মঙ্গলবার ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

যশোরে দীর্ঘদিন পর হচ্ছে যুবলীগের বর্ধিত সভা

উজ্জীবিত নেতাকর্মীদের সম্মেলনের প্রত্যাশা

যশোর ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৩০ নভেম্বর, ২০২১, ৪:৩৩ পিএম

যশোরে দীর্ঘদিন পর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে যুবলীগের বর্ধিত সভা। কেন্দ্রীয় যুবলীগের নতাদের উপস্থিতিতে বর্ধিত এই সভায় যুবলীগের সকল মেয়াদ উত্তীর্ণ ইউনিটের সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা হতে পারে। তাই সভাকে ঘিরে যুবলীগ ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত। এদিকে, সভাকে কেন্দ্র করে বর্ণিল সাজে সেজেছে পুরো শহর। বিভিন্ন স্থানে শোভা পাচ্ছে শীর্ষ পদ প্রত্যাশীদের ব্যানার ফেস্টুন। সব মিলে পুরো শহরজুড়ে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে।

জানা গেছে, তিন বছরের জন্য ২০০৩ সালের ১৯ জুলাই যশোর জেলা যুবলীগের সম্মেলন হয়। এতে মোস্তফা ফরিদ আহমেদ চৌধুরীকে সভাপতি ও জহিরুল ইসলাম চাকলাদার রেন্টুকে সাধারণ সম্পাদক করে জেলা যুবলীগের কমিটি হয়। ৫৩ সদস্যের এই কমিটির মেয়াদ ২০০৬ সালে শেষ হয়। এর পর পেরিয়ে গেছে ১৫ বছর। বর্তমান কমিটির সভাপতি পদত্যাগ করে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হয়েছেন। আর সাধারণ সম্পাদক বর্তমানে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক পদের সাথে যুবলীগের পদেও যুক্ত রয়েছেন। একই অবস্থা উপজেলা যুবলীগের কমিটিগুলোতে। তিন মাসের আহ্বায়ক কমিটিতে চার বছর পার হয়েছে সবগুলো উপজেলায়। ২০১৭ সালের ২১ মার্চ যশোর সদর ও শহর যুবলীগ এবং ২৯ মার্চ বাঘারপাড়া ও অভয়নগর উপজেলা এবং এপ্রিল ও মে মাসে মণিরামপুর, কেশবপুর, চৌগাছা ও ঝিকরগাছা উপজেলা যুবলীগের তিন মাস মেয়াদী আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় যুবলীগ। ওই সময় বেশ কয়েকটি উপজেলায় যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটি নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়। অভিযোগ উঠে, ত্যাগী নেতাদের বাদ দিয়ে অর্থের বিনিময়ে পকেট কমিটি অনুমোদন দেয়া হয়েছে। তিন মাসের সেই আহ্বায়ক কমিটি চার বছর পার করেছে। তবুও বহাল তবিয়তে আছে। এসব কমিটির নেতাদের অনেকের বিরুদ্ধেই হত্যা, বোমাবাজি, চাঁদাবাজি, ত্রাণের চাল চুরিসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের অভিযোগ রয়েছে। অনেকে বিতর্কিত কর্মকা-ের জন্য গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছেন। ২০১৮ সালের ২৯ জুন মারা যান ঝিকরগাছা উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ওবাইদুর রহমান উবা। তার মৃত্যুতে পদটি শূণ্য হয়। তিন মাসের আহ্বায়ক কমিটি অভিভাবকহীন ৩ বছরের বেশি সময়। এদিকে, দীর্ঘ সময় ধরে জেলা যুবলীগ মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ায় যুবলীগের রাজনীতি থেকে নিস্ক্রিয় হয় জেলার নেতৃবৃন্দ। পরে যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ ও সাধারণ সম্পাদক মাঈনুল হোসেন খান নিখিলের নির্দেশনায় যুবলীগ কিছুটা গতি পায়। বর্তমানে জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম চাকলাদার রেন্টু ও যুবলীগে পদ প্রত্যাশী সাবেক ছাত্রনেতা শফিকুল ইসলাম জুয়েলের নেতৃত্বে কর্মকা- পালন হয়। কেন্দ্র ঘোষিত সকল কর্মসূচি পালিত হচ্ছে জাকজমকপূর্ণভাবে।
এদিকে, যশোর জেলা, সদর উপজেলা ও শহর যুবলীগের শীর্ষ পদ পাওয়ার জন্য প্রায় ডজন খানেক নেতা দৌড়ঝাঁপ শুরু করছেন। এদের মধ্যে বেশিরভাগই ছাত্রলীগের সাবেক নেতা। পদ প্রত্যাশীরা সবাই রাজনীতির মাঠে সরব রয়েছেন। বুধবার মুসলিম একাডেমী স্কুলের বিপরীতে সিসিটিএস মিলনায়তনে অনুষ্ঠিব্য বর্ধিতসভায় প্রধান অতিথি থাকার কথা রয়েছে কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ সোহেল উদ্দিনের। এছাড়া উপস্থিত থাকবেন কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যক্ষ নবী নেওয়াজ, রফিকুল ইসলাম, ইঞ্জিনিয়ার মৃণাল কান্তি ও আনোয়ার হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুব্রত পাল, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শামীম আল সাইফুল সোহাগ, প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক কাজী সরোয়ার হোসেন, উপ-গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক অ্যাডভোকেট শেখ নবীরুজ্জামান বাবু প্রমুখ।
যশোর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি যুবলীগের পদপ্রত্যাশী আরিফুল ইসলাম রিয়াদ বলেন, জেলা যুবলীগের কমিটি মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ায় নেতারা নিষ্ক্রিয় হয়ে গেছেন। তারা যুবলীগের কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালন করেন না। আওয়ামী লীগের কর্মসূচিতেও অনুপস্থিত থাকেন। যশোরে সাবেক ছাত্রলীগ নেতারাই যুবলীগের কর্মসূচি পালন করছে। আমি করোনাকালে যুবলীগের ব্যানারে মানুষের পাশে ছিলাম। কৃষকের ধান কেটে দিয়েছি, ত্রাণ বিতরণ করেছি। তিনি আরও বলেন, দীর্ঘদিন সম্মেলন না হওয়ায় যুবলীগের নেতৃত্বের বিকাশ হচ্ছে না। বর্ধিত সভায় দ্রুত সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করবে এমনটাই প্রত্যাশা।
যশোর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম জুয়েল বলেন, বিগত দুই দশক ধরে জেলা যুবলীগের সম্মেলন হয় না। আমরা যারা এক দশকের উপর যুবলীগের কর্মী হিসেবে তৃণমূলে কাজ করে যাচ্ছি তারা প্রচন্ড হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছি। দীর্ঘদিন সংগঠন গোছানোর কাজে শ্রম, সময় দিয়ে কাজ করার পরও কোন স্বীকৃতি না পেলে উদ্যম হারিয়ে ফেলবো। এরপর সামনে আবার জাতীয় নির্বাচন। এই পরিস্থিতিতে যুবলীগের কমিটি প্রয়োজন। কেন্দ্রীয় নেতাদের আগমনকে কেন্দ্র করে যশোরে যুবলীগের প্রতিটি নেতাকর্মী বেশ উচ্ছ্বাসিত। এই বিষয়ে যশোর জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম চাকলাদার রেন্টু বলেন, ইতোমধ্যে বর্ধিত সভার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে জেলা যুবলীগ। আনন্দঘন পরিবেশের মধ্য দিয়ে আগামীকাল বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হবে। রাজনৈতিক কর্মকা- গতিশীল করার লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী সভা আহ্বান করা হয়েছে। সভায় গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে বলে জানান তিনি। এই সভার মধ্য দিয়ে জেলা যুবলীগ আরো গতিশীল হবে। জননেত্রী শেখ হাসিনার হাত আরও শক্তিশালী হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন