টাউট-বাটপার, দালাল বা প্রতারকদের দৌরাত্ম নেই। ইচ্ছে করলেই কেউ আইনজীবী, আইনজীবীর সহকারী বা মুহুরি সাজতে পারেন না। শিক্ষানবিশ আইনজীবীদের জন্য আইডি কার্ড ও লাল টাই এবং মুহুরিদের জন্য রয়েছে পৃথক পোশাক। নিয়ম-নীতি সাঁটানো আছে আদালতের বিভিন্নস্থানে। বিগত কয়েক বছরে বার এসোসিয়েশনের ব্যাংক হিসাবে জমা হয়েছে কোটি কোটি টাকা এবং বার এসোসিয়েশনের টাকা না নিয়ে হচ্ছে আটতলা নতুন ডিজিটাল বার ভবন, ইতোমধ্যে দু’তলা সম্পন্ন হয়েছে। খোলা জায়গায় বসে আদালতের সৌন্দর্য নষ্ট করার সুযোগ নেই। এক কথায় পুরোপুরি পাল্টে গেছে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালত এলাকার চিত্র। এই নিয়ম হতে পারে দেশের অন্যান্য আদালত পাড়ার জন্য রোল মডেল। এমনকি বিগত কয়েক বছরে নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির ব্যাপক উন্নয়ন এবং অধিকাংশ সমস্যার সমাধান হয়েছে। যা সম্ভব হয়েছে নারায়ণগঞ্জ বার এসোসিয়েশনের সাবেক দুই বারের সভাপতি অ্যাড. হাসান ফেরদৌস জুয়েল ও সাবেক সম্পাদক ও বর্তমান সভাপতি অ্যাড. মোহাম্মদ মহসিন মিয়ার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায়।
আইনজীবীরা জানান, নারায়ণগঞ্জ আদালতে আইনজীবী, মুহুরি, পেশকার, পিয়ন এবং সেরেস্তাদার ছাড়াও আদালত এলাকায় সক্রিয় ছিল একটি প্রতারক ও দালাল চক্র। যারা নিজেদেরকে আইনজীবী পরিচয়ে মামলা গ্রহণ করে বিচারপ্রার্থীদের নিঃস্ব করে দিতেন। এমনকি, এক মামলার জন্য চার-পাঁচ জন আইনজীবী ওকালত নামা জমা দিতেন। আদালতে আসা ব্যক্তিরা যেন প্রতারিত না হয় সে জন্য এক আইনজীবী থেকে অন্য আইনজীবীর নিকট মামলা নিতে এনওসি ও ওকালত নামায় আইনজীবীর আইডি নাম্বার, আদালতের কর্মচারীদের পরিচয়পত্র এবং শিক্ষানবিশদের জন্য লাল টাই বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
এমন কি পূর্বে আদালতে ভুয়া ও জাল কোর্ট ফি, নন-জুডিসিয়াল স্ট্যাম্প, জুডিসিয়াল স্ট্যাম্প বিক্রি করতো বিচারপ্রার্থীদের কাছে। ফলে সরকার বিপুল পরিমান রাজস্ব হারাতো, তাও বন্ধ হয়েছে এখন।
আইনজীবীরা জানান, মাত্র ক’বছর আগেও সকল আইনজীবীরা গাদাগাদি করে গারদ, জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সামনে টেবিল-চেয়ার নিয়ে বসায় আদালতের পরিবেশই নষ্ট হতো, আইনজীবীরাও হতো অবমূল্যায়িত। নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি হাসান ফেরদৌস জুয়েলের হাত ধরেই এ পরিবর্তনের সূচনা হয়। আইনজীবীদের অন্যতম সমস্যা দুই কোর্ট একসাথে রাখার ব্যাপারেও কার্যকরি ভূমিকা রেখেছেন। সাবেক সভাপতি জুয়েল ও বর্তমান সভাপতি মোহাম্মদ মহসিন মিয়া নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির উন্নয়নের সকল রেকর্ড ভেঙেছেন।
পূর্বে আইনজীবীদের মৃত্যু হলে বেনাভোলেন্ট ফান্ড থেকে নামমাত্র কিছু অর্থ সহায়তা করা হতো। তারা দায়িত্ব নেয়ার পর কোন আইনজীবী’র মৃত্যু হলে তার পরিবারকে ১৫ থেকে ২৫ লাখ টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেয়া হচ্ছে। একই সাথে এই অর্থের পরিমান দিন দিন বাড়তে থাকবে। আইনজীবীদের জন্য ডিপিএস হয়েছে, ডিপিএসে জমাকৃত টাকার সমপরিমাণ টাকা দিবে বার এসোসিয়েশন। আইনজীবীদের জন্য স্মার্ট আইডি কার্ড ও ডাইরেকটরি ও ওয়েবসাইডে তৈরি করা হয়েছে অ্যাড. হাসান ফেরদৌস জুয়েল ও মহসিন মিয়ার মেয়াদে। ডাইরেকটরি ও ওয়েবসাইডে সকল আইনজীবীদের ছবি, মোবাইল নাম্বারসহ সংক্ষিপ্ত পরিচয় উল্লেখ রয়েছে। ফলে বিচারপ্রার্থীরা আইনজীবীকে মুহূর্তেই খুুঁজে পাবেন মোবাইল কিংবা কম্পিউটারে সার্চ করে।
এক কথায় হাসান ফেরদৌস জুয়েল ও মোহাম্মদ মহসিন মিয়ার উন্নয়ন হতে পারে অন্যন্য বার এসোসিয়েশনের কাছে দৃষ্টান্ত।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন