জুর করেছেন আদালত। একই সাথে নিম্ন আদালতের আদেশ বহাল রাখার নির্দেশ দিয়েছেন সাতক্ষীরার সেশন জজ আদালত (আপিল বিভাগ) এর বিচারক সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ শেখ মোঃ মফিজুর রহমান। বুধবার (০৮ সেপ্টেম্বর) জনাকীর্ণ আদালতে এই রায় ঘোষণা করা হয়।
আপীলকারীরা হলেন-চার বছর করে সাজাপ্রাপ্ত আসামী গোলাম রসুল, জহুরুল ইসলাম, শাহাবুদ্দিন, কয়লা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুর রকিব, মনিরুল ইসলাম ও এডভোকেট আব্দুস সামাদ, । ক্রিমিনাল আপিল নম্বর ৪৩/২১, ২৫/২১, আসামী ও ৩৩/২১। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে আপিল মামলাগুলো দায়ের করা হয়। এছাড়া, আরো একটি আপিল মামলার (২৭/২১) পূর্নাঙ্গ শুনীনির দিন ধার্য্য রয়েছে আগামীকাল বৃহস্পতিবার সাতক্ষীরার সেশন জজ আদালতে। এই আপিলকারী সাতক্ষীরা আইনজীবি সমিতির সাবেক সেক্রেটারি ও বিএনপি নেতা এডভোকেট আব্দুস সাত্তার।
উল্লেখ্য, ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট তৎকালিন বিরোধী দলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাতক্ষীরায় আসেন কলারোয়ার এক মুক্তিযোদ্ধার ধর্ষিতা স্ত্রীকে দেখতে। তিনি সদর হাসপাতালে ওই ধর্ষিতাকে দেখে মাগুরা ফিরে যাবার পথে কলারোয়ায় সন্ত্রাসীদের হামলার শিকার হন। এতে শেখ হাসিনা অক্ষত থাকলেও তার সফরসঙ্গী ফাতেমা জাহান সাথী, জোবায়দুল হক রাসেল, প্রকৌশলী শেখ মুজিবর রহমান, শহিদুল হক জীবন, আবদুল মতিনসহ অনেকেই আহত হন। ভাংচুর করা হয় গাড়ী বহরে।
এ ঘটনায় কলারোয়ার মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার (প্রয়াত) মোঃ মোসলেমউদ্দিন ২৭ জনকে আসামী করে একটি মামলা করেন। এ মামলা থানায় রেকর্ড না হওয়ায় তিনি নালিশী আদালত সাতক্ষীরায় মামলাটি করেন। পরবর্তীতে এ মামলা খারিজ হয়ে গেলে ২০১৪ সালের ১৫ অক্টোবর ফের মামলাটি পুনরুজ্জীবিত হয়।
তদন্তকারী কর্মকর্তা সাবেক সাংসদ হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অবিযোগপত্র দাখিল করেন। পরবর্তীতে মামলাটি ২০১৭ সালে আবারো উচ্চ আদালতে স্থগিত হয়। এরপর চলতি বছরের ২৭ জানুয়ারি যুক্তিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়। ২০ জন সাক্ষী, চারজন সাফাই সাক্ষী ও মামলার নথি পর্যালোচনা শেষে ৪ ফেব্রæয়ারি জেলা বিএনপি’র সাবেক সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলামসহ ৫০জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়।
এর মধ্যে বর্তমানে ৩৭ জন কারাগারে ও ১২জন পলাতক রয়েছেন। কারাগারে থাকা আসামীরা সাতক্ষীরা মুখ্য বিচারিক হাকিম মোঃ হুময়ায়ুন কবীরের আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল মামলা করেন উচ্চ আদালতে। মহামান্য উচ্চ আদালত আগামি ২৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ওই চারটি আপিল মামলা নিষ্পত্তির জন্য সংশ্লিষ্ট জেলা ও দায়রা জজকে নির্দেশ দেন।
এছাড়া, কলারায়ায় শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলার ঘটনায় অস্ত্র ও বিষ্ফোরক দ্রব্য আইনে আরো দু’টি মামলার (এসটিসি ২০৭/১৫ ও এসটিসি ২০৮/১৫) নথি উচ্চ আদালত থেকে ফেরৎ না আসায় বিচার কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে।
রাষ্ট্রপক্ষে আপিল মামলা পরিচালনা করেন, জজ কোর্টের পিপি এডভোকেট আব্দুল লতিফ।
আপীলকারিদের পক্ষে ছিলেন, এডভোকট আব্দুল মজিদ(২)। তিনি বলেন, এ রায়ে তারা খুশী হতে পারেননি। আদেশের পূর্ণাঙ্গ কপি পাওয়ার পর পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন