শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

দুর্ভোগে শ্রীবরদীর ৫ গ্রামের মানুষ

সোমেশ্বরী নদীতে সেতু নেই

মো. মেরাজ উদ্দিন, শেরপুর থেকে | প্রকাশের সময় : ১৮ অক্টোবর, ২০২১, ১২:০৩ এএম

শেরপুরের শ্রীবরদীর সোমেশ্বরী নদীর ওপর সেতু না থাকায় পাঁচ গ্রামের মানুষের নদী পার হতে একমাত্র ভরসা নৌকা। অনেক সময় সাঁতরে নদী পার হন এই পাঁচ গ্রামের মানুষ। ফলে স্রোতে ভেসে যাওয়ার ঘটনাও ঘটে। অতি সম্প্রতি রাতে নদী পার হওয়ার সময় একজন নিখোঁজ হন। বর্ষা মৌসুমে বেশি ভোগান্তি পোহাতে হয় তাঁদের। স্বাধীনতার ৫০ বছরেও সেতু না হওয়ায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। স্থানীয় প্রশাসন বলছে, দ্রুত সময়ের মধ্যে এলাকাবাসীর ভোগান্তি কমাতে সেতু নির্মাণের কাজ শুরু করা হবে।
সোমেশ্বরী নদীর উত্তর পাশে রয়েছে পূর্ব খাড়ামোড়া, পশ্চিম খাড়ামোড়া, রাঙ্গাজান, ছোট বালিজুরী, মাদরাসাপাড়া গ্রাম। এই পাঁচটি গ্রামে প্রায় পাঁচ হাজার পরিবার বসবাস করে। রয়েছে খাড়ামোড়া দাখিল মাদরাসাসহ মসজিদ ও গির্জা। আর নদীর দক্ষিণ পাশে রয়েছে বালিজুরী বাজার, বালিজুরী উচ্চ বিদ্যালয়, বালিজুরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কমিউনিটি সেন্টারসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
গ্রীষ্মের সময় নদীর পানি কমে যায়। তখন মানুষ সাঁতরে নদী পার হন। এক সপ্তাহ আগে পশ্চিম খাড়ামোড়া গ্রামের জহির উদ্দিন ওরফে জহর (৭৩) নামে এক কৃষক সাঁতার কেটে নদী পার হওয়ার সময় নিখোঁজ হন। তবে বেশি সমস্যা দেখা দেয় শিক্ষার্থীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাওয়ার ক্ষেত্রে। বর্ষা মৌসুমে বিপদ বাড়ে এই পাঁচ গ্রামের মানুষের। নৌকায় ঝুঁকি নিয়ে নদী পার হতে হয়।
খাড়ামোড়া গ্রামের বাবুল মিয়া বলেন, ‘গত ৫০ বছর ধরে আমরা অতি কষ্টে নদী পার হচ্ছি। নির্বাচনের সময় জনপ্রতিনিধিরা এই নদীর ওপর সেতু করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত সেতু দেখতে পেলাম না। ভবিষ্যতেও দেখতে পাব কি না জানি না।’ নদীতে সেতু না থাকায় কয়েক হাজার এলাকাবাসীকে প্রতিনিয়ত চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। কৃষি কাজে আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে চাষাবাদ করা, ফসলি জমিতে সার আনা নেয়া, ফসল বেচাকেনাসহ নানা অসুবিধায় পড়তে হয় এলাকাবাসীর। এ ছাড়া অসুস্থ রোগীকে দ্রুত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া সম্ভব হয় না। বালিজুরী উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী সাথী আক্তার বলেন, ‘আমরা কষ্টে নদী পার হয়ে বিদ্যালয়ে যাই। বর্ষার সময় নৌকা থাকলেও শুকনো মৌসুমে ভিজে নদী পাড় হতে হয়। এখানে একটি সেতু হলে আমাদের ভালো হয়।’
রানীশিমুল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাসুদ রানা বলেন, ‘সোমেশ্বরী নদীর ওপর সেতু নির্মাণ খুবই দরকার। আমরা প্রায় দেড় বছর আগে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে সেতু নির্মাণের জন্য বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত আবেদন করি। সেতু হলে সীমান্তবর্তী পাহাড়িয়া এলাকায় উৎপাদিত কৃষি পণ্য বিক্রি করে কৃষক ন্যায্য মূল্য পাবে। সেই সঙ্গে পাহাড়ি মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন হবে।’
উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিলুফা আক্তার বলেন, ‘সেতু নির্মাণে সব ধরণে কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বর্তমানে নকশার কাজ চলছে। আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে সেতুর নির্মাণ করা শুরু হবে। সোমেশ্বরী নদীর ওপর সেতু নির্মাণ হলে ওই পাঁচটি গ্রামের মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে।’
শ্রীবরদী উপজেলা প্রকৌশলী মো. জাহাঙ্গীর হোসাইন বলেন, সেতু নির্মাণের জন্য মাটি পরীক্ষ করা হয়েছে। দ্রুতই সেতু নির্মাণ করা হবে।’

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন