নীলফামারীর সৈয়দপুর রেলওয়ে হাসপাতালে একজন ডাক্তার দিয়ে চলছে স্বাস্থ্যসেবা। ওই হাসপাতালে অবকাঠামো, বেড, অপারেশন থিয়েটার সবই আছে, শুধু নেই প্রয়োজনীয় চিকিৎসক ও জনবল। ফলে কচ্ছপ গতিতে চলছে লাল ইটের গাঁথুনির সৈয়দপুর রেলওয়ে হাসপাতালটি।
১৮৭০ সালে দেশের বৃহত্তম সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানাটি প্রতিষ্ঠিত হয়। সেই সুবাদে এই হাসপাতালটিও প্রতিষ্ঠা করা হয়। এক সময় হাসপাতালে রোগীদের ভিড় লেগেই থাকতো এবং চিকিৎসা সেবার মানও ছিল বেশ ভাল। কিন্ত এখন আর সেই জৌলুস নেই।
মাত্র একজন চিকিৎসক আউডডোর ও ইনডোরসহ সব চিকিৎসা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। ফলে রেলের বর্তমান ও অবসরে যাওয়া কর্মচারী ও পোষ্যরা হাসপাতালমুখী হচ্ছেন না।
হাসপাতালটিতে রয়েছে ৮২টি বেড। আছে অপারেশন থিয়েটারও। যদিও সেটি আধুনিক মানের নয়। এক্সরে রুম বর্তমানে তালাবদ্ধ। নেই কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থা। চিকিৎসক আছেন মাত্র একজন, তাই রোগীও আসে না। অন্যান্য সুযোগ সুবিধা না থাকায় তারা অন্যত্র চিকিৎসা নিচ্ছেন।
সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় যে কোনো শ্রমিক-কর্মচারী দুর্ঘটনার শিকার হলে প্রথমে তাকে এই হাসপাতালে আনা হয়। কিন্ত চিকিৎসা সুবিধা না থাকায় পরিবারের লোকজন অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে নিয়ে যায়।
হাসপাতালটিকে মেডিক্যাল কলেজ করার ঘোষণা দিয়েছিলেন সাবেক রেলমন্ত্রী প্রয়াত সুরঞ্জিত শেনগুপ্ত। সে কাজও এগোয়নি। দু’একটি সভা ছাড়া কোনো অগ্রগতি হয়নি। রোগী আসে না, তাই সব সময় ভুতুড়ে পরিবেশ বিরাজ করছে হাসপাতালটিতে।
বিভাগীয় চিকিৎসা কর্মকর্তা (ডিএমও) আনিসুল হক জানান, হাসপাতালে অনুমোদিত পদের সংখ্যা ১২৪ জন। সেখানে কর্মরত রয়েছেন মাত্র ৬৫ জন। সার্জারি, গাইনি ও প্রয়োজনীয় বিভাগে ৭ জন চিকিৎসকের স্থলে কর্মরত আছেন মাত্র একজন।
তিনি বলেন, এতবড় হাসপাতাল, অথচ নেই কোনো অ্যাম্বুলেন্স। ফলে জটিল রোগীদের রমেক হাসপাতালে পাঠাতে সমস্যা হয়। আউডডোরে গড়ে প্রতিদিন ১০/১২ জন রোগী চিকিৎসার জন্য আসেন।
তিনি আরও বলেন, হাসপাতালটিতে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। শুধু সরকার একটু নেক নজর দিলেই এবং চিকিৎসক সঙ্কট দূর করা হলে অতীতের জৌলুস ফিরে আসবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন