শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

ক্যারিয়ার

জেএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি

প্রকাশের সময় : ২৩ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

বিষয় : বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়

আছিয়া কামাল
সিনিয়র শিক্ষক (সামাজিক বিজ্ঞান)
ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজ
অধ্যায় : বাংলাদেশের দুর্যোগ
১। বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান ও উন্নয়নশীল দেশ। এদেশের জমির উর্বরতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার করা হয়। এ ছাড়া নতুন কলকারখানা ও গাড়ির কালো ধোঁয়া বাতাসে নির্গত হয়। আবিদা সুলতানা বললেন, রাসায়নিক সার কলকারখানা ও গাড়ির কালো ধোঁয়া বায়ুম-লের ওজন স্তরকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এর মাধ্যমে বৃদ্ধি পাচ্ছে বৈশ্বিক উষ্ণতা এবং পরিবর্তিত হচ্ছে বাংলাদেশের আবহাওয়া। তিনি আরও বললেন, বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশের পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিচ্ছে যার প্রভাব অত্যন্ত ভয়ঙ্কর।
ক) মনুষ্য সৃষ্ট যে কোনো একটি গ্যাসের নাম লেখ।
খ) বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রধান কারণ ব্যাখ্যা কর।
গ) বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি ও বাংলাদেশের জলবায়ু পরিবর্তনের যে কারণ আবিদা সুলতানার বক্তব্যে আলোকপাত করা হয়েছে, তা বর্ণনা কর।
ঘ) বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশের ওপর যে বিরূপ প্রভাব পড়ছে তা আবিদা সুলতানার বক্তব্যের আলোকে পর্যালোচনা কর।
ক) উত্তর :
মনুষ্য সৃষ্ট একটি গ্যাসের নাম হলো সিএফসি (ক্লোরোফ্লোরো কার্বন)
খ) উত্তর :
বায়ুর মূল উপাদান নাইট্রোজেন ও অক্সিজেন। বায়ুতে নগণ্য পরিমাণে থাকে কার্বন-ডাই-অক্সাইড। মিথেন ও নাইট্রাস অক্সাইড। আরও আছে জলীয়বাষ্প ও ওজন গ্যাস। বায়ুম-লের এই গৌণ গ্যাসগুলোই গ্রিন হাউস গ্যাস। প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট গ্যাস ছাড়াও মনুষ্যসৃষ্ট গ্যাস সিএফসি ও এইচসিএফসি (হাইড্রোক্লোরোফ্লোরো কার্বন) হ্যালন ইত্যাদি গ্যাস ও গ্রিন হাউস গ্যাস।
উপযুক্ত গ্যাসগুলোর মধ্যে গত শতাব্দীতে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ বেড়েছে শতকরা ২৫ ভাগ, নাইট্রাস অক্সাইড শতকরা ১৯ ভাগ এবং মিথেনের পরিমাণ ১০০ ভাগ যা বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রধান কারণ।
গ) উত্তর :
বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ। বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধিতে বাংলাদেশের মানুষের অসচেতনতা ও অপরিকল্পিত কার্যাবলিও অনেকাংশে দায়ী।
প্রশ্ন অনুসারে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি ও বাংলাদেশের জলবায়ু পরিবর্তনের যে কারণ আবিদা সুলতানার বক্তব্যে আলোকপাত করা হয়েছে তা নিচে বর্ণনা করা হলোÑ বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ। অধিক খাদ্যশস্য উৎপাদন ও জমির উর্বরতা বৃদ্ধির জন্য কৃষিতে রাসায়নিক সার ও বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক ব্যবহার করে থাকে। কৃষিতে ব্যবহৃত এসব উপাদান বায়ুম-লের ওজন স্তরকে ক্ষতি করে। এ ছাড়া কলকারখানা ও গাড়ির কালো ধোঁয়া বায়ুম-লে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। যার মাধ্যমে বায়ুম-লের ওজন স্তর ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। রাসায়নিক সার, কীটনাশক, কলকারখানা ও গাড়ির কালো ধোঁয়া বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি ও বাংলাদেশের জলবায়ু পরিবর্তনের অন্যতম কারণ।
পরিশেষে বলা যায়, বাংলাদেশের জনগণের অসচেতনতা, অজ্ঞতার কারণে জমিতে রাসায়নিক সার, কীটনাশক ব্যবহার ও কলকারখানা এবং গাড়ির কালো ধোঁয়া বাতাসে নির্গত হওয়ার কারণে ওজন স্তর ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং এতে বৈশ্বিক উষ্ণয়নের সাথে সাথে বাংলাদেশের জলবায়ুরও পরিবর্তন হচ্ছে।
ঘ) উত্তর :
বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশের ওপর যে বিরূপ প্রভাব পড়ছে তা আবিদা সুলতানার বক্তব্যের আলোকে নিচে পর্যালোচনা করা হলোÑ
বৈশ্বিক উষ্ণতার কারণে সমুদ্রের পানির উচ্চতা বেড়ে যাওয়ার কারণে উপকূলবর্তী অঞ্চলসমূহে অবাধে সমুদ্রের পানি ঢুকে পড়বে। সমুদ্রের লবণাক্ত পানির প্রভাবে সবুজ গাছপালা, মৎস্য খামার, শস্য খেতের ক্ষতি হবে। ইতোমধ্যেই এর প্রভাব লক্ষ করা যাচ্ছে। বাংলাদেশের উপকূলবর্তী অঞ্চলসমূহে ম্যানগ্রোভ ফরেস্টের ক্ষতি হচ্ছে। সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া উপকূলীয় কৃষি আবাদি জমিতে লবণাক্ততা বৃদ্ধি পেয়ে জমির উর্বরতা শক্তি কমে যাচ্ছে। দেখা যাচ্ছে, বর্তমানে ওইসব স্থানে কৃষির উৎপাদন কমে গেছে। মিঠা পানির মাছের প্রজাতি হারিয়ে যাচ্ছে। ধ্বংস হচ্ছে গাছপালা ও জলাশয়। এর প্রভাব মানুষের জীবন-জীবিকায় পড়ছে। সমুদ্র উপকূলবর্তী মানুষ জীবিকার টানে শহরমুখী হচ্ছে। পেশা পরিবর্তন করছে। তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। যেমন- বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে ইতোমধ্যে মরুকরণ শুরু হয়ে গেছে। এর ফলে বন্যা, খরা, লবণাক্ততা ইত্যাদি কারণে গবাদিপশুর খাদ্যের অভাব হবে এবং বাড়বে বিভিন্ন ধরনের রোগব্যাধি।
পরিশেষে বলা যায়, বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণেই মূলত জলবায়ুর পরিবর্তন ঘটে, যার প্রভাব বিশ্বে সুদূরপ্রসারী। তবে বাংলাদেশে এর প্রভাব জটিল করার জন্য সহ¯্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার টেকসই পরিবেশ নিশ্চিতকরণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Mostakin Islam Sunny. ২০ আগস্ট, ২০২১, ১১:২৯ এএম says : 0
Good????????????
Total Reply(0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন