নাটোরের ধানের জমিগুলোতে দেখা দিয়েছে আমনের শীষের দোলা। হেমন্তের বাতাসের সাথে আমন ধানের শীষের দোলায় জুড়িয়ে যায় চোখ। যতদূর দৃষ্টি যায় শুধু আমন ধানের শীষ। কাঁচা হলুদের রঙে রাঙিয়ে আছে মাঠ। আর কিছুদিন পরেই পাকা ধান তুলবে কৃষক। শুরু হবে নবান্ন। ফুটবে কৃষকের মুখে হাসি। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এই মৌসুমে আমনের ব্যাপক ফলনের সম্ভাবনা দেখছে।
নাটোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে এ বছর ৬৭ হাজার ৭৮৫ হেক্টর লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে জেলায় ৭২ হাজার ৬৩০ হেক্টর জমিতে রোপা-আমন ধানের আবাদ করা হয়েছে। অর্থাৎ চার হাজার ৮৪৫ হেক্টর অতিরিক্ত জমিতে রোপা আমন ধানের আবাদ হয়েছে। বিভাগ আরোও জানায় খরিপ-২ মৌসুমে জেলায় রোপা আমনের মোট ৭২ হাজার ৬৩০ হেক্টর আবাদী জমির মধ্যে সর্বোচ্চ সিংড়া উপজেলায় আবাদ হয়েছে ২৩ হাজার ৪৩৫ হেক্টর জমিতে। তাছাড়া বড়াইগ্রামে ১৫ হাজার ৪৭৫ হেক্টর, নাটোর সদর উপজেলায় ১০ হাজার ৯৫৫ হেক্টর, লালপুরে ৭ হাজার ৯৫০ হেক্টর, বাগাতিপাড়ায় ৫ হাজার ৪৬৫ হেক্টর, গুরুদাসপুরে ৫ হাজার ৮০০ হেক্টর এবং নলডাঙ্গা উপজেলায় ৩ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধানের আবাদ করা হয়েছে। আবার আবাদী জমির মধ্যে ৬৮ হাজার ৪৯৪ হেক্টরে উচ্চ ফলনশীল জাত, ৩ হাজার ৪৮৪ হেক্টরে হাইব্রিড এবং ৬৫২ হেক্টরে স্থানীয় জাতের আমন ধান চাষ করা হয়েছে।
হালতি বিল অধ্যুষিত নলডাঙ্গা উপজেলার পিপরুল বাঁশভাগ এলাকার কৃষক তজরুল ইসলাম চলতি মৌসুমে ৭ বিঘা জমিতে রোপা আমন ধান আবাদ করেছেন। মিনিকেট, স্বর্ণা-৫, বিনা-৭ এবং বিরি-৪৯ জাতের ধান আবাদ করেছেন বলে জানান তিনি। তজরুল ইসলাম বলেন, এবার এই হেমন্তে ভালোর বৃষ্টি হয়েছে। অতিরিক্ত বৃষ্টিতে আবাদী জমি স্যাত স্যাতে থাকছে। এর ফলে ধান গাছে মাজরা পোকা এবং বাদামী ঘাস ফড়িংয়ের আক্রমণ লক্ষ্য করা গেছে। এজন্যে বাড়তি ওষুধ ব্যবহার করতে হয়েছে। এরফলে উৎপাদন খরচ বাড়ছে।
বড়হরিশপুরের শংকরভাগ এলাকার কৃষক আমির আলী জানান, তিনি ৪ বিঘা জমিতে আমন ধানের আবাদ করেছেন। এবার আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় ধানের শীষ ভালো হয়েছে। যদি এমন আবহাওয়া থাকে তবে ভালো ফলন পাওয়া যাবে ইনশাআল্লাহ্।
নাটোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মাহমুদুল ফারুক বলেন, এবার বৃষ্টিপাত কম হওয়ার কারণে পরাগায়ন ঠিকমত হয়েছে, আবার খরার প্রকোপও ছিল না। তাই আমন ধানের শীষ পুষ্ট হয়েছে। যদিও কোন কোন এলাকার আমন ধানের ক্ষেতে কারেন্ট পোকার উপদ্রব দেখা গিয়েছিল কিন্তু কৃষকদের সঠিক দিক নির্দেশনা দেবার কারণে কারেন্ট পোকার উপদ্রব আর নাই। এসব কারনে এবার নাটোরে আমনের আবাদের ব্যাপক ফলনের সম্ভাবনা আছে। এতে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন