নাটোর জেলা সংবাদদাতা : নাটোরে বাল্য বিয়ে দেওয়ায় ভ্রাম্যমাণ আদালতে তিন অভিভাবকের কারাদ- ও একজনের অর্থদ- এবং মুচলেকা দিয়ে দুই বালিকার বাল্য বিয়ে বন্ধ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে সদর উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক সদর উপজেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান এই আদেশ দেন। নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান ও এলাকাবাসী জানান, শুক্রবার বিয়ের দিন ধার্য অনুযায়ী উপজেলার নওপাড়া ও.জি বালিকা বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণীর ছাত্রী মুনিরা খাতুন ও একই উপজেলার ইসলাবাড়ি গ্রামের বিলকিস খাতুন সুমির বাড়িতে যাওয়ায় জন্য বৃহস্পতিবার রাতে প্রস্তুতি চলছিল। খবর পেয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান পুলিশ পাঠিয়ে ওই দুই মেয়ের অভিভাবকদের নিজ কার্যালয়ে ডেকে আনেন। পরে বাল্য বিয়ে দেবেনা এই মর্মে উভয়ের অভিভাবকদের কাছে মুচলেকা নিয়ে বাল্য বিয়ে বন্ধ করেন। মুনিরা সদর উপজেলার পশ্চিম হাগুড়িয়া গ্রামের মমতাজ উদ্দিনের মেয়ে এবং বিলকিস খাতুন একই উপজেলার ইসলাবাড়ি গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের মেয়ে। অপরদিকে, সদর উপজেলার নওপাড়া ওসমান গনি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্রী ও বারুহাট গ্রামের সাজেদুল ইসলামের মেয়ে তানিয়ার গত ৩১ জানুয়ারি বিয়ের প্রস্তুতি চলছিল। গোপনে খবর পেয়ে সদর উপজেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান সেখানে গিয়ে অভিভাবকদের মুচলেকা নিয়ে তানিয়ার বিয়ে বন্ধ করে দেন। কিন্তু তানিয়ার বাবা সাজেদুল ইসলাম গোপনে তার মেয়ের বিয়ে দেন। পরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তানিয়ার শ্বশুড় বাড়ির সদ্যরা সাজেদুল ইসলামের বাড়িতে এসেছে খবর পেয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বৃহস্পতিবার রাতেই পুলিশ ফোর্সসহ তানিয়ার বাড়িতে যান। তার উপস্থিতি টের পেয়ে তানিয়াসহ তার স্বামী, বাবা ও শ্বশুড় পালিয়ে যান। আটক করা হয় তানিয়ার মা তাহমিনা খাতুন, ফুফু বেদেনা খাতুন ও শ্বাশুড়ি মাবিয়াকে। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাহমিনা খাতুনকে একমাস, বেদেনা খাতুনকে ৭ দিন ও শ্বাশুড়ি দুলালী খাতুনকে ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদ- ও চাচী শ্বাশুড়ি মাবিয়া খাতুনকে এক হাজার টাকা অর্থদ- প্রদান করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন