শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আন্তর্জাতিক সংবাদ

মেয়েদের শিক্ষার বিষয়ে তালেবানের ঘোষণা শিগগির

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৮ অক্টোবর, ২০২১, ১২:০০ এএম

তালেবানরা ‘খুব শীঘ্রই’ আফগান মেয়েদের জন্য হাইস্কুল খুলে দেয়ার ঘোষণা দেবে বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘের ইউনিসেফের উপ-নির্বাহী পরিচালক ওমর আবাদি। তিনি বলেছেন, তালেবানরা তাকে বলেছে যে তারা ‘খুব শীঘ্রই’ ঘোষণা করবে যে, সমস্ত আফগান মেয়েদের মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পড়ার অনুমতি দেয়া হবে।

আফগানিস্তানের ছেলেরা প্রায় চার সপ্তাহ ধরে মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে পারছে। কিন্তু দেশটির মেয়েশিক্ষার্থীদের জন্য এখনো এ সুযোগ তৈরি হয়নি। গত শুক্রবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘে ইউনিসেফের উপনির্বাহী পরিচালক ওমর আবদি বলেন, তালেবানের শিক্ষামন্ত্রী তাদের বলেছেন, তারা একটি কাঠামো নিয়ে কাজ করছেন। এ কাঠামো তারা শিগগিরই ঘোষণা করবেন। এ কাঠামো আফগান মেয়েদের মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দেবে। তারা আশা করছেন, এটি খুব শিগগির হবে।

কয়েক সপ্তাহ ধরে তালেবান বলে আসছে, তারা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মেয়েদের স্কুলে ফিরতে দেবে। ওমর আবদি বলেন, আফগান মেয়েদের শিক্ষার জন্য আর অপেক্ষা না বাড়াতে দেশটির শাসনকারী তালেবান কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ। ইউনিসেফের উপনির্বাহী পরিচালক জানান, তিনি সপ্তাহখানেক আগে আফগানিস্তান সফর করেছিলেন। ওই সফরকালে তিনি তালেবান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ করেছিলেন। ওমর আবদি বলেন, ‘তালেবান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমার যতগুলো বৈঠকে হয়, সব কটিতেই আমি মেয়েদের শিক্ষার বিষয়টি শুরুতেই উত্থাপন করেছি।’ ইউনিসেফের উপনির্বাহী পরিচালক আরও বলেন, আফগান মেয়েদের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ার অনুমতি দেয়ার বিষয়ে তালেবানের যে অঙ্গীকার করেছে, তা রক্ষার নিশ্চয়তা দিয়েছে।

তালেবানরা তাদের প্রথম মেয়াদের শাসনের সময় (১৯৯৬-২০০১) আফগানিস্তানের নারীদের শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছিল এবং তাদের কর্ম ও সামাজিক জীবনে নানা বাধা আরোপ করেছিল। এবারও তারা ক্ষমতায় আসার পর মেয়েদের হাইস্কুল বন্ধ করে দেয় এবং স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাত ছাড়া অন্য কোনো খাতে নারীদের কাজ করা নিষিদ্ধ করে। আবাদি বলেন যে, প্রতিটি সভায় তিনি তালেবানদের চাপ দিয়েছিলেন এই বলে যে ‘মেয়েদের তাদের শিক্ষা পুনরায় শুরু করতে দিন’ এবং এটিকে ‘মেয়েদের নিজেদের এবং সমগ্র দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ’ বলেও অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, ২০০১ সালে যখন মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোট ওসামা বিন লাদেনকে আশ্রয় দেয়ার জন্য তালেবানকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করেছিল, তখন মাত্র দশ লাখ আফগান শিশু স্কুলে যেত।

গত ২০ বছরে এই সংখ্যাটি ১ কোটিতে পৌঁছেছে, যাদের মধ্যে ৪০ লাখই মেয়ে শিশু। আর গত এক দশকে স্কুলের সংখ্যা ৬ হাজার থেকে বেড়ে ১৮ হাজার হয়েছে। তিনি বলেন, ‘গত দুই দশকের শিক্ষা অর্জনকে শক্তিশালী করতে হবে এবং পিছিয়ে পড়তে দেওয়া যাবে না’। জাতিসংঘ শিশু তহবিলের উপপ্রধান বলেন, কিন্তু এই অগ্রগতি সত্ত্বেও এখনো ৪২ লাখ আফগান শিশু স্কুলে যেতে পারে না, যাদের মধ্যে ২২ লাখই মেয়ে শিশু। আবাদি বলেন, তালেবানরা মেয়েদের মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পড়ার অনুমতি দিলেও রক্ষণশীলদের মধ্য থেকে ফের বাধা আসতে পারে। এর জন্য তালেবানকে প্রস্তুত থাকতে হবে। তিনি বলেন, ‘আমি যে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দেখা করেছি তারা বলেছে যে, তারা যে কাঠামোটি নিয়ে কাজ করছে সেটি বাস্তবায়ন করার পর আরও বেশি অভিভাবক তাদের মেয়েদের স্কুলে পাঠাতে উৎসাহিত হবে। কারণ এটি রক্ষণশীল সমাজে মেয়ে ও ছেলেদের এবং নারী শিক্ষকদের আলাদা রাখার বিষয়ে যে উদ্বেগ রয়েছে তার সমাধান করবে। ছেলে ও মেয়েদের জন্য আলাদাভেবে শিক্ষা গ্রহণের ব্যবস্থা করা হবে। সূত্র : এএফপি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
মোহাম্মদ দলিলুর রহমান ১৮ অক্টোবর, ২০২১, ২:৫৬ এএম says : 0
শরিয়তের নিয়ম মেনে করলে সমস্যা নেই।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন