রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নিবন্ধ

ব্যক্তির গোপনীয়তা

অ্যাডভোকেট সিরাজ প্রামানিক | প্রকাশের সময় : ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:০২ এএম

আমাদের সর্বোচ্চ আইনগ্রন্থ সংবিধান একজন নাগরিকের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষা করার নিশ্চয়তা দিলেও সেটি উপেক্ষিত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। টেলিফোনে আড়ি পাতা, কারো ফোনালাপ পর্যবেক্ষণ ও রেকর্ড করে তা প্রকাশ করার ঘটনা রীতিরকম আইনবিরোধী। ব্যক্তি, রাজনীতিক ও সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের কারোরই গোপনীয়তার অধিকার রক্ষিত হচ্ছে না। ফেসবুকেও ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। অথচ, এ অপরাধের জন্য দুই বছর কারাদন্ড এবং পাঁচ কোটি টাকা অর্থদন্ডের বিধান রয়েছে।

দেশে ফোনকলে আড়ি পাতা এবং তা প্রকাশ ২০০৬ সালের আগ পর্যন্ত সবার জন্যই নিষিদ্ধ ছিল। ২০০৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে টেলিযোগাযোগ আইন সংশোধন করে এর ৭১ ও ৯৭ ক ধারায় রাষ্ট্রের নিরাপত্তা ও জনশৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে গোয়েন্দা সংস্থা, জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা, তদন্তকারী সংস্থা বা আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থার জন্য এ কাজের বৈধতা দেওয়া হয়। আইন অনুসারে এসব কাজের জন্য সংস্থাগুলোক কর্তৃপক্ষ হিসেবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী অথবা প্রতিমন্ত্রীর অনুমতি নিতে হবে।

ভারতের সুপ্রিম কোর্ট আড়ি পাতা বিষয়ে এক রায়ে ‘আড়ি পাতা ব্যক্তির গোপনীয়তায় একটি মারাত্মক আগ্রাসন’ উল্লেখ করে বলেছেন, ‘স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় খেয়াল-খুশিমাফিক আড়ি পাতার অনুমতি দিতে পারবে না। ১৯৯৬ সালে পিইউসিএল বনাম ভারত মামলায় বিচারপতি কুলদীপ সিং ও এস সগির আহমেদের মাইলফলক ওই রায়ে বলা আছে, কোনো রেকর্ডের কতটি অনুলিপি হবে, কতটুকুর ট্রান্সক্রিপশন হবে, কে কে দেখতে পাবেন, সেসব প্রাথমিক অনুমতির আদেশেই নির্দিষ্ট করতে হবে।

জাতিসংঘের নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক ঘোষণার ১৭ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তির নিজস্ব গোপনীয়, পরিবার, বাড়ি ও অনুরূপ বিষয়কে অযৌক্তিক বা বেআইনি হস্তক্ষেপের লক্ষ্যবস্তু বানানো যাবে না, তেমনি তার সুনাম ও সম্মানের ওপর বেআইনি আঘাত করা যাবে না। আমাদের সংবিধানের ৪৩ অনুচ্ছেদ অনুসারে প্রত্যেক নাগরিকেরই চিঠিপত্রের ও যোগাযোগের অন্যান্য উপায়ের গোপনীয়তা রক্ষার অধিকার রয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে ব্যক্তির গোপনীয়তার বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ কোনো আইন নেই। বর্তমানে যেসব আইন রয়েছে এর মধ্যেই গোপনীয়তা সম্পর্কিত বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত আছে। এছাড়া তথ্য অধিকার আইনে ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তা বিষয়ে কয়েকটি অনুচ্ছেদ রয়েছে। যোগাযোগের গোপনীয়তার মধ্যে রয়েছে চিঠি, টেলিফোন, ই-মেইলসহ যোগাযোগের সব ধরনের মাধ্যমের গোপনীয়তা ও নিরাপত্তা রক্ষা। ব্যক্তির গোপনীয়তার ক্ষেত্রে বাসস্থান, কর্মক্ষেত্র বা জনসমাগম স্থান প্রভৃতি জায়গায় অন্যের অবৈধ অনুপ্রবেশকে সীমাবদ্ধ করাও ব্যক্তির গোপনীয়তার অন্তর্ভুক্ত। যেমন তল্লাশি, ভিডিও নজরদারি, পরিচয়পত্র যাচাই ইত্যাদি

মোবাইল ফোনের মাধ্যমে নারীদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা আজ হুমকির সম্মুখীন। এর মাধ্যমে নারীদের উত্তক্ত্য করা ও তাদের অগোচরে প্রতারণার সুযোগে অশ্লীল ছবি ও ভিডিওচিত্র ইন্টারনেট ও মোবাইল ফোনে ছড়িয়ে দেওয়ার মতো ঘটনা অহরহ ঘটছে। ব্যক্তিগত তথ্য কখন, কোথায়, কেন, কীভাবে এবং কী পরিমাণে ব্যবহার করা বা প্রয়োগ করা হচ্ছে বা হয়েছে তা দেখার, জানার এবং জিজ্ঞাসা করার আইনি অধিকার ব্যক্তির থাকা উচিত। কারণ, নজরদারি বাকস্বাধীনতা, চিন্তার স্বাধীনতা, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় স্বাধীনতা খর্ব করে। সমাজবিজ্ঞানীরা নজরদারিকে একটি সামাজিক সমস্যা হিসেবেও চিহ্নিত করেছেন।
লেখক: বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী, আইনগ্রন্থ প্রণেতা ও আইন গবেষক।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (2)
মোঃ রাজিব হোসেন ২৪ ডিসেম্বর, ২০২১, ৭:০৮ এএম says : 0
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম) আসসালামু আলাইকুম বরাবর,মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার বিষয় কর্ম সংস্থানের জন্য আবেদন।নিবেদন,আমার বাবা মারা জান সাত বছর হইছে।আমার দুটো বোন আর একটা ছোট আমি সবার বড় ভাই এতো বছর দরে আমি সংসার দেখছি পাঁচ মাস আগে আমার ছোট্ট বোন বিবাহ দিয়েছি সেই বিবাহতে দুটো লোন আনছি একটা থেকে(৪৫,০০০০)হাজার টাকা আর একটা থেকে (৫০,০০০০)হাজার টাকা আমি একটা মটর সাইকেল চালোক বাবা মারা জাওয়ার পরে টাকার জন্য পরা লেখটাও করতে পারিনি দশম শ্রেনি প্রজনতো পরেছি।এখন কিস্তি দিবো নাকি সংসার চালাবো আমার একটা ছয় মাসের ছেলে আছে আমার মা বিধবা পাতার নামটার জন্য আমি আমাদের উপজেলা চেয়ারম্যানের কাছে গিয়ে ছিলাম তার পর সে সাইন দেওয়ার পরে সেটা মেম্বারের কাছে জমা দিলাম দুই বছর হয়ে গেলো তার পর মা মহিলা মেব্বারের কাছে যায় বিধবা পাতার নামের জন্য সে মার কাচ থেকে দুইহাজার টাকা খাইলো তাও দিলো না। আমি পাঁচ বছর দরে সংসার দেখেছি আমি আর পারছি না।মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি বলেন আমি কি করবো কিস্তি দিবো নাকি সংসার চালাবো।ছয় মাসের বাচ্চাটার জন্য মাসে দুটো দুধ যায়। তার পর ছোট, ভাই, বোন, মা, ইস্ত্রি, আমি আর করবো কী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে একটা কিছু করে দেন।নয়তো আমার মরন ছারা কোনো উপায় থাকবে না।আমি আর পারছি না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমার জন্য একটু কিছু করেন। আমার বাড়ি বরিশাল। থানা, বাউফল,জিলা,পটুয়াখালী। ইতি,রাজিব হোসেন।
Total Reply(0)
মোঃ শামীম মিয়া ৩০ জানুয়ারি, ২০২২, ১০:৩৯ পিএম says : 0
গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের একমাএ সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা। আমি যখন ২০০৮ সালে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ি তখন হাচু ম্যাডামকে দেখে ভেবেছিলাম যে তিনিই হবে এই রাষ্ট্র পরিচালনার দর্পন স্বরু। সেই ভাবাটাই আমার আজ সফলতার চাবি কাটে।আমি আমার ছাএ জীবন থেকে দেখি আমার এই ম্যাডাম যিনি হলেন Mother of Charity, Mother of humanity,উপাধি প্রাপ্ত ২০০৮সাল থেকে ক্ষমতায় পুনরায় আসার পর থেকে বাংলাদেশের প্রত্যেকটা সেক্টর আজ উন্নত বাংলাদেশ আজ পিছিয়ে নেই ক্ষুধা মুক্ত দারিদ্র মুক্ত নিরক্ষতা মুক্ত বাংলাদে। আমি আমার ছোটোবেলা থেকে দেখেছি যে আমার পরিবারের সকলের রক্তে মাংসে আওয়ামীলীগ এইদলটি খুবই জড়িত। আমার দাদা ছিলেন বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের সামান্য বেতনের কর্মচারী। তিনি একজন সরকারী চাকুজীবি থাকা সত্বেও আমরা আওয়ামীলীগের কাছ থেকে বিশেষ সুযোগ সুবিধা ভোগ করতে পারবো কি এই প্রশ্নটা রইল আমার ম্যাডাম যিনি বাংলাদেশের বর্তমান সরকার প্রধান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। মুক্তিযোদ্ধার নাতি নাতমী যদি বিশেষ সু্যোগ সুবিধা ভোগ করতে পারে আমরা কেনো পার বো না? আমার দাদাতো বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পূর্বেই পানি উন্নয়ন বোর্ডে সামান্য বেতনে চাকুরী করেছেন।তাই আমরা বিনীত ভাবে বলছি যে আমাদের বিষয় দেখেন।
Total Reply(0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন