নজির হোসেন নজু, সৈয়দপুর (নীলফামারী) থেকে
সন্ধ্যা থেকে সারারাত কাটছে আমনের ক্ষেত। আর কাটার মাঝে যার আনন্দ সে হচ্ছে ইঁদুর। ফলে আমন চাষিরা বড় অসহায় হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় কৃষকরা কৃষি বিভাগের পরামর্শে আমন ক্ষেতে পলিথিনের ঝা-া উড়িয়েছেন। বাতাসের শব্দে পলিথিন পত পত শব্দ করে আর ইঁদুর মনে করে কেউ আসছেন। তাই ভয়ে পালিয়ে যায়। এতে করে উপজেলার কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। নীলফামারী জেলার সৈয়দপুরে আমন মৌসুমের শুরুতে প্রচ- খরা ও অনাবৃষ্টির কবলে পড়ে। ফলে আমনের চাষাবাদ নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েন কৃষকরা। এ অবস্থায় সেচযন্ত্র চালিয়ে আমনের চারা রোপণ করেন তারা। পরবর্তীতে আকাশের বৃষ্টিপাতে লকলকিয়ে বেড়ে উঠে আমনের ক্ষেত। এতে করে কৃষকের মাঝে স্বস্তি ফিরে আসে। কিন্ত এরই মধ্যে পোকার আক্রমণ ও ইঁদুরের উপদ্রুব কৃষকদের চিন্তায় ফেলেছে। কৃষকরা পোকা দমনে বিভিন্ন কীটনাশক ব্যবহার করলেও ইঁদুর তাড়াতে এই কীটনাশক ব্যবহারে কোনো কাজ হচ্ছে না। সন্ধ্যার পর আমনের ক্ষেতে ইঁদুর এসে গাছের গোড়ায় কেটে দিচ্ছে। পরদিন সেই আমনের গাছ গবাদিপশুকে খাওয়ানো ছাড়া কোনো উপায় থাকছে না। ফলে তারা চিন্তিত হয়ে কৃষি বিভাগের দ্বারস্থ হন। কৃষি বিভাগ আমনের ক্ষেতে পলিথিন ঝা-া উড়ানোর পরামর্শ দেন। উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের বাকডোকরা গ্রামের কৃষক মোজাক্কের জানান, আমন ক্ষেত ইঁদুরের উপদ্রুব থেকে বাঁচাতে পলিথিনের নিশান উড়িয়ে উপকার পেয়েছেন। ইঁদুর কাটার মধ্যে এক ধরনের আনন্দ অনুভব করে। তিনি বলেন, নদী-নালা এলাকার জমিতে মূলত ইঁদুরের উপদ্রুব সবচেয়ে বেশি। উপজেলার কামারপুকুর, কাশিরাম, বেলপুকুর, খাতামধুপুর, বাঙ্গালিপুর, বোতলাগাড়ি ইউনিয়ন ও সৈয়দপুর পৌর এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় শতাধিক একর জমিতে ইঁদুরের উপদ্রুব দেখা দিয়েছে। সৈয়দপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ হোমায়রা ম-ল বলেন, এবছর উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে প্রায় ৮ হাজার ১৯০ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে আবাদ হয়েছে আরো বেশি জমিতে। ক্ষেতের পোকামাকড় ও ইঁদুরের উপদ্রুব থেকে ফসল রক্ষা করার জন্য মাঠপর্যায়ে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা কাজ করছেন। উপজেলায় কি পরিমাণ জমিতে ইঁদুরের উপদ্রুব হয়েছে তার জন্য কাজ করছেন কৃষি বিভাগের লোকজন বলে জানান তিনি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন