শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

‘শিক্ষার্থীরা যেন জ্ঞান-বিজ্ঞান এবং বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চায় আসক্ত হোন, অন্যকিছুতে নয়’ : জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ভিসি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৩ নভেম্বর, ২০২১, ৮:৩৬ পিএম

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান বলেছেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্ভাসিত বিশ্ব নাগরিক হিসেবে তৈরি করতে চাই। যেন সমাজে প্রগতির ধারা অব্যাহত থাকে। এতে সৃজনশীলতায়, সংস্কৃতি, ক্রীড়ার নৈপুণ্যে ও দক্ষতায় সমৃদ্ধ হবে আমাদের আগামীর প্রজন্ম। এই প্রজন্ম যেন জঙ্গিবাদ, সাম্প্রদায়িকতা, হতাশাগ্রস্থ ও বিষণ্ণ হয়ে অন্য কিছুতে আসক্ত না হয়। আমার শিক্ষার্থীরা যদি কোন কিছুতে আসক্ত হয়, তা যেন হয়- সৃজনশীলতায়, জ্ঞান চর্চায়, বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চায়, ক্রীড়া অনুশীলনে। সেই আসক্তি আমরা সারা দেশব্যাপী ছড়িয়ে দিতে চাই, মুজিববর্ষের চেতনাকে ঘিরে।’

গত সোমবার বিভাগীয় পর্যায়ে খুলনায় সরকারি ব্রজলাল কলেজে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত ‘মুজিববর্ষ আন্তঃকলেজ ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা-২০২১’ এর বিভাগীয় পর্যায়ের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

প্রফেসর মশিউর রহমান বলেন, ‘জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক মানোন্নয়নের চ্যালেঞ্জে যদি জিততে হয় শিক্ষকরা অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে। কিন্তু এর দায়িত্ব নিতে হবে শিক্ষার্থীদের। তাদের নিজেদের স্বার্থে। আপনারা যারা আজকে ছোট পরিসরে এখানে আছেন। আপনাদের গানের অনুশীলন, সৃষ্টিশীল, সৃজনশীল ভাবনার মধ্যদিয়ে আপনার পাশের বন্ধুটি যেন এই আস্থাটি খুঁজে পায়- জীবন সবসময় ইতিবাচক। জীবন সবসময় উন্নয়নমুখী, সুন্দরের পক্ষে। এর বাইরে অন্য কিছু নেই। এটি আপনাদের নিশ্চিত করতে হবে।’

ভিসি বলেন, ‘কোভিড একটি চ্যালেঞ্জ আমাদের শিখিয়ে দিয়ে গেছে- বিশ্বের যেখানে যা কিছু ঘটুক, বিশ^ময় সেটি ছড়িয়ে পড়ে আমাদের জীবন বিপন্ন করে দিতে পারে। কিন্তু মানুষ হেরে যেতে পারে না। বিজ্ঞান হেরে যেতে পারে না। একজন শিল্পী, সৃজনশীল মানুষ, কাব্যের-সঙ্গীতের মানুষ, ক্রীড়ার মানুষ, দেশপ্রেমিক মানুষ অন্যদেরকে অনুপ্রেরণা দিতে পারে। এরা সংখ্যায় অল্প হতে পারে। কিন্তু এদের শক্তি অসীম হতে হবে। আমরা এই কর্মকান্ডের মাধ্যমে একটি সাংস্কৃতিক জাগরণ দেশব্যাপী ছড়িয়ে দিতে চাই। একারণেই নানা প্রতিকূলতার এই বছরেও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার আয়োজনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। আগামী বছরে আমরা এই প্রতিযোগিতাকে এমনভাবে ছড়িয়ে দিতে চাই- যেন প্রতিটি কলেজে প্রতিটি শিক্ষার্থী- সে গান জানুক বা না জানুক, সে গান শুনুক। সে ক্রীড়া বুঝুক বা না বুঝুক অন্তত সে যেন অংশগ্রহণ করে এই আবহের মধ্যে সে আসুক। কেননা শুধুমাত্র বাজারমুখী প্রতিযোগিতা, অর্থ-বিত্ত এর পেছনে ছোটা, সনদ নিয়ে চাকরি নিশ্চিত করতে হবে সেটি জীবন নয়। জীবন যদি আনন্দময় হতে হয় তাহলে রবীন্দ্রনাথের কাছে যেতেই হবে। জীবন যদি সুন্দর ও আড়ম্ভর করতে হয় তাহলে নজরুল, সুকান্ত ও জীবনানন্দ এর কাছে যেতে হবে। এই নতুন ভাবনা আপনাদের মধ্যদিয়ে তৈরি হউক। আজকের সাংস্কৃতিক উৎসবের মূল প্রেরণা সেখানে।’

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ভিসি ড. মশিউর রহমান বলেন, ‘আমরা একটি অসাম্প্রদায়িক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক, জাতীয়তাবোধ সম্পন্ন সুন্দর বাংলাদেশকে স্বপ্নের মধ্যে রেখেছি। সেটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব আপনারা নিজ কাঁধে নিয়ে বিশ্বের দক্ষ নাগরিক হবেন। আত্মমর্যাদাবান, মানবিক, সৃজনশীল, সাংস্কৃতিক মানুষ হবেন, ক্রীড়ামোদী মানুষ হবেন। সেটি হতে পারলেই আজকের ছোট আয়োজনের মর্মার্থ সব জায়গায় পৌঁছাবে।’

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উদ্বোধনের পর ভিসি ব্রজলাল কলেজে শিক্ষকদের সঙ্গে এক মতিবিনিময় সভায় মিলিত হন। সভায় উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়ন নিয়ে বিভিন্ন সমস্যা, সম্ভাবনা, মতামত ও প্রস্তাব তুলে ধরে বক্তব্য উপস্থাপন করেন শিক্ষকরা। উপাচার্য তাদের বিভিন্ন দাবি এবং প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে তাদের আশ্বস্ত করে বলেন, ‘শিক্ষকরা এই সমাজে এখনো পূজনীয়, শ্রদ্ধেয়। সমাজ পরিবর্তনে তাদেরকেই অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।’

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন