রামু উপজেলার পেঁচারদ্বীপ এলাকা থেকে চার শিক্ষার্থীকে অপহরণের চার দিন পরেও উদ্ধার করা যায়নি।
তবে এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তিন রোহিঙ্গাকে আটক করেছে এপিবিএন। আইন-শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা অভিযান অব্যাহত রাখলেও অপহৃত শিক্ষার্থীদের এখনও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি বলে জানা গেছে।
শুক্রবার (১০ ডিসেম্বর) সকালে টেকনাফের ২৬ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এ অভিযান চালানো হয় বলে জানান ১৬ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ানের অধিনায়ক পুলিশ সুপার মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম।
আটকরা হল, টেকনাফের নয়াপাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এইচ ব্লকের বাসিন্দা নজির আহামদের ছেলে নুর সালাম (৫০) ও নুর সালামের মেয়ে রনজন বিবি (১৩) এবং একই ক্যাম্পের মোচনী পাড়ার আবুল কাদেরের ছেলে সাদ্দাম মিয়া। তারা অপহরণের এ ঘটনায় জড়িত মোহাম্মদ ইব্রাহিমের স্বজন।
অপহরণ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ উঠা জাহাঙ্গীর আলম ও মোহাম্মদ ইব্রাহিম টেকনাফের ২৬ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা।এই দুই রোহিঙ্গা রামুর পেঁচারদ্বীপ এলাকায় বাতিঘর নামের একটি আবাসিক কটেজের কর্মচারী হিসেবে কর্মরত ছিল। সেই সুবাদে জাহাঙ্গীর আলম ও মো. ইব্রাহীমের সঙ্গে স্থানীয় চার শিক্ষার্থীর বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে উঠে।
অপহৃতরা হল, উখিয়া উপজেলার সোনার পাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্র জাহেদুল ইসলাম, অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র মিজানুর রহমান, মোহাম্মদ কায়ছার ও মিজানুর রহমান নয়ন। তারা সবাই রামু উপজেলার খুনিয়াপালং ইউনিয়নের পেঁচারদ্বীপ এলাকার বাসিন্দা।
গত ৭ ডিসেম্বর সকালে রামু উপজেলার খুনিয়াপালং ইউনিয়নের পেঁচারদ্বীপ এলাকা থেকে টেকনাফের সেন্টমার্টিন ভ্রমণের কথা বলে স্থানীয় ওই চার শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে জাহাঙ্গীর আলম ও মোহাম্মদ ইব্রাহিম নামের দুই রোহিঙ্গা। পরে এসব শিক্ষার্থীদের টেকনাফের ২৬ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের অজ্ঞাত স্থানে জিম্মি করে মোবাইল ফোনে স্বজনদের কাছ থেকে মুক্তিপণ বাবদ ২০ লাখ টাকা দাবি করে আসছিল অপহরণকারি চক্র।
অপহৃতদের স্বজনরা জানিয়েছেন, মুক্তিপণের টাকার দাবিতে অপহৃত শিক্ষার্থীদের উপর নির্যাতন চালাচ্ছে অপহরণকারিরা। টাকা না দিলে প্রাণে মেরে ফেলারও হুমকি দেয়া হয়েছে।
১৬ এপিবিএন এর অধিনায়ক এসপি তারিকুল বলেন, মুক্তিপণের দাবিতে চার শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে জিম্মি রাখার খবর পাওয়ার পর থেকে এপিবিএন সদস্যরা টেকনাফের বিভিন্ন ক্যাম্পসহ সম্ভাব্য বিভিন্ন এলাকায় অভিযান অব্যাহত রেখেছে। সকালে টেকনাফের ২৬ নম্বর ক্যাম্প থেকে ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ৩ রোহিঙ্গাকে আটক করা হয়েছে।
আটকরা অপহরণ ঘটনায় জড়িত মোহাম্মদ ইব্রাহিমের আত্মীয়-স্বজন। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে টেকনাফ থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
টেকনাফ থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) খোরশেদ আলম বলেন, অপহৃত শিক্ষার্থীদের উদ্ধারে পুলিশের পাশাপাশি এপিবিএন ও র্যাবসহ আইন-শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা অভিযান অব্যাহত রেখেছে। তাদের প্রযুক্তি ব্যবহারসহ নানা প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। তবে এখনও পর্যন্ত অপহৃত শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন