যশোরের মণিরামপুরে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের আর মাত্র ৬ দিন বাকি। আগামী রবিবার (২৮ নভেম্বর) উপজেলার ১৬ টি ইউনিয়নের ১৫৯টি ভোটকেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এ নির্বাচন। উপজেলার অন্য ইউনিয়নের ভোটকেন্দ্রগুলো ভোট গ্রহণের উপযোগী হলেও কুলটিয়া ইউনিয়নের চারটি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণের পরিবেশ নেই।
ভবদাহের জলাবদ্ধতায় পানিবন্দী হয়ে আছে এ ইউনিয়নের ১, ২, ৩ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের চারটি ভোটকেন্দ্র। দীর্ঘ লাইন হলে এ কেন্দ্রগুলোতে পানিতে দাঁড়িয়ে ভোটারদের ভোট দেয়ার অপেক্ষায় থাকতে হবে।
রবিবার (২১ নভেম্বর) সরেজমিন দেখা গেছে, ১ নম্বর হাটগাছা-সুজাতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ২ নম্বর মশিয়াহাটি ডিগ্রি কলেজ ও ৬ নম্বর পদ্মনাথপুর সরকারি প্রাথমিক ও সংলগ্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের মাঠে হাঁটু পানি জমে আছে। পানি রয়েছে ৩ নম্বর ওয়ার্ডের লখাইডাঙা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রেও।
ভোট নিকটবর্তী হলেও এ চার কেন্দ্র সংস্কারে কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। এছাড়া কেন্দ্রগুলোর জলাবদ্ধতা সংক্রান্ত কোনো তথ্য নেই উপজেলা নির্বাচন অফিসে।
সরেজমিন দেখা গেছে, কুলটিয়া ইউনিয়নের ১ নম্বর হাটগাছা-সুজাতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কক্ষগুলো শুকনো থাকলেও কেন্দ্রের মাঠে হাঁটু পানি। এ কেন্দ্রে বাজেকুলটিয়া ও হাটগাছা দুই গ্রামের ১ হাজার ৮৬ জন নারী ও পুরুষ ভোটার রয়েছেন।
ইউনিয়নের ৬ নম্বর পদ্মনাথপুর সরকারি প্রাথমিক ও সংলগ্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে আড়শিংগাড়ি, পোড়াডাঙা ও পদ্মনাথপুর গ্রামের ১ হাজার ৫৬৩ জন ভোটার রয়েছেন। এ দুই বিদ্যালয়ের মাঠে জমে আছে হাঁটুপানি।
ইউনিয়নের ২ নম্বর মশিয়াহাটি ডিগ্রি কলেজ মাঠে হাঁটু পানি। কলেজের ভবনের সামনে ৩-৪টি ডিঙি নৌকা ভাসছে। এ কেন্দ্রে সুজাতপুর গ্রামের ১ হাজার ৪২৫ জন ভোটার রয়েছেন।
কুলটিয়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর লখাইডাঙা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে কুলটিয়া ও লখাইডাঙা গ্রামের ১ হাজার ৯০৩ জন ভোটার রয়েছেন। এ কেন্দ্রের মাঠেও পানি রয়েছে।
এদিকে সরকারি কোনো সহযোগিতা না পেলেও গ্রামবাসীর উদ্যোগে বালু ফেলে পদ্মনাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠ ভরাটের কাজ চলতে দেখা গেছে। তবে পদ্মনাথপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে প্রবেশের কোনো সুযোগ নেই। সেখানে শ্রেণিকক্ষের ভেতরে ও বাইরে হাঁটুপানি জমে আছে।
উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, কুলটিয়া ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৭ জন, ১ নম্বর ওয়ার্ডে ইউপি সদস্যপদে দু’জন, ২ নম্বর ওয়ার্ডে সদস্যপদে দু’জন ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডে সদস্যপদে চারজন লড়ছেন। এ তিন ওয়ার্ডে সংরক্ষিত নারী সদস্য পদপ্রার্থী রয়েছেন পাঁচজন। আর ৬ নম্বর ওয়ার্ডে মেম্বর পদে লড়ছেন ছয়জন।
পদ্মনাথপুর গ্রামের শফিকুল ইসলাম বলেন, পদ্মনাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে হাঁটু পানি। বহুবছর ধরে এ কেন্দ্রে ভোট হয়। কেন্দ্র যেন সরে না যায় সেজন্য আমরা গ্রামবাসী টাকা দিয়ে বালু ফেলে মাঠ ঠিক করার চেষ্টা করছি।
হাটগাছা-সুজাতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক লাকী মজুমদার বলেন, আমার বিদ্যালয়ের মাঠে হাঁটুপানি জমে আছে। বিদ্যালয়ের শৌচাগারের সমস্যা প্রকট। এ বিদ্যালয়টি ভোটকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার হবে। মাঠ সংস্কার নিয়ে এখন পর্যন্ত কেউ আমাদের সাথে যোগাযোগ করেননি।
লখাইডাঙা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রতীমা রায় বলেন, এ বিদ্যালয়টি ভোটকেন্দ্র। বিদ্যালয়ের মাঠে পানি জমে আছে। পানি সরানো নিয়ে নির্বাচন অফিস আমাদের সাথে কোনো কথা বলেননি।
মনিরামপুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আব্দুর রশিদ বলেন, কুলটিয়া ইউনিয়নের চারটি ভোটকেন্দ্রে পানি থাকার বিষয়টি আমার জানা ছিলো না। কেন্দ্রগুলো ভোট গ্রহণের উপযোগী করতে উদ্যোগ নেয়া হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন