মাত্র ২০ হাজার টাকা মুক্তিপণের দাবিতে অপহরণের পর রাজ মামুন (৯) নামের এক শিশুকে হত্যার সাথে জড়িত ফরিদুলকে (২৮) ঢাকার সাভার থেকে গ্রেফতার করেছে বগুড়া ডিবি। তাকে গ্রেফতারের পর উদ্ধার হয় শিশু রাজ মামুনের লাশ। নিহত শিশু রাজ মামুন বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার সুলতান শেখের পুত্র।
অপরদিক গ্রেফতারকৃত ফরিদুল রংপুর জেলা পীরগাছা থানার চর রহমত গ্রামের আমজাদ হোসেনের ছেলে। পেশায় ধানকাটা শ্রমিক।
গতকাল বুধবার দুপুরে বগুড়ার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী। এ ঘটনায় মামলার সূত্র ধরে সারিয়াকান্দি থানা পুলিশ ও ডিবি পুলিশের দল অভিযানে নামে। তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় গত মঙ্গলবার রাতেই বগুড়া পুলিশের একটি দল ঢাকা জেলার সাভার থানার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে অপহরণের পর মুক্তিপণ দাবিকারী ফরিদুলকে গ্রেফতার করে। পরে তাকে বগুড়ায় নিয়ে আসার পর জিজ্ঞাসাবাদ করে তার দেখানো স্থানে মঙ্গলবার দিবাগত রাত ২টার পরে বেড়া পাঁচবাড়িয়া গ্রামের চর এলাকায় ধানক্ষেত থেকে রাজ মামুনের লাশ উদ্ধার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত ফরিদুল জানায় যে, কিছুদিন পূর্বে বগুড়া সদর থানাধীন এরুলিয়া এলাকায় ধান কাটার কাজের জন্য আসে। তবে সে ঋণগ্রস্থ হওয়ায় ধান কাটার পারিশ্রমিকে তার চাহিদা না মেটায় সে এরুলিয়া থেকে সারিয়াকান্দির জামথল এলাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। ইতোপূর্বে উল্লেখিত এলাকায় কাজ করার সুবাদে উক্ত এলাকা তার পূর্ব পরিচিত। ৫ ডিসেম্বর সেখানে গিয়ে কোন কাজ না পাওয়ায় গ্রামের একটি মুদি দোকানের পাশে কয়েকটি ছেলেকে খেলা করতে দেখে তাদের মধ্যে থেকে একজনকে অপহরণ করার পরিকল্পনা করে। সেই অনুযায়ী মুদিখানা দোকানের পাশে অবস্থান নেয়। মাগরিবের নামাজ শেষে রাজ মামুনকে অপহরণ করার চেষ্টা করলেও বেশ কয়েকজন শিশু এক সাথে থাকায় ব্যর্থ হয়। পরে এশার নামাজের জন্য অপেক্ষায় থাকে। এশার নামায শেষে রাজ মামুনকে ঘুঘু পাখির বাচ্চা দেওয়ার প্রলোভন দিয়ে ধান ক্ষেতের পাশে গাছের নিচে নিয়ে যায়। রাত গভীর হলে রাজ মামুন চিৎকার দিতে শুরু করলে সে রাজ মামুনকে গলা টিপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে লাশ ধান ক্ষেতে ফেলে রাখে। এরপর সে আজাহার আলীর মুদিখানা দোকান থেকে কৌশলে দোকানদারের ফোন নম্বর নিয়ে গ্রাম থেকে চলে যায়। হত্যার পরের দিন ৬ ডিসেম্বর দোকানদার আজাহারকে ফোন করে সে রাজ মামুনের বাবাকে চায়। তখন দোকানদার আজাহার বলে রাজ মামুনের বাবা সুলতান এখানে উপস্থিত আছে। তার কাছে ফোন দিলে আসামি ফরিদুল রাজ মামুনের সন্ধান দিবে বলে তার বাবা সুলতানের কাছে ২০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। এই ফোন কলের সূত্র ধরেই পুলিশ অপহরণকারীকে গ্রেফতার ও ঘটনার রহস্য উদঘাটন করে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন