শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

ইসলামী জীবন

রাসূল (সা.) এর চিকিৎসা পদ্ধতি

মুসলিমা মনি | প্রকাশের সময় : ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:১০ এএম

অসুস্থা আমাদের জীবনের একটি অংশ।করোনা মহামারীর এহেন পরিস্থিতি তে আমাদের জেনে রাখা উচিত সমগ্র মানব জাতির রহমত হিসেবে প্রেরিত হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর চিকিৎসা পদ্ধতি কেমন ছিল?আমাদের জ্বর হলে কি খাবার খাওয়া উচিত? তা রাসূল (সা.) এর হাদিস থেকে আমরা পাই।নিম্নে রাসূল (সা.)এর চিকিৎসা পদ্ধতির কিছু উপকরণ দেওয়া হলো।
দুধ ও ময়দার মিশ্রণ : আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত : রাসূলুল্লাহ (সা.) এর পরিবারের লোকেদের জ্বর হলে, তিনি দুধ ও ময়দা সহযোগে তরল পথ্য তৈরি করার নির্দেশ দিতেন। আয়েশা (রা.) বলেন, তিনি বলতেনঃ এটা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত মনে শক্তি যোগায় এবং রোগীর মনের ক্লেশ ও দুঃখ দূর করে, যেমন তোমাদের কোন নারী পানি দ্বারা তার চেহারার ময়লা দূর করে। (সুনানে ইবনে মাজাহ : ৩৪৪৫)।
এছাড়াও আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত : নবী (সা.) আরো বলেছেন : অপ্রিয় কিন্তু উপকারী বস্তুটি তোমরা অবশ্যই গ্রহণ করবে। তা হলো তালবীনা অর্থাৎ হাসা (দুধ ও ময়দা সহযোগে প্রস্তুত তরল পথ্য)। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) এর পরিবারের কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসা-এর পাতিল চুলার উপর থাকতো, যতক্ষণ না রোগী সুস্থ হতো অথবা মারা যেত। (সুনানে ইবনে মাজাহ : ৩৪৪৬)।
কালোজিরার ব্যবহার : আবু হুরায়রাহ (রা.) থেকে বর্ণিত : রাসূলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছেন : কালিজিরায় মৃত্যু ব্যতীত সব রোগের নিরাময় আছে। ‘আস-সাম’ অর্থ মৃত্যু, হাব্বাতুস সাওদা অর্থ কালিজিরা।(সুনানে ইবনে মাজাহ : ৩৪৪৭)।
খালিদ বিন সা’দ (রা.) থেকে বর্ণিত : আমরা রওয়ানা হলাম এবং গালিব বিন আবজারও আমাদের সাথে ছিলেন। পথিমধ্যে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লেন। তিনি অসুস্থ থাকতেই আমরা মদিনায় পৌছে গেলাম। ইবনু আবু আতীক (রা.) তাকে দেখতে এলেন। তিনি আমাদের বললেন, তোমরা এই কালো দানাগুলো ব্যবহার করবে। তা থেকে পাঁচটি বা সাতটি দানা নিয়ে সেগুলো পিষে তেলের সাথে মিশিয়ে নাকের এপাশে ওপাশে অর্থাৎ উভয় ছিদ্রপথে ফোঁটা ফোঁটা করে দাও। কেননা আয়েশা (রা.) তাদের নিকট হাদিস বর্ণনা করেছেন যে, তিনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছেনঃ এই কালো দানা ‘সাম’ ব্যতীত সব রোগের ঔষধ। আমি জিজ্ঞেস করলাম, ‘সাম’ কী? তিনি বলেনঃ মৃত্যু। (সুনানে ইবনে মাজাহ : ৩৪৪৯)।
মধু ব্যবহার : আবু হুরায়রাহ (রা.) থেকে বর্ণিত : রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন : কোন ব্যক্তি প্রতি মাসে তিন দিন ভোরবেলা মধু চেটে চেটে খেলে সে মারাত্মক কোন বিপদে আক্রান্ত হবে না। (সুনানে ইবনে মাজাহ : ৩৪৫০)। রাসূলুল্লাহ (সা.) আরো বলেছেন : দু’ আরোগ্য দানকারী বস্তুকে অবশ্যই তোমাদের গ্রহণ করা উচিতঃ মধু ও কুরআন মজীদ। (সুনানে ইবনে মাজাহ : ৩৪৫২)।
ছত্রাক ও আজওয়া খেজুরের ব্যবহার : আবু সাঈদ ও জাবির (রা.) থেকে বর্ণিত : তারা বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন : ছত্রাক হলো ‘মান্ন’ নামক আসমানী খাদ্যের অন্তর্ভুক্ত এবং তার পানি চক্ষুরোগের নিরাময়য়। ‘আজওয়া’ হলো জান্নাতের খেজুর এবং তা উন্মাদনার প্রতিষেধক। (সুনানে ইবনে মাজাহ : ৩৪৫৩)।
নামায রোগমুক্ত করে : আবূ হুরায়রাহ (রা.) থেকে বর্ণিত : তিনি বলেন, নবী (সা.) হিজরত করলেন, আমিও হিজরত করলাম। আমি নামায পড়ার পর তাঁর পাশে বসলাম। নবী (সা.) আমার দিকে দৃষ্টিপাত করে বলেনঃ তুমি উঠে দাঁড়িয়ে নামায পড়ো। কেননা সলাতের মধ্যে রোগমুক্তি আছে। (সুনানে ইবনে মাজাহ : ৩৪৫৮)।
পরিশেষে, রোগ-ব্যাধি মহান আল্লাহ তা’আলার পক্ষ থেকে নিয়ামত।তাই আমাদের উচিত ধৈর্যের পরিচয় দেওয়া। আমারা যেন জ্বর কে গালি না দেই। কেননা রাসুল (সা.) বলেন, ‘জ্বরকে মন্দ বলো না। এটি বনি আদমের গুনাহকে এভাবে দূর করে দেয়, যেভাবে আগুন শুকনো লাকড়িকে জ্বালিয়ে শেষ করে দেয়। (মুসলিম, হাদিস : ২৫৭৫)।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
NADIM TALUKDER ২৩ জানুয়ারি, ২০২৩, ১:২২ পিএম says : 0
এটি পড়ে আমি যা বুঝতে পারলাম যে তার প্রতিষেধক আছে কালোজিরে। কিন্তু কোন ব্যক্তি অসুস্থ হলে এটা খাওয়ার পর কি কোন ভাবে সুস্থ হতে পারবে। ঔষধ বাদ।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন