বরগুনার পাথরঘাটায় একটি স্কুলের ৮ম শ্রেণির ছাত্রীর জোরপূর্বক আপত্তিকর ভিডিও মুঠোফোনে ধারণ করে ভিডিও শেয়ারিং এ্যাপ টিকটকে ছড়িয়ে দিয়েছে একই সহপাঠি বখাটে নাঈম। বখাটে নাঈম উপজেলার সদর ইউনিয়নের হাজিরখাল গ্রামের সৌদিপ্রবাসী সগির খানের ছেলে। সগীর খানের স্ত্রী ছেলে নাঈমকে নিয়ে পৌর শহরে ভাড়া বাসায় থাকেন।
ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী জানান, একই স্কুলের সহপাঠি নাঈম দীর্ঘদিন ধরে তাকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসার পাশাপাশি বিভিন্ন সময়ে পথেঘাটে উত্যক্ত করে আসছে। গত বুধবার স্কুল ছুটির পর ঐ ছাত্রীর স্কুলব্যাগ নিয়ে বাইরে বের হয়ে যায় নাঈম। শ্রেণিকক্ষ থেকে বের হয়ে সে নাঈমের কাছে ব্যাগ আনতে গেলে নাঈম জড়িয়ে ধরে চুমু খায়। এই দৃশ্য পাশ থেকে একই শ্রেণির আরেক বখাটে শিক্ষার্থী সবুজ গোপনে ভিডিও ধারণ করে। যা পরবর্তীতে ফেসবুকে ছেড়ে দেয় নাঈম।
ছাত্রী বলেন, ‘বিষয়টি লজ্জায় কাউকে জানাইনি। কিন্তু গত শুক্রবার সকালে আমার এক প্রতিবেশি ভিডিওটি আমাকে দেখালে বিষয়টি আমি মাকে জানাই।’
ছাত্রীর মা জানান, নাঈম তার মেয়েকে বিভিন্ন সময় মেয়েকে উত্যক্ত করে আসছে। এ নিয়ে এক বছর আগে নাঈমের মামা ইউসুফের কাছে নালিশ করেও কোন সমাধান পাইনি। এরপরে গত দুদিন আগে আমার মেয়েকে নিয়ে একটি আপত্তিকর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছে। এই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখার পর আমার মেয়েকে মারধরও করি। এরপর বিষয়টি হাড়িটানা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছে জানালে তিনি বিচার করবেন বলে আমাদের সন্ধ্যা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বলেন। প্রধান শিক্ষক নাঈমের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে ব্যর্থ হন।’
স্কুল ছাত্রীর মা আরো জানান, ‘আমার মেয়ের অসম্মানজনক ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ওই বখাটে নাঈম ছড়িয়ে দিয়েছে। আমি এই বিষয়টি নিয়ে আইনের আশ্রয় নিব। এছাড়া সমাজে মুখ দেখানোর উপায় নেই।’
এ প্রসঙ্গে হাড়িটানা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন বলেন, ছুটির পরে স্কুল গেটের বাইরে এ ধরনের একটি অপ্রীতিকর ঘটনা কথা শুনেছি। এই বিষয়ে নাঈমের পরিবারকে অবহিত করলে তারা নাঈমকে হাজির করতে পারেনি। সে কারণে আমরা বিষয়টি নিয়ে সমাধানে যেতে পারেনি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নাঈম বখাটে প্রকৃতির ছেলে। বিভিন্ন সময়ে তার বিরুদ্ধে ইভটিজিংসহ মারামারিও অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে পাথরঘাটা কেএম সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকেও তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এরপরে সে ওই স্কুলে এসে ভর্তি হয়। এ ব্যাপারে নাঈমের মায়ের মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি কল রিসিভ করেন নি।
এ বিষয়ে পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল বাশার জানান, ‘এব্যাপারে কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পাওয়া গেলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন