কবির হোসেন, কাপ্তাই (রাঙ্গামাটি) থেকে
পার্বত্যঞ্চলের গাছপালা নেড়া পাহাড়ে পরিণত হওয়ার দরুন এ অঞ্চল হতে বন্যপ্রাণী বিলুপ্ত হতে চলছে। তেমনি রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার দক্ষিণ বনাঞ্চলের বন দিন দিন ধবংস হওয়ার ফলে বন্যপ্রাণী খাদ্যাভাবে লোকালয়ে এসে হামলা ও ধ্বংসলীলা চালাচ্ছে। পাশাপাশি হামলার শিকার হয়ে বহু বন্যপ্রাণী বনদস্যুর হাতে মারা পড়ছে। বন্যপ্রাণীর হামলার শিকার হয়ে ইতোমধ্যে কয়েকজন মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। গত এক বছরে কাপ্তাইয়ে ৪টি বন্যহাতি মারা যাওয়ার ফলে প্রশাসনের পক্ষ হতে তেমন কোনো জোড়ালে পদক্ষেপ না নেয়ায় শুধু বন্যহাতি নয় পাশাপাশি হরিণ, সাপ, বানরসহ বিভিন্ন বন্যপ্রাণী পার্বত্য এলাকা হতে ইতোমধ্যে হারিয়ে যেতে বসেছে। যার কারণে পার্বত্যাঞ্চলের জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়েছে। পার্বত্যাঞ্চলের বন বিভাগের বনজসম্পদ যে হারে ধ্বংস হচ্ছে তাতে করে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে পার্বত্যাঞ্চল হতে বন্যপ্রাণীর কোনো চিহ্ন থাকবে না বলে অনেক অভিজ্ঞমহল মত প্রকাশ করে। অভিজ্ঞমহল বলেন, যে হারে বন ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে সে পরিমাণ বনজসম্পদ লাগানো হচ্ছে না। বন ধ্বংসের পাশাপাশি বনের প্রাণীসম্পদ ও জীববৈচিত্র্য হুমকি মুখে পড়েছে। বনের খাদ্য ধ্বংস হওয়ার ফলে বণ্যপ্রাণীরা লোকালয়ে এসে রাতে-কিংবা দিনে তা-বলীলা চালাচ্ছে। এদিকে পশুখাদ্য বাগান নামে থাকলেও বাস্তবে কোনো কিছুই নেই। বন্যপ্রাণীরা খাদ্য না পেয়ে লোকালয়ে এসে হামলা করার দায়ে কাপ্তাইয়ে গত তিন/চার মাসে কয়েকজন কৃষক মারা যান। অভিজ্ঞমহল মনে করেন বনের মধ্যে খাদ্য থাকলে ঐসকল বন্যপ্রাণীরা লোকালয়ে না এসে বনের মধ্যে থাকত। বনের আভাসস্থল ধ্বংস হওয়ার দরুন প্রতিনিয়ত লোকালয়ে এসে হামলা চালাচ্ছে। কাপ্তাই নৌবাহিনী এলাকা ও ব্যাঙছড়ি, কাপ্তাই-চট্টগ্রাম সীতার পাহাড় এলাকায় প্রতিনিয়ত বন্যহাতির আনাগোনায় বসবাসরত ও সড়কে চালকগণ আতঙ্ক বিরাজ করছে এবং আতঙ্কের মধ্যে সড়কে চলাচল করছে। এদিকে নাম না প্রকাশ করার শর্তে এক বনকর্মকর্তা বলেন, বনের মধ্যে পশুখাদ্য না থাকায় এবং বন কমে যাওয়ার ফলে বণ্যপ্রাণী লোকালয়ে এসে হামলা করছে। যার ফলে বিভিন্ন সময় শিকারিদের হাতেও বন্যপ্রাণী ধরা পড়ে মারা যাচ্ছে। এবং বন হতে বন্যপ্রাণী বিলুপ্ত হতে চলছে। পার্বত্যাঞ্চলের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য ধরে রাখতে হলে বনমন্ত্রণালয় ও বনবিভাগ হতে আরো জোরদার প্রয়োজন বলে তিনি মন্তব্য করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন