শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

সুউচ্চ ভবন-টাওয়ারে রেকি করেই দুর্ধর্ষ চুরি

সাতজনকে গ্রেফতার করেছে ডিবি

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:০০ এএম

রাজধানীর সুউচ্চ ভবনে চুরির পরিকল্পনা মোতাবেক প্রথমে নারী সদস্যকে দিয়ে টার্গেট করা অফিস, সুউচ্চ ভবন কিংবা টাওয়ার রেকি করানো হতো। এরপর সুযোগ বুঝে রাতের আঁধারে দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনা ঘটিয়ে সটকে পড়তো তারা। চক্রের সদস্যরা টার্গেট করা দোকান কিংবা অফিস থেকে নিরাপত্তা ও দ্রুত সটকে পড়ার উদ্দেশে শুধু নগদ টাকাই চুরি করত। অন্য কোনো মালামাল চুরি করত না। গত সোমবার ধারাবাহিক অভিযানে ডেমরা ও কুমিল্লা জেলার কান্দিরপাড় এলাকা থেকে সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতাররা হলো- মূলহোতা মো. জামাল উদ্দিন, শফিক ভূইয়া ওরফে বাছা, বাছার স্ত্রী মুক্তা আক্তার, জসিম উদ্দীন, কাদের কিবরিয়া ওরফে বাবু, মো. শাকিল ও আল আমিন। এ সময় তাদের কাছ থেকে চুরির কাজে ব্যবহৃত একটি হাতুড়ি, একটি লোহার রেঞ্জ, তিনটি হ্যাকস ব্লেড, একটি প্লায়ার্স, তিনটি স্ক্রু ড্রাইভার, ও ২০টি সিম কার্ড জব্দ করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান ডিবির পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মো. মাহবুব আলম।

তিনি বলেন, গত ১১ জুন ঢাকার উত্তরা পশ্চিম থানার প্যারাডাইস টাওয়ারের ৮ম তলায় গোল্ডেন টাচ ইমপোর্ট আইএনসি অফিসে চুরির ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় গত ১৩ সেপ্টেম্বর উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি মামলা হয়। ওই মামলার ছায়া তদন্তকালে ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা ও প্রযুক্তির সহায়তায় চুরির ঘটনায় অভিযুক্তদের শনাক্ত ও গ্রেফতার করে গোয়েন্দা উত্তরা জোনাল টিম। গ্রেফতারদের মধ্যে জামালের বিরুদ্ধে ১৪টি চুরির মামলা রয়েছে। তারা সবাই চট্টগ্রাম বন্দর থানা এলাকা কেন্দ্রিক চুরির ঘটনার সঙ্গে জড়িত। গত কয়েক বছরে তারা ঢাকায় চলে আসে। পরে ঢাকার সুউচ্চ ভবন, অফিস ও টাওয়ারে চুরিতে জড়ায় তারা।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেফতারকৃতরা রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সুউচ্চ টাওয়ারে অবস্থিত বিভিন্ন নামিদামি অফিসে প্রথমে চুরির টার্গেট করে। এ চোরচক্রের সদস্যরা প্রথমে খোলা থাকা অবস্থায় অফিস ও ভবন ২-৩ দিন ধরে রেকি করে চুরির কৌশল রপ্ত করে। এরপর সুযোগ বুঝে টার্গেট করা বন্ধ হয়ে যাওয়া অফিসের তালা, সিকিউরিটি লক, ডিজিটাল লক ও অফিস কক্ষের ড্রয়ার ভেঙে মূল্যবান মালামাল ও টাকা পয়সা চুরি করে সুকৌশলে বের হয়ে যায়।

তিনি আরো বলেন, শুধু ঢাকাতেই তাদের বিরুদ্ধে তদন্তাধীন সাতটি চুরির ঘটনায় সংশ্লিষ্টতার তথ্য পাওয়া গেছে। সেগুলো হচ্ছে- আদাবর টাওয়ারের ৪র্থ তলার এক্সপার্ট গ্রুপ, কাকরাইল নাসির উদ্দিন টাওয়ারের ১০ম তলায় আমিন গ্রুপে, গুলশান জব্বার টাওয়ারের ১৯তলায় এসিউর গ্রুপ, বাড্ডা রূপায়ন টাওয়ারের ৬ষ্ঠ তলায় অবস্থিত সফট লিংক কোম্পানি ও ৭ম তলায় অবস্থিত এক্সজিবল কোম্পানির অফিসে চুরির ঘটনা। ওই সব ঘটনায় ঘটনাস্থল থেকে সংগৃহীত সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনায় প্রমাণ মিলেছে। চক্রের কৌশল ও কার্যক্রম সম্পর্কে ডিবির যুগ্ম কমিশনার বলেন, গ্রেফতাররা চট্টগ্রাম বন্দরে চুরির সঙ্গে জড়িত ও হাতেখড়ি সেখানে। সেখানে তারা তিন-চার বছর ধরে চুরির সঙ্গে জড়িত ছিল। তারা চট্টগ্রাম থেকে করোনা পরিস্থিতিতে ঢাকায় আসে ও সুউচ্চ ভবন, মার্কেট, অফিস ও টাওয়ারে চুরি শুরু করে। যেসব অফিসে বা মার্কেটে সিসিটিভি ক্যামেরা নেই কিংবা থাকলেও মনিটরিং নেই সেসবই তারা টার্গেট করে। এজন্য উচিত মালিক বা ব্যবসায়ীদের সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা ও মনিটরিং নিশ্চিত করা। জিজ্ঞাসাবাদে চক্রের আরও কয়েকজন সদস্যের নাম জেনেছি। চক্র সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে গ্রেফতারদের রিমান্ড আবেদন করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন