শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যন্তরীণ

মরু অঞ্চলের প্রাণি দুম্বা এখন বরিশালে

নাছিম উল আলম | প্রকাশের সময় : ৪ ডিসেম্বর, ২০২১, ১২:০১ এএম

বরিশাল মহানগরীর শহীদ জিয়া সড়কে মো. রেজাউল করিম বাদল তুরস্ক প্রজাতির দুম্বার ছোট আকারের নিজস্ব খামার গড়ে তুলেছেন। এতে তিনি ব্যাপক সফলতা অর্জন করেছেন। তার খামারে ৫৬টি তুর্কি দুম্বা ছাড়াও বিভিন্ন প্রজাতির ২০০ ছাগল রয়েছে। নগরীর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল সংলগ্ন জিয়া সড়কের লোহারপুল এলাকার বাদল মূলত একজন বই ব্যবসায়ী। কিন্তু ২০১৮ সালে শখের বসে মেহেরপুর থেকে দুটি তুর্কি দুম্বা ও খুলনা থেকে ৪টি ব্ল্যাক বেঙ্গল প্রজাতির ছাগল সংগ্রহ করে লালন পালন শুরু করেন বাদল। এসব প্রাণির লালন পালন তার কাছে সহজ ও ঝুঁকিমুক্ত মনে হওয়ায় কিছু দিন পরে আরো দু’লাখ টাকা বিনিয়োগ করে নিজ বাড়িতে ছাগল ও দুম্বার খামার গড়ার কাজ শুরু করেন।

এরপরে আর তাকে পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। তার খামারে ৫৬টি তুর্কি দুম্বা ছাড়াও ২শ’র মত ব্ল্যাক বেঙ্গল, তোতাপাড়ি, বৃটল, গুজরী ও দেশি বিভিন্ন প্রজাতির অত্যন্ত হৃষ্টপুষ্ট ছাগল রয়েছে। ৬ জন শ্রমিক সকাল-সন্ধ্যা এসব প্রাণির সেবাযত্ম করছেন। শ্রমিকদের পেছনে মাসে লক্ষাধিক টাকা ব্যয় ছাড়াও ছাগল ও দুম্বার জন্য তিনবেলা দেশিয় ঘাস এবং গম ও ভুট্টার ভুসি খাবার খরচ মিলিয়ে মাসে আরো প্রায় দেড় লাখ টাকা ব্যয় করতে হচ্ছে। তবে তিন মাস পর পর বাদল তার খামারের ছাগল ও দুম্বা বিক্রি করে ৭-৮ লাখ টাকা আয় করছেন। বাদলের খামারের ছাগল ও দুম্বার খ্যাতি ইতোমধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। বিশেষ করে যারা নিজস্ব বা বাণিজ্যিক খামার গড়ছেন, তারা বাদলের খামার থেকে ছাগলের বাচ্চা সংগ্রহ করছেন।

মরুদেশের প্রাণি দুম্বা আমাদের আবহাওয়ার সাথে মানিয়ে নিয়ে ছাগলের সাথে একই খাবার খাচ্ছে বলেও জানিয়েছেন বাদল। আগামী বছর দশেকের মধ্যেই একটি পূর্ণাঙ্গ দুম্বার খামারের সাথে ছাগলের বড় খামার প্রতিষ্ঠা করে নগরীর অন্তত ২০ ভাগ মানুষের কাছে কোরবানির পশু সরবরাহ করার কথাও জানালেন বাদল। তার মতে মূলত মরু অঞ্চলের প্রাণি হলেও দুম্বা আমাদের দেশের আবহাওয়ার সাথে খাপ খাইয়ে নিয়েছে। তার এ খামার প্রতিষ্ঠা এবং দুম্বা ও ছাগলগুলোর পরিচর্যাসহ চিকিৎসা ব্যবস্থাপনার বিষয়ে জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদফতর পরামর্শ সেবা প্রদান করছে বলে জানিয়েছেন।

এ ব্যাপারে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ও ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. নুরুল আলম জানান, আমরা বাদলের খামারটিকে সার্বক্ষণিক অবজার্ভেশনে রেখেছি। মরু দেশের এ প্রাণি আমাদের আবহাওয়ার সাথে কতটা অ্যাডজাস্ট করতে পারে, সেটিই মূলত দেখার বিষয়। আবহাওয়ার সাথে টেকসই হলে এ প্রাণি পালনে ভবিষ্যত ভালো বলেও জানান তিনি। তবে সদ্য বিদায়ী বিভাগীয় পরিচালকের সাথে আলাপ করা হলে তিনি বিষয়টি নিয়ে কিছু জানেন না বলে জানান।

তুরস্ক প্রজাতির এসব দুম্বা প্রতি ৬-৮ মাস পরেই বাচ্চা দিচ্ছে। পাশাপাশি সঠিক পরিচর্যা ও সমন্বিত খাবার পেলে বাচ্চাগুলো এক বছরের মধ্যেই প্রায় ৮০ কেজি ওজনের হবার পরে তা বিক্রির উপযোগী হচ্ছে। ফলে এসব প্রাণি বিক্রি করে ভালো মুনাফা অর্জন সম্ভব বলে জানান খামারি বাদল।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
নূর হোসাইন ৪ ডিসেম্বর, ২০২১, ৬:৩৯ এএম says : 0
অতি চমৎকার সংবাদ! আললাহ পাক তার খামারে আরো বরকত দান করুন, আমীন! তুর্কি দুম্বা কত টাকা জোড়া, এবং কিভাবে কিনতে পারি সেটাও জানাবেন প্লীজ।
Total Reply(0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন