ফরিদপুর জেলা সংবাদদাতা
ফরিদপুর শহর ও শহরতলীর বিভিন্ন এলাকায় প্রকাশ্যে চলছে মাদকদ্রব্যের রমরমা ব্যবসা। শহরের অভিজাত বাড়িতে নিয়মিত চলছে মাদকদ্রব্য সেবন ও বিক্রয়। জড়িয়ে পড়ছে অভিজাত পরিবারের শিক্ষিত ছেলেমেয়েরা। গত ১৫ অক্টোবর গুহলক্ষীপুর মহল্লার সিদ্দিক মিয়ার বাড়িতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযানে যায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। উক্ত বাড়িতে অভিযানের সময়ে রুম্মন ভূঁইয়া নামের এক ইয়াবা বিক্রেতাকে আটক করে তার দেহ তল্লাসী করে ১৫টি ইয়াবা ট্যাবলেট পায়। ভ্রাম্যমাণ আদালতে হাজির করলে সে আদালতকে জানায় যে দিদার মিয়া ১৮০টি ইয়াবাসহ পালিয়ে গেছে। অন্যান্য সহযোগীদের সাথেও বিপুল পরিমাণ ইয়াবা ছিল। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর সংবাদ নিশ্চিত করেছে যে, তাদের নিকট তথ্য রয়েছে সম্প্রতি সিদ্দিক মিয়ার বাড়িসহ লক্ষীপুর-চুনাঘাটা মহল্লায় ৫০ হাজার ইয়াবার চালান প্রবেশ করেছে। এছাড়া অসংখ্য অভিজাত বাড়িতে এ ধরনের বিক্রয় ও সেবন চলছে। চুনাঘাটার একটি মুদি দোকানেও ব্যবসার আড়ালে ইয়াবা বিক্রয় করে থাকে বলে জানা গেছে। গত ১৫ অক্টোবর দিনগত রাতে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নিলটুলী মহল্লার কাশেম মিয়ার বাড়িতে সন্দেহজনকভাবে অভিযান চালায়। এ অভিযানে কাশেম মিয়ার পুত্র জনি মিয়া (৩২), মাহাবুব খান মিঠু (২৭), পলাশ খান (২৭) ও মেহেদী হাসান (৪২)-কে আটক করে তাদের দেহ তল্লাশী করে ১৩০টি ইয়াবা উদ্ধার করে। এ ঘটনায় ফরিদপুর পুলিশের গোয়ান্দা শাখার উপ-পরিদর্শক আবদুর জব্বার বাদী হয়ে কোতয়ালী থানায় মাদক আইনে মামলা নং- ৪৬, তারিখ ১৬/১০/১৬ দায়ের করেছেন। আটককৃতদের নামে মাদকসহ অসংখ্য মামলা রয়েছে বলে কোতয়ালী থানা পুলিশ জানিয়েছে। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন এবং ফরিদপুর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান খন্দকার মোহ্তেশাম হোসেন বাবর মিয়া বিভিন্ন সভা-সমাবেশে মাদকের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করলেও প্রশাসনের দৃষ্টি ফাঁকি দিয়ে মাদক বিক্রয় ও সেবন চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেই চলেছে। এতদিন আনাচে-কানাচে ও বস্তি এলাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও বর্তমানে তা অভিজাত এলাকায় এমনকি অভিজাত বাড়িতেও স্থান করে নিয়েছে। ফরিদপুরের সচেতন মহলের আশা ইতোপূর্বে ফরিদপুরের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের দায়িত্বে থাকা উপ-পরিচালক মুকুল জ্যোতি চাকমার মত একজন কর্মকর্তার পক্ষেই এহেন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব ছিল। বর্তমান উপ-পরিচালকসহ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের প্রতি জেলা প্রশাসনেরও ধারণা ভালো নেই বলে বর্তমান জেলা প্রশাসক যোগদানের পর অনুষ্ঠিত একটি সভায় তা প্রকাশ পেয়েছে। ইতোমধ্যে পত্রিকায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ভূমিকা সম্পর্কে একাধিক সংবাদ ও প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে যথেষ্ট তৎপরতা লক্ষ্য করা গেছে। তবে অতি দ্রুত আরো তৎপর হবে বলে ফরিদপুর শহরবাসী আশা প্রকাশ করছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন