শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ইসলামী জীবন

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বাতাবরণ

মাওলানা এরফান শাহ্ | প্রকাশের সময় : ২৯ অক্টোবর, ২০২১, ১২:০৩ এএম

শিক্ষা-সংস্কৃতি, সভ্যতা ও মানবতার ধারক-বাহকের নাম মানব। যারা মানব হয়ে সভ্যতা ও মানবতাকে লালন করে না, তারা মানব জাতির কলঙ্ক! আর ধর্ম হচ্ছে পরস্পর কল্যাণ কামনার নাম। যে ধর্ম পরস্পর মঙ্গল কামনা করে না, তা ধর্ম হওয়ার মর্যাদা রাখে না। রাজনীতির উদ্দেশ্য জনগণের ভাগ্যোন্নয়ন। যে নীতির কারণে জনগণ নির্যাতিত ও নিপীড়িত হয় তা রাজনীতি নয় বরং বলা যায় পোড়ামাটিনীতি! ইংরেজীতে একটি প্রবাদ আছে যার অর্থঃ ‘আমরা সবাই ততক্ষণ পর্যন্ত মানুষ যতক্ষণ বর্ণ আমাদেরকে ভিন্ন না করে, ধর্ম আমাদেরকে বিচ্ছিন্ন না করে, রাজনীতি আমাদেরকে বিভাজিত না করে এবং সম্পদ আমাদেরকে শ্রেণিবদ্ধ না করে’। ধর্ম, বর্ণ, রাজনীতি, সম্পদ ও ক্ষমতাকেন্দ্রিক যে সমাজব্যবস্থা গড়ে উঠেছে সেখানে মনুষত্বের আজ বড়ই র্দুদিন!

বার আউলিয়ার পূণ্যভ‚মি আমার প্রিয় মাতৃভ‚মি বাংলাদেশ। আবহমানকাল ধরে এখানে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিরাজমান। যুগ যুগ ধরে হিন্দু-মুসলিম ও বৌদ্ধ-খৃস্টান মিলেমিশে একসাথে বসবাস করে আসছে। এই উপমহাদেশের অন্যান্য অঞ্চল সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় আক্রান্ত হলেও বাংলাদেশ তার ব্যতিক্রম। দু’একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ব্যতিত সেরকম কোনো নজির নেই। বন্ধুরাস্ট্র ভারতের ভয়াবহ গুজরাট ও দিল্লীর দাঙ্গাও দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বন্ধনে ফাটল ধরাতে পারেনি। মুসলমানের হাজার বছরের পুরনো বাবরী মসজিদের কান্না পৃথিবীর দু’শত কোটি মুসলমানের হৃদয় চুর্নবিচুর্ণ করলেও আমাদের সম্প্রীতির বাতাসকে দূষিত করতে পারেনি। গৌতম বৌদ্ধের বাণী ‘জীব হত্যা মহাপাপ’ সেই ধর্মের অনুসারীরা জ্বালাও-পোড়াও করে দশ লক্ষ রোহিঙ্গাকে স্বীয় মাতৃভুমি থেকে বিতাড়িত করলেও প্রতিবেশি দেশের সেই সহিংসতার আগুন সীমান্ত পেরিয়ে আমার প্রিয় বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারেনি। বলা যায় বাংলাদেশ বিশ্বে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অনন্য দৃষ্টান্ত।
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ হিসেবে বাংলাদেশের খ্যাতি রয়েছে সারাবিশ্বে। শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই একসাথে মিলেমিশে বসবাস করে। পর্দার আড়ালে কারা পবিত্র কুরআন অবমাননার মতো ঔদ্ধত্যপূর্ণ ঘটনা ঘটাল? ভারতের গণমাধ্যমে তা ফলাও করে প্রচারণা, বিজেপি সরকারের দায়িত্বশীলদের বক্তৃতা-বিবৃতি, উগ্রপন্থী সংগঠন (ইসকন) কর্তৃক জাতিসংঘ মহাসচিবকে চিঠি প্রদান এবং দেশের কিছু মুখচেনা মানুষের হম্বিতম্বি ও হরতালের হুংকার রহস্যজনক! শান্তিপুরে নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে বাংলাদেশের ঘটনাকে হাতিয়ার করেছেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি খুশি হয়ে বলেন, ‘বাংলাদেশের ঘটনার পর তিনগুণ বেশি ভোট পেয়ে বিজেপি এই আসনে জিতবে’। যা নিয়ে ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে নানা চর্চা! হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব গোবিন্দ প্রামাণিকের গ্রেফতার দাবী করেছেন কুমিল্লা-৬ আসনের সাংসদ ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আ ক ম বাহাউদ্দীন। এই প্রসঙ্গে গোবিন্দ প্রামাণিক বলেন, ‘উনি এলাকার সাংসদ, ওই এলাকার জনগণকে রক্ষার দায়িত্ব তার’। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘হিন্দুরা দেশে থাকলে ক্ষমতাসীন দল ভোট পায় আর চলেগেলে সম্পত্তি পায়’। সময়ের আলোচিত ও সাহসী ব্যক্তিত্ব ডক্টর আসিফ নজরুল স্যার বলেন, ‘সংখ্যালঘুদের ওপর নারকীয় হামলা আমাদের মর্মাহত করেছে! আমরা প্রতিটি আক্রমণের বিচার চাই। তবে সেই সাথে পুলিশের গুলিতে যারা মারা গেল তাদের কথাও যেন আমরা ভুলে না যাই। মনে রাখতে হবে তারাও মানুষ! পুলিশের কী সেখানে তাদের মেরে ফেলা ছাড়া বিকল্প ছিল না? এসব তদন্ত না করা হলে, পুলিশকে ট্রিগার হ্যাপী করে তোলা হবে। বিচারহীনতার সংস্কৃতি আরো প্রকট হবে। উল্লেখ্য, একজনের অপরাধে অন্যজনকে শাস্তি দেয়া যায় না। অপরাধীকে নিয়ে যখন রাজনীতি করা হয় তখন সত্য উদঘাটন ও ন্যায়বিচার কঠিন হয়ে যায়। আমরা এই অপসংস্কৃতি ও অপরাজনীতির অবসান চাই। বিচারকদের বিচারক আহকামুল হাকিমিন বলেন, ‘কেউ অপরের দায়-ভার (বোঝা) বহন করবে না’- বনি ইসরাইল;১৫। এক সময় পান থেকে চুন কষলে বিএনপি, জামায়াত ও হেফাজতকে ইন্ধনদাতা হিসেবে দায়ী করা হতো। বিএনপি এখন হামলা-মামলায়। জামায়াত ফাসিঁর কাঠগড়ায় আর হেফাজত বন্দীশালায়। জনমনে এখন প্রশ্ন তাদের সেই শূণ্যস্থান এখন কারা পূরণ করছেন?
দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মাঝে ক্ষমতার লোভ ও মোহ এতবেশি, একবার ক্ষমতার স্বাদ পেলে পোড়ামাটিনীতি অবলম্বন করে হলেও তা ধরে রাখতে চায়। কারণ ক্ষমতায় থাকাকালে প্রতিহিংসা আর প্রতিপক্ষকে যেভাবে ঘায়েল ও আঘাত করা হয়, ক্ষমতা হারানোর পর আক্রান্ত হওয়ার ভয়ে সারা জীবন ক্ষমতা আকড়ে থাকতে চায়। কেয়ারটেকার প্রধানকে নিজের ভাগে আনতে কেউ বিচারপতির বয়স বৃদ্ধি করে, আবার কেউ আরো একধাপ এগিয়ে, আদালতের দোহাই দিয়ে, কেয়ারটেকার সিস্টেম বাতিল করে। উদ্দেশ্য যেনতেন প্রক্রিয়ায় ক্ষমতায় থাকতে হবে। উভয় পক্ষ দাবী করে, জনকল্যাণে রাজনীতি করে অথচ দেশের স্বার্থে ও জাতির দুর্দিনে দু’দল এক টেবিলে বসেছে সেরকম কোনো উদাহারণ নেই বললেই চলে। দোষারূপ, কাদাঁছুড়াছুড়ি, অশ্রদ্ধা, অবিশ্বাস আর প্রতিহিংসা থেকে কী বাংলাদেশের রাজনীতি বের হয়ে আসতে পারবে না? রাস্ট্র নামক কাঠামোটি তিনটি পিলারের ওপর দাঁড়িয়ে থাকে। আইন, বিচার ও নির্বাহী পিলার। সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে রা’্ররে এ তিনটি অঙ্গের সমন্নয় করা এবং স্বাধীনভাবে চলতে সহযোগিতা করা। তাহলেই কেবল জননিরাপত্তা, মানবাধিকার, ন্যায়বিচার জাতিকে উপহার দেয়া সম্ভব। আর্ন্তজাতিক সংস্থার এক জরিপে উঠে এসেছে ১৩৯টি দেশের মধ্যে আইনের শাসনে বাংলাদেশের অবস্থান ১২৪ তম। মুক্ত গণমাধ্যম সূচকে ১৮০ টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৫৩ তম। সরকার যদি একে একে ভিত্তির সব পিলার নিজের কব্জায় নিয়ে গুলিয়ে ফেলে তখন গণতন্ত্র, সুশাসন ও মানবাধিকার বলতে আর কিছু অবশি’ থাকে না।
আমরা সকলে চাই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি। তবে সেই কাক্সিক্ষত লক্ষ্যমাত্রা কেনো অর্জিত হচ্ছে না, কোথায় আমাদের ঘাটতি তা নিয়ে নতুন করে ভাবনার সময় এসেছে। এর প্রধান দু’টি কারণ আমি চিহ্ণিত করেছি। এক. রাস্ট্র বিমাতাসুলভ আচরণ; এক ভদ্রলোকের দু’ পরিবার। উভয় পরিবারে রয়েছে সন্তান-সন্ততি। ভদ্রলোক দু’ পরিবারের সন্তানদের মাঝে সম্প্রীতি দেখতে চান তবে দুঃখজনক হলেও সত্য ভদ্রলোক উভয় পরিবারের মাঝে আদল তথা সমতা রক্ষা করেন না। বলুনতো পিতার সমতা ব্যতিত দু’পরিবারের সন্তানদের মাঝে সম্প্রীতির বাতাবরণ কী সম্ভব? জানালা বন্ধ রেখে আলোর প্রত্যাশা নয় কী? রাস্ট্রের অবস্থাও আজ অনুরূপ। বিশেষ সম্প্রদায়ের প্রতি রয়েছে রাস্ট্রের দূর্বলতা! এত প্রাপ্তির পরও সেই সম্প্রদায়ের মাঝে নেই কৃতজ্ঞতাবোধ। বরং তাদের কন্ঠে অপূর্ণতা, অপ্রাপ্তি ও অতৃপ্তির সূর। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রোগ্রামে সরকারের অনুমতির প্রয়োজন পড়ে না অন্যদিকে বৃহত্তর সম্প্রদায়ের ধর্মীয় প্রোগ্রামে অনুমতি দেয়া হয় না। রাস্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা, চাকুরী ও পদায়নের ক্ষেত্রেও বিশেষ সম্প্রদায় পায় অগ্রাধিকার, অন্যদিকে বৃহত্তর সম্প্রদায়ের ভাগ্যে জুটে লাঞ্চনা-বঞ্চনা, হামলা-মামলা ও কারাগার। এই যদি হয় একজন পিতার দায়িত্বে থাকা রাস্ট্রের আচরণ! তাহলে রাস্ট্রের সন্তান তথা জনসাধারণের মাঝে কীভাবে বইবে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বাতাবরণ?
দুই. দেশের ধর্মীয়নেতা ও ধর্মগুরুদের মাঝে দূরত্ব ও ব্যবধান। তাদের মাঝে নেই পরস্পর দেখা-সাক্ষাৎ ও সৌজন্যতাবোধের সংস্কৃতি। তাদের এই ব্যবধান যদি কমানো যায় তাহলে তৃণমূলেও সম্প্রীতির সুবাতাস বয়ে যাবে। বিগত বছরে আরাকানে যখন মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর বিশেষ সম্প্রদায় কর্তৃক হত্যা, জ্বালাও, পোড়াও নির্যাতন ও নিপীড়ন চলছিল তখন বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ধর্মগুরুদের একটি প্রতিনিধি দল শায়খুল ইসলাম ও আমিরে হেফাজত আল্লামা শাহ্ আহমদ শফীর (রহিমাহুল্লাহু) সাথে দেখা করেন। তাদের সেই সৌজন্য সাক্ষাৎ ও কুশল বিনিময় গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রচার করা হয়। সেই কুশল বিনিময়ের সংস্কৃতি সকল সম্প্রদায়ের অনুসারীদের মাঝে আলোড়ন সৃষ্টি করে। যা দেশের আপামর জনগণ ও আর্ন্তজাতিক মহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে, সকলের প্রশংসা কুড়িয়েছে এবং আমাদের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ভীতকে মজবুত করেছে। যার ফলশ্রুতিতে আরাকানে মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর এতো সহিংসতার পরও বাংলাদেশে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ওপর একটি ঢিলও কেউ ছুড়েনি। সকল ধর্মের অনুসারীগণ তাদের নিজ নিজ ধর্মীয় নেতাদের সমীহ করেন এবং অনুস্বরণ করেন। ধর্মীয়নেতা ও ধর্মীয়গুরুদের রয়েছে নিজ নিজ সম্প্রদায়ের মাঝে ব্যাপক প্রভাব-প্রতিপত্তি। উচ্চ পর্যায়ে যদি দেখা-সাক্ষাৎ, কুশল বিনিময় ও সৌজন্যতাবোধের সংস্কৃতি চালু করা যায় তাহলে আশাকরা যায়, নিম্ন পর্যায়েও তার ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। গ্রাম পর্যায় ও তৃণমূলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বাতাবরণ বয়ে যাবে।
খলিফাতুল মুসলিমিন সায়্যেদুনা ওমরের (রা.) দরবারে এক সংখ্যালঘু নালিশ নিয়ে এলেন, কে বা কারা তাদের দেবীর নাক-হাত ভেঙ্গে দিয়েছে। খলিফা ওমর (রা.) তার প্রশাসনকে নির্দেশ দিলেন, তদন্ত করে অপরাধীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক। প্রশাসন তদন্ত করেও যখন অপরাধীকে শনাক্ত করা সম্ভব হল না, তখন খলিফাতুল মুসলিমিন অভিযোগকারী সংখ্যালঘু অমুসলিমের হাতে একটি তরবারী তুলে দিয়ে বললেন, ‘তুমি আমার নাক ও হাতে অনুরূপ আঘাত করো’। কেননা, আমি চাই না কাল কিয়ামতের ময়দানে নবীজী (সা.) তোমার পক্ষ হয়ে আমার বিরুদ্ধে মহান রবের দরবারে মামলা দায়ের করুক। অমুসলিম লোকটি খলিফাতুল মুসলিমিনের আল্লাহভীতি ও বিচারে মুগ্ধ হয়ে খলিফাতুল মুসলিমিনের হাতে হাত রেখে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। এ হচ্ছে সত্য ও বাস্তবধর্ম ইসলামের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও সম্প্রীতির নমূনা। মন্দকে কীভাবে মোকাবেলা করতে হবে তার একটি সুন্দর সূত্র পবিত্র সংবিধান মহাগ্রন্থ আল-কুরআনে বর্ণিত হয়েছে। আল্লাহ পাক বলেন, ‘ভাল আর মন্দ সমান নয়, মন্দকে ভাল দ্বারা প্রতিহত করো, তাহলে তোমার শত্রু মিত্রে রূপান্তরিত হবে ;সূরা হামিম সিজদাহ;৩৪। বিশেষ করে, মুসলিম সম্প্রদায়কে মনে রাখতে হবে, আমরা আল-কুরআনের অনুসারী, নবীজীর (সা.) আদর্শে বিশ্বাসী এবং খলিফা ওমরের(রা.) উত্তরসূরী। অতএব, গুজব ও অপপ্রচার, কখনো হতে পারে না, মু’মিনের হাতিয়ার।
পরিশেষে বলতে চাই, নশ্বর এ পৃথিবীতে কোনো কিছুই অমর নয়। যিনি আজ উজির, সচ্ছল ও ক্ষমতাবান হতে পারে কাল তিনি ক্ষমতাহীন, নিঃস্ব ও অসহায়। অপরের দুঃখে যদি আমরা দুঃখিত হতে না পারি, মানুষের বিপদে যদি আমরা পাশে না দাঁড়াই তাহলে এতো আয়োজন শিক্ষা, সংস্কৃতি, রাজনীতি, সভ্যতা ও মানবতা সবকিছু বৃথা!

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Arfan Shah ৩০ অক্টোবর, ২০২১, ১১:৩৮ এএম says : 0
আলহামদুলিল্লাহ্
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন