শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আন্তর্জাতিক সংবাদ

প্রেমিকদের সায়ানাইড দিয়ে হত্যা করতেন ব্লাক

হত্যাকান্ড শুরু করেন ২০০৭ সালে, এ সময় তার বয়স ছিল ৬১ বছর

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:০৩ এএম

‘ব্লাক উইডো’ চিসাকো কাকেহি। তার বয়স এখন ৭৪ বছর। প্রথম স্বামী মারা যাওয়ার পর প্রেমের ফাঁদ পেতে আকৃষ্ট করেছেন পুরুষদের। তাদের কাউকে কাউকে বিয়ে করে খুন করেছেন। এক্ষেত্রে খাবারের সঙ্গে মিশিয়ে দিয়েছেন বিষাক্ত রাসায়নিক সায়ানাইড ট্যাবলেট। কিন্তু পাপ ছাড়ে না বাপেরে। শেষ পর্যন্ত ধরা পড়তে হয়েছে চিসাকো কাকেহিকে। আদালতে দীর্ঘ বিচারে তার বিরুদ্ধে দেয়া হয়েছে মৃত্যুদন্ডের রায়। তা কার্যকরের অপেক্ষায় এখন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন সিএনএন। ইসাও কাকেহি’র বয়স ৭৫ বছর। তখনও তিনি সুস্থ ছিলেন। ভালবাসার মধ্যে ছিলেন। ২০১৩ সালে তিনি ৬৭ বছর বয়সী এক বিধবা চিসাকো কাকেহির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। জাপানে ম্যাচমেকিং বিষয়ক একটি এজেন্সির মাধ্যমে তিনি চিসাকোর সাক্ষাত পেয়েছিলেন। এর দুই মাসের মধ্যে তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন এবং এসসঙ্গে বসবাস করতে শুরু করেন। কিয়োটোর মুকো সিটিতে তারা চমৎকার এক দাম্পত্য সম্পর্ক শুরু করেছিলেন। নতুন বছরকে উদযাপনের জন্য তারা তৈরি করেছিলেন কেক। কিন্তু নতুন বছরে বেঁচে থাকতে পারলেন না ইসাও। ২৮ শে ডিসেম্বর তিনি জাপানে ‘ব্লাক উইডো’ খুনের চতুর্থ ও চ‚ড়ান্ত শিকারে পরিণত হন। এখন চিসাকো কাকেহি’র বয়স ৭৪ বছর। প্রেমের সম্পর্কের মাধ্যমে তিনজন পার্টনারকে খুন ও চতুর্থ জনকে হত্যা চেষ্টার অভিযোগে মৃত্যুদÐের মুখোমুখি। চিসাকো কাকেহি এই হত্যাকান্ড শুরু করেন ২০০৭ সালে। এ সময় তার বয়স ছিল ৬১ বছর। ওই সময় থেকে তিনি প্রেমের সম্পর্ক গড়ে হত্যাকাÐ শুরু করলেও পুলিশের চোখ ফাঁকি দিতে পেরেছেন। কিন্তু ২০১৪ সালে চতুর্থ পার্টনার ইসাও কাকেহিকে হত্যার ঘটনায় তিনি আর পালাতে পারেননি। পুলিশের তদন্তে তার নাম উঠে আসে। গ্রেপ্তার করা হয় তাকে। জাপানে এ যাবতকাল যত দীর্ঘমেয়াদি বিচার হয়েছে তার মধ্যে এই মামলা অন্যতম। এই মামলায় ২০১৭ সালে আদালত চিসাকো কাকেহিকে মৃত্যুদন্ডের রায় দেয়। এর বিরুদ্ধে তিনি আপিল করেন। কিন্তু জুনে তাও প্রত্যাখ্যাত হয়। জাপানের সরকারি টেলিভিশন এনএইচকে’র মতে, চিসাকো কাকেহি একটি ম্যাচমেকিং এজেন্সি ব্যবহার করতেন। তা ব্যবহার করে তিনি একের পর এক প্রবীণ ব্যক্তিদের শিকারে পরিণত করতেন। তাদেরকে আস্থায় নেয়ার পর বিষ প্রয়োগ করতেন। জুনে আদালতের বিচারক এ মন্তব্য করেছেন। বিচারক আরো বলেছেন, হত্যাকান্ডের উদ্দেশে এটা হলো সুপরিকল্পিত ও শক্তিশালী একটি বেপরোয়া অপরাধ। এই ঘটনা সামনে আসার পর জাপানে এক উদ্বেগ দেখা দেয়। বিশেষ করে ঝুঁকিতে থাকা বয়স্ক ও সিঙ্গেল মানুষদেরকে অনলাইনে প্রেমের ফাঁদে ফেলার বিপদের বিষয় জোরালোভাবে ফুটে ওঠে। একই সঙ্গে প্রশ্ন সৃষ্টি হয়, যে নারী জীবনের শেষ প্রান্তে, তিনি কেন প্রেমের ফাঁদ পেতে পুরুষদের হত্যা করছেন। জাপানে দ্রুতই কুখ্যাত হয়ে ওঠেন চিসাকো কাকেহি। তাকে এর আগে খুবি বেশি মানুষ চিনতো না। তিনি জাপানের দক্ষিণ-পশ্চিমের সাগা এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন। কাজ করতেন একটি প্রিন্টিং কারখানায়। ১৯৬৯ সালে প্রথম বিয়ে করেন। তখন তার বয়স ছিল ২৩ বছর। ১৯৯৪ সালে তার প্রথম স্বামী অসুস্থতায় মারা যান। এর পূর্ব পর্যন্ত তাদের দাম্পত্য জীবন টিকে ছিল ২৫ বছর। কিন্তু ২০০৭ সালে তিনি ৭৮ বছর বয়সী তোশিয়াকি সুয়েহিরোর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন। এ বছরই ১৮ই ডিসেম্বরের বিকেলে তিনি সুয়েহিরো ও তার সন্তানদের সঙ্গে মধ্যাহ্ন ভোজ সারেন। সুয়েহিরো ওষুধ খেতেন। ফলে কাকেহি তাকে একটি সায়ানাইড ক্যাপসুল দেন। মধ্যাহ্নভোজের ১৫ মিনিটের কম সময়ের মধ্যে সুয়েহিরো রাস্তার ওপর অচেতন হয়ে পড়েন। এম্বুলেন্স ডাকা হয়। ততক্ষণে শ্বাসপ্রশ্বাস ছাড়তে হাঁসফাঁস করছিলেন তিনি। এসব কথা বলা হয়েছে আদালতের নথিতে। সিএনএন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন