বিষয় : বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়
আছিয়া কামাল
সিনিয়র শিক্ষক (সামাজিক বিজ্ঞান)
ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজ
অধ্যায় : বাংলাদেশের অর্থনীতি
দরিদ্র গিয়াস উদ্দীনের দুই ছেলের নাম কামাল ও জামাল। কামাল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে খেলাপড়া শেষ করে একটি সিরামিক কোম্পানিতে চাকরি নেয়। অন্যদিকে জামাল কাজের সন্ধানে মালয়েশিয়া যায়। মালয়েশিয়া থেকে জামালের পাঠানো টাকায় যেমন গিয়াস উদ্দীনের পরিবারে সচ্ছলতা আসে, তেমনি কিছু সঞ্চয় হচ্ছে। সাত বছর পর জামাল বড় অঙ্কের টাকা নিয়ে দেশে ফিরে আসে এবং দুই ভাই একত্রে এবি সিরামিক কারখানা নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলে। এতে এলাকার অনেকের কর্মসংস্থান হয়।
ক) শিক্ষা কোন ধরনের অধিকার?
খ) মানব সম্পদ বলতে কী বোঝায়?
গ) মালয়েশিয়া থেকে জামালের পাঠানো অর্থের ধরন ব্যাখ্যা কর।
ঘ) কামাল ও জামালের সর্বশেষ কর্মপ্রয়াসের অর্থনৈতিক গুরুত্ব বিশ্লেষণ কর।
ক) উত্তর
শিল্প মানুষের জন্মগত অধিকার।
খ) উত্তর
মানুষ তখনই সমাজ বা রাষ্ট্রের শক্তিতে পরিণত হয় যখন সে সমাজ বা রাষ্ট্রের জন্য কিছু করতে পারে। কেউ শারীরিক শ্রম দিয়ে সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য সম্পদ তৈরি করে কিংবা তাতে সহায়তা করে।
যারা শ্রম বা মেধা দিয়ে দেশের কৃষি, শিল্প, সেবাসহ যে কোনো খাতে অবদান রাখে তাদেরকে মানব সম্পদ বলা হয়। অদক্ষ মানুষকে শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ইত্যাদির সাহায্যে যখন দক্ষ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা হয় তখন তারা হয় মানব সম্পদ।
গ) উত্তর
উদ্দীপকে মালয়েশিয়া থেকে জামালের পাঠানোর অর্থের ধরনকে অর্থনীতির ভাষায় বলে রেমিটেন্স। নিচে জামালের টাকা পাঠানোর ধরন সম্পর্কে আলোচনা করা হলোÑ
জামালের মতো বাংলাদেশের লক্ষ লক্ষ মানুষ বর্তমানে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে কাজ করছে। প্রবাসে কর্মরত নাগরিকের স্বদেশ প্রেরিত অর্থকে রেমিটেন্স বলে। বিদেশে কর্তরত শ্রমিক, কর্মচারী ও পেশাজীবীরা তাদের অর্জিত অর্থের একটা অংশ ব্যাংকের মাধ্যমে পরিবারের কাছে পাঠায়। এই অর্থ কেবল তাদের পরিবারের প্রয়োজনই মেটায় না কিংবা তাদের জীবনযাত্রার মান বাড়াচ্ছে না, নানা ক্ষেত্রে বিনিয়োগ হয়ে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
ঘ) উত্তর
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে শিল্পের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কামাল ও জামালের কর্মপ্রয়াসের অর্থনৈতিক গুরুত্ব সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হলোÑ কামাল উচ্চশিক্ষা শেষ করে একটি সিরামিক কোম্পানিতে চাকরি করে এ বিষয় দক্ষতা অর্জন করে। কামালের ভাই বিদেশ গিয়ে বড় অংকের টাকা আয় করে সাত বছর পরে দেশে ফিরে আসে। তারা দুই ভাই মিলে সিরামিক কারখানা গড়ে তোলে। কামাল ও জামাল যে সিরামিক কারখানা গড়ে তোলে তাতে অনেকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়। অর্থনীতির ভাষায় তাদের এ কর্মপ্রয়াস ক্ষুদ্রশিল্প নামে পরিচিত। কেননা ক্ষুদ্রশিল্পে স্বল্প মূলধন, কমসংখ্যক শ্রমিক ও ছোটখাটো যন্ত্রপাতি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। একে অনেক সময় মাঝারি শিল্পও বলা হয়ে থাকে উৎপাদনের তারতম্যের কারণে। এ ধরনের প্রতিষ্ঠান অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা রাখে। কৃষি পেশায় নির্ভরশীলতা হ্রাস, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, সম্পদের সুষম বণ্টনের ক্ষেত্রে ক্ষুদ্রশিল্পের গুরুত্ব অধিক।
এ ছাড়াও ক্ষুদ্রশিল্প জীবনযাত্রার মনোন্নয়ন স্বল্প মূলধনের সঠিক ব্যবহার কাঁচামালের সদ্ব্যবহার নিশ্চিত করে। সুষম বণ্টন, রুচিমাফিক উৎপাদন, মুদ্রাস্ফীতি হ্রাস, বৃহৎ শিল্পের পরিপূরক, পরিবেশের ভারসাম্য, উপজাত দ্রব্যের সঠিক ব্যবহার ও গ্রামীণ অর্থনীতির বিকাশ ঘটাতে কামাল ও জামালের কর্মপ্রয়াসের অর্থনীতির গুরুত্ব অপরিসীম।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন