মাদারীপুর রাজৈর উপজেলার সেনদিয়া গ্রামের শিশু আদুরী হত্যা মামলায় তিন জনকে মৃতদণ্ড দিয়েছে আদালত। সোমবার সকাল ১১টায় মাদারীপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক নিতাই চন্দ্র সাহা এ রায় দেয়। রায়ে একজনকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়। এছাড়া প্রত্যেক আসামিকে পঞ্চাশ হাজার টাকা আর্থিক জরিমানা করা হয়।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন জেলার রাজৈর উপজেলার পশ্চিম সরমঙ্গল এলাকার রফিক হাওলাদারের ছেলে রাজিব হাওলাদার (৪১), কোদালিয়া বাজিতপুরের মুহিত গাছীর ছেলে রিমন হোসাইন ওরফে ইমন গাছী (৩২) ও পিরোজপুর জেলার ভৈরমপুরের রফিকুল ইসলাম মোল্লার ছেলে শফিকুল ইসলাম মোল্লা (৩১)। বিচারক মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি তাদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন। এছাড়া মামলায় বাগেরহাট জেলার সেলিম হাওলাদারের (৪১) বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৫ সালের ২০ সেপ্টেম্বর রবিবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে সেনদিয়া জামে মসজিদে আরবি পড়তে গিয়ে নিখোঁজ হয় টুকু সরদারের মেয়ে আদুরী আক্তার (০৫) । নিহতের বাবা টুকু সরদার বাদী হয়ে ২০১৫ সালের ২২ সেপ্টেম্বর ৬ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত আরো ৪ থেকে ৫ জনকে আসামি করে রাজৈর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলা দায়েরের পরে ওই মসজিদের ইমাম শফিকুল ইসলামকে রাজৈর থানা পুলিশ গ্রেফতার করলে তিনি পুলিশের কাছে পরে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে হত্যার ঘটনা প্রকাশ করে এবং তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী মসজিদের পাশ থেকে আদুরী আক্তারের বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করে। পরবর্তীতে মামলার চার আসামিকে পুলিশ গ্রেফতার করলে তিন আসামি উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে পলাতক রয়েছে। মামলার রায়ের দিন মামলার এক আসামি রিমন হোসাইন ওরফে ইমন গাছী আদালতে উপস্থিত ছিলো। এসময় তিন জনকে মৃত্যুদণ্ড ও এক জনকে খালাস প্রদান করেন আদালত।
নিহতের বাবা টুকু সরদার বলেন, ‘আমার মেয়ে হত্যার রায়ে আমি খুশি হয়েছি। আমার সরকারের কাছে একটাই দাবি এই ফাসির রায় যেন দ্রুত কার্যকর হয়। তাহলে আমার মেয়ের আত্ম শান্তি পাবে।’
মাদারীপুর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মো. সিদ্দিকুর রহমান সিং বলেন, আদুরী নামে এক শিশুকে হত্যা করে লাশ বস্তাবন্দি করে লাশ পুতে রাখা হয়। পরবর্তীতে পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত মসজিদের ইমামকে গ্রেফতার করে এবং তার দেওয়া তথ্যমতে লাশ উদ্ধার করা হয়। এবং ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়।
এই ঘটনায় বিজ্ঞ সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ নিতাই চন্দ্র সাহা এই মামলায় রায় প্রদান করেন। রায়ে ৩ জনকে মৃত্যুদন্ড প্রদান করেন ও একজনকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন। এই রায়ে আমরা রাষ্ট্রপক্ষ সন্তুষ্ট।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন