আতাউর রহমান. ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) থেকে
নানা সমস্যায় জর্জড়িত ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা হাসপাতাল। অস্বাস্থ্য কর পরিবেশে দেয়া হচ্ছে স্বাস্থ্য সেবা। নোংরা পরিশের কারণে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মহিলা ও পুরুষ ওয়ার্ডগুলোতে দুর্গন্ধের কারণে দায় হয়ে পড়েছে অবস্থান করা । এছাড়াও অপারেশন থিয়েটার চালু না হওয়ায় কাক্সিক্ষত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা। রয়েছে ডক্তার ও নার্স সংকট। জানা যায়, গত ২০১১ সালের ৮ জুন ৫০ শয্যার ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একটি আধুনিক অপারেশন থিয়েটার চালুর জন্য বিভিন্ন যন্ত্রাংশ ও ওষুধপত্র বরাদ্দ আসে। কিন্তু অপারেশনের অনুমতি, জুনিয়ার কনসালটেন্ট এনেসথেশিয়া (অজ্ঞান) পদের কোনো চিকিৎসক না থাকায় দীর্ঘ ৬ বছরেও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে অপারেশন থিয়েটার চালু করা যায়নি। ওই অবস্থায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একটি কক্ষের ভেতরে মেঝেতে অপারেশন থিয়েটারের লাখ লাখ টাকার সরঞ্জাম নষ্ট হচ্ছে। অপারেশন থিয়েটার চালু না হওয়ায় ইতোমধ্যে বিভিন্ন ওষুধপত্র কক্ষবন্দি থেকে নষ্ট হয়ে গেছে বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। গত ৯অক্টোবর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহির্বিভাগে গিয়ে দেখা যায়, সেবা নিতে আসা রোগীদের দীর্ঘ লাইন। জরুরি বিভাগে একজন চিকিৎসক, বর্হিবিভাগের গাইনি শাখায় ২২ নম্বর কক্ষে ৩ জন চিকিৎসকের মধ্যে দুই জন সেবা দিচ্ছেন। ১৫ নম্বর কক্ষে একজন ডা. ছাড়া অন্য কক্ষগুলো ১১টা পর্যন্ত তালাবন্ধ ছিলো। চিকিৎসক না থাকায় রোগীরা দীর্ঘ লাইন ধরে ও মেঝেতে বসে অপেক্ষা করতে দেখা যায়। ওই সময় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বাস্থ্য কর্মকর্তাও উপস্থিত ছিলেন না। দুপুর ১ টা পর্যন্ত হাসপাতালটিতে অবস্থান করে দেখা যায়, সকাল ১০ টা থেকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহির্বিভাগে চিকিৎসা সেবা শুরুর কথা থাকলেও পৌনে ১২ টার দিকেও কয়েকজন চিকিৎসককে স্বাস্থ্য কর্মকর্তার কক্ষে প্রবেশ করে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করতে দেখা গেছে। নানা অনিয়ম অব্যবস্থাপনায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে বিরাজ করলেও বিষয়গুলো সম্পর্কে কর্তৃপক্ষ উদাসীন। গত ২০১৩ সালের অক্টোবর থেকে অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জেনারেটর। ওই অবস্থায় রাতের বেলায় বিদ্যুৎ চলে গেলে অন্ধকারে থাকতে হয় রোগীদের। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পুরুষ ও মহিলা ওয়ার্ডে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ থাকায় দুর্গন্ধে নাজেহাল রোগীরা। এছাড়া হাসপাতাল থেকে সরবরাহকৃত খাবারের মান খুব খারাপ বলে জানিয়েছেন রোগীরা। এদিকে গতকাল সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে অবস্থান করে দেখা গেছে, ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধি ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের লোকজনের দৌরাত্ম্য। কোনো কোনো চিকিৎকের কক্ষেও বসা অবস্থায় দেখা গেছে ডায়াগনস্টিক ও ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের। আবার অনেকে চিকিৎসকের কক্ষের বাইরে দাঁড়িয়ে রোগী বের হতেই ব্যবস্থাপত্র টেনে নিয়ে যান। ওই অবস্থায় রোগীরা চরম হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. নাজিম উদ্দিন বলেন, এনেসথেশিয়ার একজন চিকিৎসকের অভাবে হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারটি চালু করা যাচ্ছে না। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তপক্ষকেও অবহিত করা হয়েছে। জেনারেটরটি অকেজো হয়ে যাওয়ায় রোগীদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অব্যবস্থাপনা সম্পর্কে বলেন, রোববার চিকিৎসকরা একটু বিলম্বে এসেছেন, ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধি ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের লোকজনকে দুপুর ১ টার আগে ভেতরে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন