এক সপ্তাহের ব্যাবধানে ফের ভাঙন দেখা দিয়েছে রাজবাড়ী সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়নের চর সিলিমপুর এলাকায়।
গত শুক্রবার সকাল থেকে শুরু হওয়া ভাঙনে বিকেল পর্যন্ত রাজবাড়ী শহর রক্ষা বাঁধের স্থায়ীভাবে নির্মিত সিসি ব্লকের অন্তত একশত মিটার এলাকা নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। এছাড়াও ভাঙনের কারণে দেবে গিয়ে ভেঙে চুরমার হয় চর সিলিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি। এখনও ভাঙন ঝুঁকিতে অন্তত ৫০টি বসতবাড়ি ও রাজবাড়ী শহর রক্ষাবাঁধ।
সরেজমিনে দেখা যায়, সেখানে উৎসুক জনতা ভীর করে ভাঙনের চিত্র দেখছে। আর প্রমত্তা পদ্মার ভাঙনে বড় বড় চাপ ভেঙে পরছে। সেই সাথে চর সিলিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাকা ভবনটিও আস্তে আস্তে নদীতে দেবে যাচ্ছে।
এ সময় চর সিলিমপুর এলাকার বাসিন্দা আছিয়া বেগমের কান্না যেন থাকছেই না। কান্নার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্বামী নেই! প্রমত্তা পদ্মা দুইবার গিলে খেয়েছে বসতি। এখন যেখানে বসবাস করছি সেটিও যায় যায় অবস্থা। তাই কান্না ছাড়া আর কোন উপায় নেই।
একই এলাকার বাসিন্দা সেলিম হোসেন বলেন, গত সপ্তাহে অন্তত ৪০ মিটার এলাকা নদীগর্ভে বিলিন হয়েছে। বার বার পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বলার পরও তারা জোরালো কোন পদক্ষেপ নিচ্ছেন না। যে কারনেই আজকের ভাঙন। ভাঙনে চরসিলিমপুর বিদ্যালয়টি নদীগর্ভে বিলিন হয়েছে এখন এই এলাকার শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা অনিশ্চিত হয়ে পরবে।
চরসিলিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ইমান আলী ফকির বলেন, পদ্মার ভাঙনে পাকা ভবনটি নদীগর্ভে। ভাঙন যেভাবে অব্যহত আছে তাতে টিনশেড ঘড়টিও বাঁচানো মুশকিল হয়ে পরবে। তিনি আরো বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড দুই থেকে তিন মাস আগে স্থায়ীভাবে সিসি ব্লক দিয়ে বাঁধ দিয়েছে। সেই ব্লক ভেঙে যাচ্ছে। কাজের গাফিলতি বা মান নিয়ে কোন অনিয়ম হয়েছে কিনা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করেন তিনি।
এদিকে ভাঙন এলাকা পরিদর্শনের আসেন রাজবাড়ী সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফাহমি মো. সায়েফ, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নাসরিন আক্তার ও পানি উন্নয়ন বোর্ড রাজবাড়ীর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আরিফুর রহমান অঙ্কুর।
এ সময় পানি উন্নয়ন বোর্ড রাজবাড়ীর উপবিভাগীয় প্রকৌশলী আরিফুর রহমান অঙ্কুর বলেন, হঠাৎ পদ্মার পানি কমে যাওয়ায় রাজবাড়ীর বিভিন্ন পয়েন্টে বার বার ভাঙন দেখা দিচ্ছে। ভাঙনরোধে আমরা জিওব্যাগ ও জিও টিউব দ্বারা বালুর ব্যাগ ফেলা শুরু করেছি।
ভাঙনরোধে যা যা করনীয় পানি উন্নয়নবোর্ড তা গ্রহণ করবে। এই এলাকার বসতবাড়ি রক্ষায় যত জিওব্যাগ ফেলা প্রয়োজন তত পরিমান জিওব্যাগ ফেলার নির্দেশনা আছে বলেও জানান তিনি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন