চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের প্রধান ছাত্রাবাসে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে মারামারির পর থেকে এই ছবিটি ঘুরছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। ছবিটি দেখলেই বোঝা যায়, ভুক্তভোগী কতটা গুরুতর আহত। ফেসবুকে ভাইরাল ছবিটিতে নেটিজেনদের চোখ আটকে যাচ্ছে বারবার।
ভাইরাল ছবিতে দেখা যাচ্ছে, নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) শোয়া এক তরুণের মাথা ব্যান্ডেজে মোড়ানো। ধবধবে সাদা ব্যান্ডেজের ওপর লেখা, ‘হাড় নেই, চাপ দেবেন না।’ লেখার নিচে একটা বিপজ্জনক চিহ্নও এঁকে দেওয়া হয়েছে। চোখও সাদা ব্যান্ডেজে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। ফেসবুকে ছবিটি ভাইরাল হলে তার মাথায় এমন লেখার রহস্য নিয়ে জল্পনা শুরু হয়। অবশ্য তার মাথায় এমন লেখার রহস্য জানা গেছে চিকিৎসকদের কাছ থেকে।
সংজ্ঞাহীন এই তরুণের নাম মাহাদি জে আকিব। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের (চমেক) এমবিবিএস দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র তিনি। গত শুক্রবার রাতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের প্রধান ছাত্রাবাসে ছাত্রলীগের দুটি পক্ষের মধ্যে মারামারির জের ধরে শনিবার আকিবের ওপর হামলা হয়। মাথায় মারাত্মক জখম নিয়ে ভর্তি হন চমেক হাসপাতালে। আঘাত গুরুতর। অস্ত্রোপচারের পর তার ঠাঁই হয় আইসিইউতে। এর পর থেকে নিথর পড়ে আছেন আকিব।
অস্ত্রোপচারের দায়িত্বে থাকা সহকারী অধ্যাপক মাহফুজুল কাদের বলেন, আঘাত খুব বেশি ছিল। তার মস্তিষ্কে এবং মাথার হাড়ে মারাত্মক আঘাত রয়েছে। মাথার হাড়ের একটা অংশ খুলে আপাতত তার পেটের চামড়ার নিচে রাখা হয়েছে। কিছুটা উন্নতি হলে সেটা আবার আগের জায়গায় প্রতিস্থাপন করা হবে।
ফেসবুকে ক্ষোভ জানিয়ে ইসরাত জাহান, ‘‘এই হচ্ছে আমাদের দেশের অবস্থা। ওরে আজকে যাকে এই মৃত্যুমুখে ঠেলে দিলেন ইনি আর ২বছর পরে ডাক্তার হয়ে আপনাকে বাঁচানোর চেষ্টা করবেন। বিবেক কোথায় রেখে এসেছেন? আল্লাহ উনাকে সুস্থতা দান করুন। আমীন।’’
ফজিলা জেসমিন লিখেছেন, ‘‘কী লিখব ভাষা হারিয়ে ফেলেছি!এই ছেলেটাকে মেডিকেলে ভর্তি করার পেছেনে মা,বাবার কত সাধনা,কত শ্রম কত ত্যাগ,কত স্বপ্ন,কত ব্যয়।খোদা না করুক যদি এই ছেলেটার কিছু হয়ে যায় তা হলে এর দায় কে নেবে???রাষ্ট্র কী পারবে তার মা বাবার লালিত স্বপ্নকে ফিরিয়ে দিতে?এরা তো একই মতার্দশের ছিল!তবু কেন এই হানাহানি!কবে বন্ধ হবে এই অসুস্থ রাজনীতি?যাঁদের কে ঘিরে এই হানাহানি তাঁদের সন্তানেরা বিদেশে বড় হচ্ছে!সাধারন জনগনের সন্তানরা হচ্ছে বলির পাঁটা।কে দেবে এর জবাব?’’
ফায়েদ কানন লিখেছেন, ‘‘ভার্সিটিতে উঠলেই ছাত্ররাজনীতি যেনো বাধ্যতামূলক! কিন্তু যাদের হাত ধরে অল্প বয়সী এই ছেলেগুলো রাজনীতিতে জড়ায় তাদের সুষ্ঠু রাজনীতি সম্পর্কে জ্ঞান আছে কিনা সন্দেহ! শুধুমাত্র ক্ষমতা আর কিছু টাকার লোভে রাজনীতির অপব্যবহারে ব্যস্ত।’’
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার রাতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের প্রধান ছাত্রাবাসে ছাত্রলীগের দুটি পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়। এই ঘটনার জের ধরে শনিবার আকিবের ওপর হামলা হয়। চমেক ছাত্রলীগে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী এবং সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের দুটি পক্ষ সক্রিয় রয়েছে।আকিব শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর পক্ষের বলে জানা গেছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন