শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ০৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৯ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

পাটের বাম্পার ফলনেও আনন্দ নেই কৃষকের মনে ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় বাড়ছে ক্ষোভ

প্রকাশের সময় : ১৫ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

বেনাপোল অফিস

যশোরের সীমান্তবর্তী উপজেলা শার্শা-ঝিকরগাছায় চলতি মৌসুমে পাটের বাম্পার ফলনেও কৃষকের মনে আনন্দ নেই। পাটের দাম কমে যাওয়ায় কৃষকদের লোকসান গুনতে হচ্ছে প্রতি বিঘায় ২/৩ হাজার টাকা। ন্যায্য দাম না পাওয়ায় তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে শার্শায় ৫ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ হাজার ৬০০ হেক্টর। আর ঝিকরগাছায় ৩ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে পাটচাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল। চাষ হয়েছে ৪ হাজার ৮৮৫ হেক্টর জমিতে। এ বছর সবচেয়ে বেশি জমিতে পাট চাষ হয়েছে এবং ফলনও আগের যে কোনো সময়ের রেকর্ড ছাড়িয়েছে। ধান চাষে বার বার লোকসান হওয়ায় শার্শা ও ঝিকরগাছার কৃষকরা পাট চাষে ঝুকে পড়েছিল। কিন্তু পাটের দাম কমে যাওয়ায় হতাশ চাষিরা। শার্শার স্বরূপদাহ গ্রামের আবদুল মান্নান ও ঝিকরগাছার বল্লা গ্রামের মেহেদী হাসান চঞ্চল জানান, তারা ১০ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছিল। বিঘাপ্রতি গড়ে ১৩/১৪ মণ পাট পেয়েছেন। তাদের দাবি, ভারতীয় উচ্চ ফলনশীল জাতের পাট চাষ করে এবার বাম্পার ফলন হয়েছে। পাট চাষে বীজ ক্রয়, জমি প্রস্তুত, সার-কীটনাশক, পরিচর্যা (নিড়ানি) ও সেচ বাবদ খরচ হয়েছে বিঘায় ১০-১১ হাজার টাকা। এরপর পাট কাটা-বাঁধা, বহন, পচানো (জাগ) ও ছাল ছাড়ানোসহ (ধোয়া) খরচ হয়েছে ৬-৭ হাজার টাকা। তারপর পাট শুকানোতেও খরচ হয়েছে দেড়-দুই হাজার টাকা। সব মিলিয়ে প্রতি বিঘা জমিতে পাট চাষ থেকে শুরু করে মহাজনের পালায় পৌঁছাতে খরচ হচ্ছে ২২-২৩ হাজার টাকা। গত এক সপ্তাহ ধরে শার্শা ও ঝিকরগাছার বিভিন্ন হাটবাজারে পাট বিক্রি হচ্ছে ১৫০০ টাকা মণ দরে। ঝিকরগাছা বোটঘাট রোডের পাট ব্যবসায়ী আবদুল আলিম ও শার্শার বেনাপোলের আবদুল হান্নান জানান, পাটের প্রকারভেদে কেনা হচ্ছে ১৪৮০ থেকে ১৫৩০ টাকা পর্যন্ত। সে হিসেবে প্রতি বিঘা জমির পাট বিক্রি করে কৃষক পাচ্ছে ২০-২২ হাজার টাকা। ফলে বিঘাপ্রতি কৃষকের লোকসান গুনতে হচ্ছে ১ থেকে ২ হাজার টাকা। তবে বর্গা চাষিদের লোকসানের পরিমাণ আরো বেশি। উপজেলার নোয়ালী গ্রামের আলমগীর হোসেন জানান, পাট চাষ করে লাভ হয়েছে শুধু পাটকাটি। সরকারের নির্ধারিত মূল্যে পাট বিক্রি করতে পারলে কৃষকের মুখে হাসি থাকত এমনটাই প্রত্যাশা অনেক কৃষকের। শার্শা উপজেলা কৃষি অফিসার হীরক কুমার সরকার জানান, লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক বেশি পাট চাষ হয়েছে। পাটের আবাদও ভালো হয়েছে। পর্যাপ্ত বৃষ্টির জন্য চাষিরা পাট সুন্দরভাবে জাগ দিতে পেরেছেন। পাটের দাম অনেক ভালো। পাটের দাম পেয়ে চাষিরা বেশ খুশি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন