নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন বৃদ্ধিতে আওয়ামী লীগের সিন্ডিকেটকে সরকারই উৎসাহিত করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, আজকে বাংলাদেশ একটি ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে, দেশের মানুষ বিপর্যন্ত। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য প্রতিদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে, আকাশ ছোঁয়া দাম। সরকার এর কোনো লাগাম টেনে না ধরে বরং এই দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়ানোর পেছনে যে আওয়ামী সিন্ডিকেট আছে তাদেরকে তারা (সরকার) উৎসাহিত করছে। যার ফলে প্রতিনিয়ত চাল, ডাল থেকে শুরু করে খাদ্য দ্রব্য, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য প্রতিদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। সরকার তা নিয়ন্ত্রণে কোনো রকমের ব্যবস্থা গ্রহন করতে পারছে না।
গতকাল রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির উদ্যোগে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির প্রতিবাদে আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।
বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের ব্যর্থতার কঠোর সমালোচনা করে খন্দকার মোশাররফ বলেন, করোনার কারণে দরিদ্র্যের সংখ্যা বেড়েছে। আগে যেখানে শতকরা ২০ ভাগ মানুষ দারিদ্রসীমার নিচে ছিলো, নতুন করে আরো ২০ ভাগ মানুষ এই দারিদ্র সীমার নিচে চলে এসেছে। মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্তে পরিণত হয়েছে। আজকে এই দ্রব্যমূল্যের উধর্বগতিতে এদেশের মানুষ দুই বেলা ভাত পেট ভরে খেতে পারে না। বহু মানুষ অনাহারে থাকে। তাদের ক্ষমতা নেই, আয় রোজগার কমে গেছে।
সরকার নানা ষড়যন্ত্র করছে অভিযোগ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, যখন দেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে উঠেছে শেখ হাসিনার সরকারকে আগামীতে একটি নির্দলীয় সরকার প্রতিষ্ঠা করে জনগণের সরকার করবে। তখনই সরকার নানা ষড়যন্ত্র লিপ্ত হয়েছে। একটি ষড়যন্ত্র আপনারা দেখেছেন, দুর্গাপূজায় পবিত্র কোরআন শরীফকে পূজামন্ডপে রেখে, সেই কোরআন শরীফকে একজন থানার ওসি মিডিয়ার সামনে দেখাচ্ছে এবং ফেইসবুকে এটাকে ভাইরাল করেছে। তার অর্থ হচ্ছে কারা এই প্ররোচণা করছে এই সরকারের পক্ষ থেকে। ইতোমধ্যে যারা ধরা পড়েছে শুনেছেন তারা সরকারের পক্ষের লোক। অর্থ্যাৎ এই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করে বাংলাদেশে একটা পরিস্থিতি সৃষ্ট করতে চায় আজকের এই সরকার। কেননা আগামী দিনে যে আন্দোলন-সংগ্রাম সামনে রয়েছে সেই দিক থেকে জনগণের দৃষ্টি অন্যদিকে ফেরানোর জন্য, ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য সরকার নানা ফন্দি করছে, নানা ষড়যন্ত্র করছে। তার মধ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করা তাদের একটি পরিকল্পনা।
সরকারের ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে আন্দোলনের মাধ্যমে এক দফার আন্দোলনের জন্য নেতাকর্মীদের প্রস্তুতি নেয়ার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, যদি আজকে দ্রব্যমূল্যের উধর্বগতি থেকে জনগণকে মুক্ত করতে চাই, মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চাই তাহলে একমাত্র লক্ষ্য হবে এই সরকারকে বিদায় দেয়া। এই সরকারকে বিদায় দিতে না পারলে আমাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি সম্ভব হবে না, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে স্বসম্মানে দেশে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে না। তাই বিএনপির নেতৃত্বে এদেশের জনগণ ঐক্যবদ্ধ এই সরকারকে হাটাতে।
মহানগর উত্তরের আহবায়ক আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আমিনুল হকের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বিএনপি নেতা আবদুস সালাম, খায়রুল কবির খোকন, নাজিম উদ্দিন আলম, যুবদলের সুলতান সালাহ্উদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল বক্তব্য রাখেন। উপস্থিত ছিলেন বিএনপির আজিজুল বারী হেলাল, আবদুস সালাম আজাদ, যুবদলের সাইফুল আলম নিরব, মহানগর বিএনপির রফিকুল আলম মজনু, আরিফা সুলতানা রুমা প্রমূখ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন