শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

বৈষম্যমূলক আচরণ ও বর্ণবাদী হামলার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিন : এরদোগান

কাবুল বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণে এখনও আগ্রহী তুরস্ক, তুরস্ক সফররত জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেলের সাথে বৈঠক

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৮ অক্টোবর, ২০২১, ১২:০৩ এএম

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান আবারও আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তিনি শনিবার আঙ্কারায় এক বক্তব্যে বলেছেন, অতীতেও তুরস্ক কাবুল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তা রক্ষা করেছে। কাজেই বর্তমানে আবার সেখানে তুর্কি সেনা মোতায়েনে কোনো আপত্তি থাকার কথা নয়। এরদোগান বলেন, আফগানিস্তান ও কাতারের সাথে আলাপ-আলোচনার পর এই বিমানবন্দরে সেনা মোতায়েন করতে পারে তুরস্ক। গত আগস্ট মাসে তালেবানের হাতে কাবুলের পতন হওয়ার কয়েক মাস আগে থেকে কাবুল বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রণ তুরস্কের হাতে ছেড়ে দিতে চেয়েছিল আমেরিকা। মূলত মার্কিন সেনারা আফগানিস্তান ত্যাগ করার পর ওই বিমানবন্দর তালেবানের হামলা থেকে রক্ষা করার কাজে আফগান সেনাবাহিনীকে সাহায্য করার জন্য এই পরিকল্পনা করা হয়েছিল। সে সময় তালেবান তুর্কি সরকারকে হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেছিল, আঙ্কারা কাবুল বিমানবন্দরে সেনা মোতায়েন করলে এসব সেনাকে ‘শত্রুসেনা’ বলে গণ্য করা হবে। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান বলেছেন, বর্ণবাদ, ইসলামোফোবিয়া, বিদেশীদের প্রতি আতঙ্ক ও বৈষম্য এখনো ইউরোপে বড় সমস্যা হিসেবে রয়ে গিয়েছে। শনিবার তুরস্ক সফররত জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেলের সাথে বৈঠকের পর এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এই মন্তব্য করেন তিনি। প্রেসিডেন্ট এরদোগান বলেন, ইউরোপে অবস্থান করা তুর্কি জনগোষ্ঠী এই বৈষম্যমূলক আচরণের শিকার হয়ে আসছেন। ইউরোপীয় দেশগুলোর কাছে সব ধরনের বৈষম্যমূলক আচরণ ও বর্ণবাদী হামলার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের আহবান জানান এরদোগান। এর আগে শনিবার জার্মানির বিদায়ী চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেল তার সর্বশেষ তুরস্ক সফরে ইস্তাম্বুলে আসেন। ইস্তাম্বুলে প্রেসিডেন্টের বাসভবন হুবের ম্যানশনে তিনি প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগানের সাথে বৈঠক করেন। দুই নেতার মধ্যে প্রায় এক ঘণ্টা বৈঠক হয়। বৈঠকের পর ইস্তাম্বুলের দোলমাবাহচে প্যালেসে এরদোগান ও মেরকেল যৌথ সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন। সংবাদ সম্মেলনে এরদোগান বলেন, তুরস্কের সাথে সম্পর্ক রক্ষায় মেরকেলের ‘বিশ্বাস ও অবদানকে’ তুরস্ক স্মরণে রাখবে। তিনি বলেন, ‘সিরিয়া থেকে অনিয়মিত অভিবাসন বন্ধ করা থেকে শুরু করে উত্তর সিরিয়ায় মানবিক সাহায্য পৌঁছানোসহ বিভিন্ন বিষয়েই উদ্যোগ গ্রহণ ও দায়িত্ব নেয়া থেকে পিছিয়ে থাকেননি মেরকেল।’ এরদোগান আশা প্রকাশ করেন, দায়িত্ব থেকে অবসরের পরেও মেরকেল দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্ক অব্যাহত রাখতে অবদান রাখবেন। একইসাথে নতুন জার্মান সরকারের সাথে বিদায়ী জার্মান চ্যান্সেলরের মতোই বিবিধ সফল কার্যক্রম অব্যাহত রাখার বিষয়ে আশা প্রকাশ করেন তিনি। অপরদিকে জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেল সংবাদ সম্মেলনে বলেন. অনিয়মিত অভিবাসনের বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন তুরস্কের প্রতি অব্যাহত সমর্থন দিয়ে যাবে। তিনি বলেন, ‘আমরা মানব পাচার বন্ধ করতে চাই। এই প্রয়োজনীয়তায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন তুরস্ককে সহায়তা দেবে।’ জার্মান চ্যান্সেলর সংবাদ সম্মেলনে জোর দিয়ে বলেন. তুরস্ক ও জার্মানি সর্বদাই এক স্বার্থে কাজ করেছে। তিনি বলেন. ‘সকলেই জানে আমাদের দুই দেশের নিরাপত্তা ও স্বাধীনতা পরস্পরের ওপর নির্ভরশীল।’ তুরস্ক ও জার্মানির মধ্যে চলমান সম্পর্ক তার সব ইতিবাচকতা ও নেতিবাচকতা নিয়ে অব্যাহত থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেন মেরকেল। দীর্ঘ ১৬ বছর ক্ষমতায় থাকার পর এই বছর রাজনীতি থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছিলেন অ্যাঙ্গেলা মেরকেল। এই লক্ষ্যে গত সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত জার্মানির সাধারণ নির্বাচনে অংশ নেননি তিনি। কিন্তু নির্বাচনে তার দল ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্রেটিক ইউনিয়ন অল্প ব্যবধানে হেরে যায়। অপরদিকে দেশটিতে কোনো দলই নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন না করায় বর্তমানে বিভিন্ন দলের সমন্বয়ে জোট সরকার গঠনের বিষয়ে আলোচনা চলছে। নতুন সরকার গঠনের আগ পর্যন্তই ক্ষমতায় থাকছেন অ্যাঙ্গেলা মেরকেল। আনাদোলু এজেন্সি, আল-জাজিরা, টিআরটি ওয়ার্ল্ড।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন