জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত আমরারা নেয়নি এ সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক বলে জানিয়েছন জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব আনিছুর রহমান। তিনি বলেছেন, ডিজেলের দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক, আমলারা এতোবড় সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। এই কাজটি আমরা (আমলারা) করিনি। গতকাল বৃহস্পতিবার এফইআরবি আয়োজিত ভার্চুয়াল সেমিনারে তিনি এ মন্তব্য করেন।
এফইআরবির চেয়ারম্যান অরুন কর্মকারের সভাপতিত্বে জ্বালানি বিভাগের এই সিনিয়র সচিব বলেন, দাম বাড়ানো ছাড়া আর কোনো অন্যথা ছিল না। আমরা ৬ মাস পর্যবেক্ষণে রেখেছিলাম। যখন আর বিকল্প অর্থায়নের সুযোগ নেই দেখেছি, তখন দাম বাড়াতে বাধ্য হয়েছি। আন্তর্জাতি বাজারে দাম আরও বাড়লে কি ডিজেলের দাম বাড়বে, সেই প্রশ্নের উত্তর আমার কাছে এই মুহ‚র্তে নেই। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমলে সঙ্গে সঙ্গে কমিয়ে আনা হবে। তবে পরিবহন কিংবা অন্য ক্ষেত্রের দাম কমবে কিনা সে দায়িত্ব আমরা নিতে পারবো না। দাম বৃদ্ধির সঙ্গে ম্যাক্রাইকোনমিক ইমপ্যাক্ট অবশ্যই আছে, আমি এর সঙ্গে দ্বিমত করি না। তিনি বলেন, অনেকেই প্রশ্ন করেন পেট্রোল অকটেনের দাম বাড়িযে লোকসান সমন্বয় করা যেতো। তাদের উদ্দেশ্যে বলছি মোট জ্বালানি তেলের ৭৩ শতাংশ ডিজেল আর পেট্রোল-অকটেন ব্যবহার হয়ে ১০.৮২ টাকা। পেট্রোল অকটেনে ৪০ টাকা করে বাড়ালেও এই মুল্য সমন্বয় করা যেতো না। আর কেরোসিনের দাম না বাড়ালে ভেজাল মেশানোর একটি সম্ভাবনা থেকে যেতো। গ্যাসের দাম, বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর বিষযে ভাবছি না। বাড়াতে হলে বিইআরসিতে যেতে হবে।
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের চেয়ারম্যান এবিএম আজাদ বলেন, এককভাবে জ্বালানির দাম বাড়ানোর এখতিয়ার নেই বিপিসির। বিপিসি আমদানি করে, বিক্রি করে। জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্তটি সরকারের সিদ্ধান্ত। বিপিসি শুধু এটা বাস্তবায়ন করেছে।
ক্যাবের জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক শামসুল আলম বলেন, বাস মালিক সমিতি আর রেগুলেটর ভাইস-ভারসা হয়ে গেছেন। এখন মালিকরা রেগুলেটরের ভ‚মিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। প্লেয়ার রেগুলেটর হওয়ায় অরাজক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তেলের দাম বাড়ানোর প্রক্রিয়াটি আইনসিদ্ধ হয়নি। আইনে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর এখতিয়ার বিইআরসি দেওয়া হয়েছে। অবিলম্বে তেলের দাম বৃদ্ধির আদেশ প্রত্যাহার করে বিইআরসিতে পাঠিয়ে দেওয়া হোক। তারা যাচাই-বাছাই করে দেখুক আদৌ তেলের দাম বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা আছে কি না। বিপিসির কার্যক্রম নিরীক্ষা করা উচিত, তাদের আয় ব্যায়ে স্বচ্ছতা নেই।
এ ছাড়াও বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী বেলায়েত হোসেন, জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ইজাজ হোসেন, বিকেএমইএ নির্বাহী সভাপতি একেএম হাতেম, সিপিডির পরিচালক (গবেষণা) খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম,বিজেএমইএ পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল, যাত্রী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হক চৌধুরী প্রমূখ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন