মাগুরা জেলা সংবাদদাতা
মাগুরায় মা ও তার পরকীয়ার সাথীদের হাতে নিহত পিতা আরোজ আলী হত্যার দেখা সাক্ষী কিশোরিকন্যা তাসলিমা আসামিদের ভয়ে জীবন বাঁচাতে বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র পালিয়ে থাকতে বাধ্য হয়েছে। মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার রায়নগর গ্রামে স্ত্রী রোজিনা খাতুনের পরকীয়াকে কেন্দ্র করে গত ২০১৫ সালের ২৩ জুলাই গভীর রাতে রোজিনা ও তার নাগররা ঘুমন্ত অবস্থায় শ্বাসরোধ করে খুন করে তাসলিমার পিতা আরোজ আলীকে। নিহত আরোজ আলীর কিশোরিকন্যা তাসলিমা জানায়, তার মা রোজিনা খাতুন মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার রায়নগর গ্রামের সাইফুল, মন্টু এবং মাগুরা সদর উপজেলার বেঙ্গা বেরইল গ্রামের বেল্লালের সাথে দীর্ঘদিন ধরে পরকীয়ায় লিপ্ত ছিল। ইতোপূর্বে তাসলিমা ও নূপুর নামের দুই শিশুকন্যাকে ফেলে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। পরবর্তীতে বেল্লালের সাথে বিয়ে করে দীর্ঘ দেড় বছর ঘর-সংসার করে। নিহত আরোজ আলী দুটি শিশুকন্যার ভবিষ্যৎ চিন্তা করে রোজিনাকে নিজ বাড়িতে ফিরিয়ে আনে। কিন্তু বাড়িতে আসার পর আবার বেল্লাল, সাইফুল ও মন্টুর সাথে সুকৌশলে পরকীয়া চালাতে থাকে। এ ঘটনা নিয়ে পিতা আরোজ আলীর সাথে মা রোজিনা খাতুনের প্রায়ই ঝগড়া-বিবাদ চলত। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে মা রোজিনা তার প্রেমিকদের নিয়ে গত ২৩ জুলাই রাতে তার পিতা আরোজ আলীকে শ্বাসরোধে খুন করে পাশের নদীতে লাশ ফেলে দেয়। পরদিন ২৪ জুলাই পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ও রোজিনাকে গ্রেফতার করে। পরে আসামি সাইফুল ও বেলালকে গ্রেফতার করলে তারা ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। পুলিশ তদন্তশেষে এসব আসামির বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছে। বর্তমানে আসামি বেল্লাল, লিটন ও তাদের সহযোগী টিক্কা এ মামলার অন্যতম সাক্ষী আরোজ আলীর কন্যা তাসলিমা ও বোন মেরিনা খাতুনকে অপহরণ ও খুন গুমের হুমকি দিয়ে নানা চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছে বলে তাসলিমা অভিযোগ করে। তাসলিমাকে মোটরসাইকেলে জোর করে তুলে নেয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে বলেও সে জানায়। ফলে পরিবারটি চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছে। বাধ্য হয়ে শিশুকন্যা দুটি পাশের এক জেলায় তাদের ফুফুর বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। এ ঘটনার বর্ণনা দিয়ে মাগুরা আইনজীবী সমিতির সম্মেলন কক্ষে গত ১ অক্টোবর সকালে তাসলিমা সংবাদ সম্মেলন করে পিতা খুনের বিচার ও খুনিদের হাত থেকে তাদের নিরাপত্তা দাবি করেছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন