ফরিদপুর ৯ উপজেলার নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের বাজারের নিত্যপন্যে আগুন জ্বলছেই। ৩৫ টাকার মোটা চাউল ৫০ টাকায় বহুদিন ধরে। বলা যায় সেটা এখন গা সওয়া হয়ে গেছে। ৯০ টাকার সোয়াবিন এখন ১৬০ টাকা। ৬০ টাকার মোটা ডাউল ৯০ টাকা। ৫০ টাকার চিনি ৮০ টাকা। ১৬ শ টাকার ময়দা ২৬/২৭ শ টাকা।৮/৯ শত টাকার বিদ্যূত বিল ১৮/১৯ শত টাকা। ৯ শ টাকার গ্যাস ১২ শ টাকা। ৯৫০ টাকার ১২ কেজির এলপি গ্যাসের বোতল এখন ১২ শত টাকা। এত গেলো নিত্যব্যাবহার্য্য,খাদ্যপণ্যের দাম। মানব জীবনের জন্য অতীব দরকারী ঔষধ -পত্র, প্রসাধন ও নির্মাণ সামগ্রীর প্রশ্ন নয় নাই তুললাম। তবুও দুই-একটা উদাহরণ না দিলেই নয়। ২০/২৫ টাকার সাবান এখন ৪৫/৫০ টাকা। গরীবের ৩ হাজার টাকার টিন ৫ /৬ হাজার টাকা। এমনি ভাবে মানব জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত সব পণ্য-সামগ্রীর দাম প্রতিনিয়ত লাগামহীন ভাবে বেড়েই চলেছে। বাজার ব্যাবস্থাপনা এতটা বিশৃঙ্খল হয়ে পড়ছে যে, যে যার ইচ্ছেমতো মাল-সামানার দাম হাকাচ্ছে। এগুলো দেখার যেনো কেউ নেই। নেই কোন টু-শব্দও। জীবন বাচানোর তাগিদে মানুষ নিরবে পকেট থেকে টাকা ঢালছে আর যন্ত্রণায় ছটফট করছে। নামীদামী হোটেলে রেষ্টুরেন্টে গরীব কখনো খাওয়ার জন্য যায়না। সাময়িক ক্ষুধা নিবারণে তারা ফুটপাতের যে হোটেল-রেস্তোরায় যায় সেখানেও বেসামাল অবস্থা। উপজেলা-ইউনিয়ন পর্যায়ে একটা সিঙ্গারা-পুরি এখন ১০ টাকা। বুঝুতে কষ্ট হয়না সেখানে ভাত,মাছ,মাংসের দাম কত? সব মিলিয়ে সাধারণ মানুযের জীবন ও জীবীকার ক্ষেত্রে চরম নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। দ্রব্যমূল্য স্ফীতির যাতাকালে পিষ্ট-নিগ্রীহিত হচ্ছে মানুষ।বিশেয করে নিম্ন আয়ের ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষের জীবন বিষিয়ে উঠেছে। জীবন যুদ্ধে প্রতিমুহূর্তে কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে চলতে হচ্ছে তাদের। সাধারন মানুষ বলছেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী! শুনতে পাই পৃথিবী নাকি বদলে যাচ্ছে! বদলে যাচ্ছে আমার দেশ,বদলাচ্ছি আমরাও। আর এই পরিবর্তনের ঢেউয়ে উল্টে-পাল্টে যাচ্ছে জীবনের প্রতিটি স্তর।যার অসহায় শিকার হচ্ছে নিরীহ,অসহায় শ্রমজীবী মানুষ।বিশেষ একটি শ্রেনী-গোষ্ঠীর বাইরে এই পরিবর্তনের সুবিধা আর কেউ ভোগ করতে পারছেনা।মাননীয় প্রধানমন্ত্রী! পিয়ন থেকে শুরু করে এম,পি- মন্ত্রীদের বেতন বা আয় ডাবল হয়েছে।প্রভাবশালী ব্যাবসায়ীরা সিন্ডীকেট বানিয়ে মানুষকে জিম্মী করে মুনাফা লুটের নামে চরম শোষণ করে ফুলেফেঁপে উঠছে।দোকান মালিকের আয় বেড়েছে,দোকান কর্মচারীর আয় বাড়েনি,হোটেল মালিকের আয় বেড়েছে,হোটেল শ্রমিকের আয় বাড়েনি,শিল্প-কলকারখানা মালিকের আয় বেড়েছে,শিল্পশ্রমিকের আয় বাড়েনি।অতএব আমরা এই নিম্নমধ্যবিত্ত,খেটে খাওয়া শ্রমজীবীরা যে তিমিরে ছিলাম সেই তিমিরেই আছি।চরম আর্থসামাজিক বৈষম্যের মধ্যে মানবেতর জীবন যাপন করছি আমরা ফরিদপুরবাসী। ফলে এই ভয়াবহ মূল্যস্ফীতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আর পেরে উঠছি না মাননীয় অভিভাবক। জীবন হাপিয়ে উঠেছে। হারিয়ে ফেলেছি ছন্দ।তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট বৃহওর জেলাবাসীর সবিনয় নিবেদন এই মূল্যসন্ত্রাস বা মুনাফাখোরদের শোষণের হাত থেকে আমাদের বাঁচান।ব্যাবসা-বাণ্যিজ্য খাতের নৈরাজ্য থেকে অঞ্চলকে বাচাঁন।পাশাপাশি আমাদের আয় ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধির দিকে নজর দিন। , দেশকে সুউচ্চ আসনে পৌছে দিতে আপনার বিরামহীন সংগ্রাম অব্যাহত। দেশের কাঠামোগত অনেক উন্নতি হয়েছে এবং হচ্ছে। বড় দালানকোঠা গড়ে উঠছে। হচ্ছে ব্রিজ-কালভার্ট। বিদ্যুতের আলোয় ঝলমল করছে পল্লী প্রাঙ্গণ। কাচা রাস্তা হচ্ছে পাকা। প্রশ্ন হচ্ছে,আমরাই যদি বেঁচে না থাকি তবে আপনার পাকা রাস্তায় কে হাটবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী??
এমন প্রশ্নের তীর বৃহত্তর ফরিদপুরের সন্তানের কাছে বৃহত্তর ফরিদপুরবাসীর।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন